‘ঝটিকা সফরে’ বিবর্ণ রাসেল-ডেভিডরা, বিদায় রংপুর
Published: 3rd, February 2025 GMT
আন্দ্রে রাসেল, টিম ডেভিড ও জেমস ভিঞ্চ বিমানবন্দর থেকে হোটেল ওয়েস্টিনে ঢুকে দেখেন তাদের দল টিম বাসে উঠছে এলিমিনেটর ম্যাচ খেলতে। গেটের সামনে সতীর্থদের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের পরপরই তাদের দ্রুত চেক ইন করতে হয়। কেননা ১০ মিনিট পরই তাদের পৃথক গাড়িতে করে যেতে হবে স্টেডিয়ামে।
দুপুর দেড়টায় ম্যাচ। মাঠে থাকতে হবে একটার আগে! সময় মতো তারাও পৌঁছেছেন মাঠে। গা গরম করে মাঠেও নেমেছেন। কিন্তু রংপুর যে উদ্দেশ্যে তিন তারকা ক্রিকেটারকে দলে ভিড়িয়েছে তা কাজে দেয়নি। তিনজনই সুপার ফ্লপ।
ঢাকায় ‘ঝটিকা সফর’ করতে এসে রাসেল (৪), ডেভিড (৭) ও ভিঞ্চ (১) ছিলেন নিষ্প্রাণ, বিবর্ণ। তাতে রংপুর টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বাজে পারফর্ম করেছে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে। বাঁচা-মরার লড়াইয়ে খুলনার কাছে ৯ উইকেটে হেরে বিপিএল থেকে বিদায় রংপুর।
আরো পড়ুন:
খুলনার স্পিন বিষে রংপুরের পুঁজি ৮৫
রাসেল, ডেভিড, হেটমায়ারদের নিয়ে এলিমিনেটর ম্যাচে মুখোমুখি খুলনা-রংপুর
টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে মাত্র ৮৫ রানে অলআউট হয় রংপুর। বিশাল ব্যাটিং লাইনআপ নিয়েও চরম ব্যাটিং ব্যর্থতায় ভরাডুবি তাদের। জবাবে খুলনা ১০.
রংপুরের জন্য পরপর তিন আসরেই গল্পগুলো একই রকম হয়ে গেল। এর আগের দুই বছরই প্রথম কোয়ালিফায়ারের পর দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার হেরে শিরোপার লড়াই থেকে ছিটকে যায়। এবার তাদের কষ্টটা আরেকটু বেশি। টানা আট জয়ে সবার আগে কোয়ালিফায়ার নিশ্চিতের পর টানা পাঁচ হারে থেমে গেল তাদের যাত্রা।
১,০,৪,১,৮। রংপুর রাইডার্সের প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানের রান। বাঁচা-মরার লড়াইয়ে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে রীতিমত বিধ্বস্ত রংপুর। দুই অঙ্কের ঘর পেরিয়েছেন কেবল কাজী নুরুল হাসান সোহান ও আকিফ জাভেদ। সোহান ২৩ রানে আউট হওয়ার পর আকিফের ৩২ রানে রংপুরের পুঁজি কেবল ৮৫। যা এই আসরে তাদের সর্বনিম্ন দলীয় রান। ব্যাটিংয়ে রংপুরের হয়ে নিয়মিত রান করছিলেন ইফতেখার আহমেদ। তাকে না খেলানোর কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে রংপুর যে ভুল করেছে তা বুঝতে বাকি রইল না স্কোরবোর্ডের দিকে তাকালে।
