ট্রাম্পের মানবিক সহায়তা স্থগিত: বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যসহ নানা খাতে বিপর্যয়
Published: 2nd, February 2025 GMT
দ্বিতীয় মেয়াদে গত মাসের ২০ তারিখে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটির প্রায় সব বিদেশি সহায়তা কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করার নির্দেশ দেন। আর তাতেই বেঁধেছে বিপত্তি। বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যসহ আমেরিকান সহায়তার ওপর নির্ভরশীল নানা খাতে নেমে এসেছে বিপর্যয়।
প্রায় শত বছরের গবেষণার পর ২০২১ সালে শুরু হওয়া ম্যালেরিয়া টিকার উন্নয়ন গবেষণা কর্মসূচিতে দেওয়া হয়েছে স্থগিতাদেশ। এ ছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে নবজাতকদের পুষ্টি ক্লিনিকসহ ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল এইডের (ইউএসএআইডি) পরিচালিত নানা ধরনের সহায়তা কার্যক্রম।
২০২৩ সালে বিশ্বের ১৮০টি দেশে ৭ হাজার ২০০ কোটি ডলারের সহায়তা বিতরণ করেছে ওয়াশিংটন। হঠাৎ করেই এই সহায়তা বন্ধের ঘোষণায় বাতিল হয়েছে প্রস্তাবিত সব নতুন প্রকল্প ও চুক্তি। চলমান বেশির ভাগ প্রকল্প বন্ধসহ ইউএসএআইডির শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে কমপক্ষে ৫৬ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
ইউএসএআইডির সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল সংস্থাগুলোর একটির প্রধান পরিচালক বলেছেন, এরই মধ্যে অত্যন্ত দরিদ্র দেশে তাদের পরিচালিত কয়েক ডজন শিশু পুষ্টি ক্লিনিক বন্ধ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। কেননা, এ ক্লিনিক পরিচালনা যথেষ্ট ব্যয়বহুল।
এককভাবে বিশ্বের শীর্ষ দাতা দেশের পক্ষ থেকে এমন সহায়তা স্থগিতের ঘোষণা বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তৈরি করেছে। বিভিন্ন সহায়তা প্রতিষ্ঠান সতর্ক করে বলেছে, ট্রাম্পের এ উদ্যোগ বিশ্বে অনেকের জীবন ঝুঁকিতে ফেলবে। আগামী তিন মাসে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এ কার্যক্রমের বিষয়টি পর্যালোচনা করবেন। এর মাঝেই গত শুক্রবার স্বাস্থ্য, শিক্ষা, উন্নয়ন, নিরাপত্তাসহ অন্যান্য খাতে সহায়তা দেওয়া প্রকল্পগুলো বন্ধ করতে বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসগুলোয় বার্তা পাঠিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এদিকে ম্যালেরিয়ার টিকা তৈরির একটি ফ্ল্যাগশিপ কর্মসূচি স্থগিত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। ইউএসএআইডি ম্যালেরিয়া ভ্যাকসিন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এমভিডিপি) নামে পরিচালিত হচ্ছিল এই কার্যক্রম।
এদিকে শনিবার থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ইউএসএআইডির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চেষ্টা করেও ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশ করা যায়নি। এমনকি খুঁজে পাওয়া যায়নি ইউএসএআইডির এক্স অ্যাকাউন্টও। খবর নিউইয়র্ক টাইমস, গার্ডিয়ান ও সিএনএনের
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইউএসএআইড র পর চ ল
এছাড়াও পড়ুন:
দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা
আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।
শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।
অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’
স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।
ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’
আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।