সুইডেনের স্কুলে বন্দুক হামলায় নিহত ১০
Published: 5th, February 2025 GMT
সুইডেনের ওরেব্রো শহরের একটি স্কুলে বন্দুকধারীর গুলিতে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনাকে নর্ডিক জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক বন্দুক হামলা বলে বর্ণনা করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী। খবর আল জাজিরার।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৩৩ মিনিটে ওরেব্রো শহরের রিসবার্গস্কা স্কুলে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারী একজন পুরুষ এবং নিহতদের মাঝে তাকেও পাওয়া গেছে। তবে এর আগে তার কোনো অপরাধের ইতিহাস ছিল না। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি একাই এই হামলা চালিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
পুলিশ এর আগে সতর্ক করে দিয়েছিল যে মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে কারণ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, যাদের মধ্যে অন্তত চারজনের অস্ত্রোপচার চলছে।
পুলিশ প্রাথমিকভাবে জানিয়েছিল যে, পাঁচজনকে গুলি করা হয়েছে এবং ঘটনাটি হত্যাচেষ্টা, অগ্নিসংযোগ এবং গুরুতর অস্ত্র অপরাধ হিসেবে তদন্ত করা হচ্ছে। কিন্তু সন্ধ্যা গড়ানোর পর পরই পাওয়া যায় ভিন্ন চিত্র। একে একে লাশের সংখ্যা বাড়তে থাকে এবং তা সর্বশেষ দশজনে গিয়ে পৌঁছায়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এক বিবৃতিতে সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উল্ফ ক্রিস্টারসন ক্ষতিগ্রস্ত এবং তাদের আত্মীয়স্বজনদের প্রতি তার সমবেদনা জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যাদের স্বাভাবিক স্কুলের দিন সন্ত্রাসে বদলে গেছে, তাদের সকলের প্রতিও আমার সমবেদনা। নিজের জীবনের ভয়ে শ্রেণীকক্ষে বন্দী থাকা এমন একটি দুঃস্বপ্ন যা কারোরই অনুভব করা উচিত নয়।”
সুইডেনের রাজা কার্ল ষোড়শ গুস্তাফ এক বিবৃতিতে বলেছেন যে, “দুঃখ ও হতাশার সঙ্গে তিনি এবং রাজপরিবারের বাকি সদস্যরা ওরেব্রোতে হামলার তথ্য পেয়েছেন।”
তিনি বলেন, ‘আমরা আজ রাতে নিহতদের পরিবার এবং বন্ধুদের প্রতি আমাদের সমবেদনা জানাচ্ছি। এই সময়ে আমাদের ভাবনাগুলো আহত, নিহত এবং তাদের আত্মীয়স্বজনদের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত সবার প্রতি নিমিত্ত। এই অন্ধকার দিনে মানুষের জীবন বাঁচাতে এবং সুরক্ষার জন্য নিবিড়ভাবে কাজ করা পুলিশ, উদ্ধারকারী এবং চিকিৎসা কর্মীদের প্রতি আমি এবং আমার পরিবার আমাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই।”
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।