রংপুরের মতো খুলনাও দলে নিয়েছে জেসন হোল্ডার ও শিমরন হেটমায়ারকে। তাদেরকে অবশ্য পরীক্ষা দিতে হয়নি। হোল্ডার তাও ১ ওভার হাত ঘুরিয়েছিলেন। ১১ রান দিয়েছিলেন। হেটমায়ারকে নামতে হয়নি ব্যাটিংয়ে। ফিল্ডিংয়ে নিয়েছিলেন ডেভিডের ক্যাচ।
ইনিংসের শুরুতে ভিঞ্চ ৭ বলে ১ রানে আউট হওয়ার আগে সৌম্যকে ভুল ডাকে রান আউট করান। অস্ট্রেলিয়ার টিম ডেভিড নাসুমের বলে ক্যাচ দেন সীমানায়। ৯ বলে তার রান মাত্র ৭। নিয়মিত বিপিএল খেলা রাসেল ৯ বলে ৪ রান করে নেওয়াজের বোল্ড হন।
বিদেশীরা যেখানে আড়ালে সেখানে দায়িত্ব নিতে পারেননি স্থানীয়রাও কেউ। টপ ও মিডলে ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তন করেছে রংপুর। মাহেদী, সাইফ উদ্দিনকে উপরে তুলে এনেছিলেন। কিন্তু ১ ও ৮ রানের বেশি করতে পারেনি। সাইফ হাসান ১০ বলে ৪ রানে থেমে যান। সোহান চেষ্টা করেছিলেন। ২৫ বলে ২৩ রান করেছিলেন ২ বাউন্ডারিতে। কিন্তু বিপর্যয়ের দিনে তিনিও ভুল শট খেলতে গিয়ে ফেরেন সাজঘরে। শেষ পর্যন্ত আকিফ জাভেদ তাদের ত্রাতা হয়ে আসেন। ৪ চার ও ২ ছক্কায় ১৮ বলে ৩২ রান করে যখন আউট হন তখন খুশির আমেজ খুলনা ড্রেসিংরুমে।
বোলাররা জয়ের অর্ধেক কাজ করে দেন শুরুতে। বাকি অর্ধেক নাঈম শেখ ও অ্যালেক্স রস পূর্ণ করেন। মিরাজ রানের খাতা খোলার আগে আউট হওয়ার পর নাঈম ও রস দলের হাল ধরেন। দুজন ৮৭ রানের জুটি গড়েন। নাঈম ৩৩ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৪৮ রান করেন। রস ২৭ বলে ৪ চারে করেন ২৯ রান। এই ইনিংস দিয়ে নাঈম সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় নিজেকে শীর্ষে তুলেছেন। তানজিদ হাসানের ৪৮৫ রান ছাপিয়ে নাঈমের রান এখন ৪৯২।
খুলনার বোলিং ছিল দুর্দান্ত। উইকেট হাই স্কোরিং ছিল না। বল থেমে থেমে আসছিল। ধীর গতির। স্পিনাররা সেই সুবিধা কাজে লাগিয়েছেন। মিরাজ ও নাসুম পেয়েছেন ৩টি করে উইকেট। মিরাজ ১০ ও নাসুম দিয়েছেন ১৬ রান। এছাড়া নাওয়াজ, হাসান ও মুশফিকের পকেটে গেছে ১টি করে উইকেট।
তিন বিদেশী এনে রংপুর নিজেদের খোলনলচে পাল্টে দিয়েছে। মাঠের ক্রিকেটে, পরিকল্পনাহীনতায় স্রেফ এলোমেলো তারা। খুলনা সেই সুযোগটি নিয়ে ফাইনালে উঠার লড়াইয়ে একধাপ এগিয়ে গেল। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে তাদের প্রতিপক্ষ কে হবে, চিটাগং কিংস নাকি ফরচুন বরিশাল? উত্তরটা জানতে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে তাদেরকে।
ঢাকা/ইয়াসিন/নাভিদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব প এল র ন কর উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
স্টিভ জবসের মডেল কন্যাকে কতটা জানেন?
