খুশদীল চলে যাওয়ায় ধাক্কা খেয়েছে রংপুর: আশরাফুল
Published: 3rd, February 2025 GMT
লম্বা সময় পর পাকিস্তান জাতীয় দলে ফিরেছেন খুশদীল শাহ। পাকিস্তানের হয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলবেন তিনি। আছেন ঘরের মাঠে অনুষ্ঠেয় পাকিস্তানের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলেও। যে কারণে গ্লোবাল সুপার লিগ (জিএসএল) থেকে রংপুর রাইডার্সের সঙ্গে থাকা স্পিন অলরাউন্ডার খুশদীল বিপিএল শেষ না করেই দেশে ফিরে গেছেন।
তার চলে যাওয়া রংপুর রাইডার্সের জন্য বড় ধাক্কা হয়েছে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন রংপুর রাইডার্সের ব্যাটিং কোচ মোহাম্মদ আশরাফুল। তার মতে, খুশদীলের জায়গা নিতে পারেননি কেউ। মিডল বা লোয়ার মিডলে ওই জায়গা পূরণ করতে টিম ডেভিডকে আনলেও তা কাজে দেয়নি।
টানা ৮ ম্যাচে জয়ের পর হারের পর্ব শুরু হয় রংপুরের। খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে এলিমিনেটর ম্যাচ দিয়ে টানা ৫টিতে হেরেছে রংপুর। আসর থেকে বিদায় নেওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে এসে আশরাফুল বলেন, ‘খুশদীল শাহ চলে যাওয়াতে বড় একটা সেটব্যাক হয়েছে। গ্লোবাল টি-২-০তে কঠিন উইকেটে তিনি ফিফটি করেছিলেন (৪৭ বলে ৫৮)। ৫টা (৪টা হবে) ছয় মেরেছিলেন। আমরা ১১৭ রান করেছিলাম। খুশদীল যাওয়ার পরে দল হিসেবে আমরা মোমেন্টাম হারিয়েছি, ওই জায়গা কেউ নিতে পারেননি। লোকাল প্লেয়ারদের কেউ খেলতে পারেনি।’
খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে শুরুতে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে রংপুর রাইডার্স। ১৫ রানে ৫ উইকেট হারায় তারা। সৌম্য সরকার ইনিংসের দ্বিতীয় বলে রান আউট হওয়ায় দল মানসিকভাবে পিছিয়ে পড়ে বলে মন্তব্য করেছেন রংপুর রাইডার্সের কোচ মোহাম্মদ আশরাফুল। তবে খুলনার স্পিনের বিপক্ষে আগ্রাসী মানসিকতা দেখাতে হতো বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আশরাফুল বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে, আমাদের আরেকটু বিগ হার্ট নিয়ে খেলতে হতো। প্রথম ওভারে কেউ আউট হতেই পারে। এরপর যেভাবে দল পিছিয়ে পড়েছে, আমার মনে হয়, আরেকটু আগ্রাসী খেলাই যেত। পরপর ৫ ওভার তারা স্পিন বোলিং করেছে। আরেকটু আগ্রাসী খেললে হয়তো উইকেট আরেকটা পড়ে যেত। কিন্তু আমরা আগ্রাসী খেলিনি বলেই প্রতিপক্ষ চড়ে বসেছিল। গ্লোবাল লিগে জেতার কারণ ছিল খুশদীলের ওই ব্যাটিংটা। আশা করেছিলাম সাইফউদ্দিন, শেখ মেহেদীদের একজন হয়তো ওমন একটা ইনিংস খেলবে।’
রংপুরের টানা ৮ জয়ে খুশদীলের সঙ্গে ভালো ভূমিকা ছিল ইফতিখার আহমেদের। পাকিস্তানি এই অলরাউন্ডার রংপুরের পরাজিত হওয়া ম্যাচেও ভালো ব্যাটিং করেছেন। কিন্তু জেমস ভিন্সি, আন্দ্রে রাসেল ও টিম ডেভিড আসায় তাকে বেঞ্চে বসিয়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে আশরাফুল জানান, রাসেল, ডেভিডদের মতো বড় নাম আসলে তাদের জায়গা দেওয়া স্বাভাবিক।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমল ৭৫ পয়সা
রাজশাহীতে হিমাগারে আলু সংরক্ষণে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার আলুচাষি, ব্যবসায়ী ও হিমাগারমালিকদের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হিমাগারে প্রতি কেজি আলু রাখার জন্য ভাড়া দিতে হবে ৫ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে শ্রমিকের খরচ ৫০ পয়সা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমেছে ৭৫ পয়সা।
এর আগে গত মার্চে সরকার প্রতি কেজি আলু রাখার ভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পর থেকে এ নিয়ে রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা বাড়তি ভাড়ায় আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে কয়েক দফা তাঁরা রাজপথে আন্দোলনও করেছেন। অন্যদিকে হিমাগারমালিকদের দাবি ছিল, প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা করা হোক।
রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজশাহী জেলা আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহীতে হিমাগার থেকে বাড়তি ভাড়া না দিলে আলু ছাড়া হবে না। এর প্রতিবাদে ঈদের পর নতুন করে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করে আসছেন। তাঁদের দাবি, আলু রাখার খরচ আগের বছরের মতো চার টাকা করতে হবে। এ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তাঁরা। হিমাগার মালিকপক্ষ এ নিয়ে আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়ে আসছিল।
এরই মধ্যে আলুচাষিনেতারা ১৪ জুন সেনাবাহিনীর কাছে এ নিয়ে একটি অভিযোগ দেন। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আজ দুপুরে সভা ডাকা হয়। সভায় সব পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয় যে এ বছর সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সার বদলে ৫ টাকা ৫০ পয়সা ও শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা রাখা হবে। আর পেইড বুকিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে আলু রাখা চাষি ও ব্যবসায়ীদের। পরে বিকেলে ক্যান্টনমেন্টে হওয়া এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিকভাবে পাস করার জন্য রাজশাহী জেলা প্রশাসকের দপ্তরে সভা হয়।
সভায় আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, হিমাগার মালিক সমিতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে নতুন ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি সব হিমাগারে প্রচার করা হবে।
এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এবার আলুর দাম কম। আবার এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘাতের আশঙ্কা ছিল। এ নিয়ে একটি অভিযোগ পান তাঁরা। পরে দুই পক্ষকে নিয়ে সভা হয়। সভায় সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত বিকেলে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আরেকটি সভার মাধ্যমে পাস হয়েছে।
রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠু আহমেদ বলেন, শুরু থেকেই তাঁরা বাড়তি ভাড়ার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। কয়েক দিন ধরে তাঁরা হিমাগার থেকে আলু নিতে পারছিলেন না। হিমাগারগুলোয় বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছিল। এ নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও অবহিত করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত একটি ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রহমান সিডস স্টোরেজের ব্যবস্থাপক আবদুল হালিম বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি কেজি আলু রাখতে খরচ পড়বে ৫ টাকা ৫০ পয়সা আর শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা। এ ছাড়া যাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে অগ্রিম বুকিং দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আলুর কেজিপ্রতি শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে।
রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত সব হিমাগারমালিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হবে।
আরও পড়ুনরাজশাহীতে হিমাগারে ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ১৫ জুন ২০২৫