মার্কিন ফ্যাশন মডেল ইভ জবস। অ্যাপল কম্পিউটারের সহপ্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবসের কন্যা তিনি। স্টিভ জবস ও লরেন পাওয়েল জবস দম্পতির কন্যা ইভ।
কয়েক দিন আগে বয়সে ছোট প্রেমিকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ২৭ বছরের ইভ। তার বরের নাম হ্যারি চার্লস। যুক্তরাজ্যের নাগরিক হ্যারি অলিম্পিকে স্বর্ণপদকজয়ী অশ্বারোহী। বয়সে ইভের চেয়ে এক বছরের ছোট হ্যারি। গ্রেট ব্রিটেনে এ জুটির বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।
ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইভের জাঁকজমকপূর্ণ বিয়েতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধনাঢ্য পরিবারের লোকজন। এ তালিকায় রয়েছেন—তারকা শেফ ব্যারনেস রুথ রজার্স, বিল গেটসের মেয়ে জেসিকা, রোমান আব্রামোভিচের মেয়ে সোফিয়া প্রমুখ। অ্যাপলের প্রতিষ্ঠাতা উত্তরাধিকারীর পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবদের বিলাসবহুল মিনিবাসের স্রোত বইছিল বিয়ের ভেন্যুতে।
জাকজমকপূর্ণ বিয়েতে কত টাকা খরচ হয়েছে তা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। সংবাদমাধ্যমটিকে প্রয়াত স্টিভ জবসের স্ত্রী লরেন পাওয়েল জবস বলেন, “ইভ-হ্যারির বিয়েতে ৫ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ হয়েছে (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯০ কোটি ২৮ লাখ টাকার বেশি)।
১৯৯১ সালে লরেন পাওয়েলকে বিয়ে করেন স্টিভ জবস। এ সংসারে তাদের তিন সন্তান। ইভ এ দম্পতির কনিষ্ঠ কন্যা। ১৯৯৮ সালের ৯ জুলাই ক্যালিফর্নিয়ায় জন্ম। তার বড় বোন এরিন, ভাইয়ের নাম রিড। লিসা নামে তার একটি সৎবোনও রয়েছে।
ইভা পড়াশোনা করেছেন স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০২১ সালে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং সমাজ (সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড সোসাইটি) বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। একই বছর প্যারিসে ‘কোপের্নি’ সংস্থার হাত ধরে মডেলিং দুনিয়ায় পা রাখেন। মডেলিং জগতে পা রেখেই চমকে দেন স্টিভ-তনয়া।
অনেকে নামিদামি ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করেছেন ইভ। বিখ্যাত ব্যাগ প্রস্তুতকারী সংস্থা লুই ভিতোঁরের মডেল হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। মডেলিংয়ের পাশাপাশি অশ্বারোহী হিসাবেও খ্যাতি রয়েছে ইভের। এক সময় বিশ্বের ২৫ বছরের কম বয়সি ১ হাজার সেরা অশ্বারোহীর মধ্যে পঞ্চম স্থানে ছিলেন তিনি।
মাত্র ছয় বছর বয়সে ঘোড়ার পিঠে চড়ে দৌড় শুরু করেছিলেন স্টিভ জবস তনয়া। ঘোড়ায় চড়ার প্রশিক্ষণের পাশাপাশি মেয়ে যাতে পড়াশোনায় মন দেয়, সে দিকে বরাবরই সজাগ দৃষ্টি ছিল ইভের বাবা-মায়ের। তবে গ্রীষ্মাবকাশ ও বসন্তের ছুটির সময়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য বাবা-মায়ের অনুমতি পেতেন ইভ।
ইভ যেখানে অশ্বারোহণের প্রশিক্ষণ নেন, সেই জায়গার মূল্য দেড় কোটি ডলার। ইভ প্রশিক্ষণ শুরু করার পর তার মা ওই জায়গা কিনে নিয়েছিলেন। তবে মডেল হওয়ার কোনো পরিকল্পনা কখনো ছিল না ইভের। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “আগে কখনো মডেলিং করিনি। তবে প্রস্তাব পেয়ে ঘাবড়ে যাইনি। আমার মনে হয়েছিল, কেন নয়? এই প্রস্তাব আমাকে আকৃষ্ট করেছিল।”
ঢাকা/শান্ত