ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে নিয়ম বহির্ভুতভাবে সাব-রেজিস্ট্রার অতিরিক্ত টাকা দাবি করায় ক্ষোভে দলিল লেখা বন্ধ করে দেন লেখকরা। এতে বে-কায়দায় পড়েন বিভিন্ন এলাকা থেকে জমি রেজিস্ট্রি করতে আসা মানুষ। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসের সমঝোতায় কাজ শুরু হয়।

কোটচাঁদপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে সপ্তাহে দুই দিন জমি রেজিস্ট্রি করা হয়। এ অফিসে জমি রেজিস্ট্রি করেন সাব-রেজিস্ট্রার তামিম আহম্মেদ চৌধুরী। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে দলিল লেখকদের ডেকে নেন। এরপর জমি রেজিস্ট্রি নিয়ে নিয়মবহির্ভূত অতিরিক্ত টাকা চাইতে বলেন। এতে দলিল লেখকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এরপর দলিল লেখকেরা অফিস থেকে বের হয়ে যান এবং পরে দলিল লেখা বন্ধ করে দেন। এতে করে জমি রেজিস্ট্রি করতে আসা ভুক্তভোগীরা বে-কায়দায় পড়েন। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সমঝোতায় ৬ ঘণ্টা পর জমি রেজিস্ট্রি শুরু হয়।

ভুক্তভোগী হরিণদীয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম, রাঙ্গিযারপোতা গ্রামের আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘‘আমরা জমি রেজিস্ট্রি করতে এসেছিলাম। অফিস থেকে কাগজপত্র দেখে ওয়ারিশের জন্য ১০ হাজার টাকা আর প্রত্যয়নের জন্য ১০ হাজার টাকা দাবি করেন।’’ সাব-রেজিস্ট্রার হাতে করে টাকা নেন কি-না এমন প্রশ্নে তারা বলেন, ‘‘টাকা তো উনি হাতে করে নেন না। টাকা নেন অফিসের বড় বাবু আবদুল মালেক ও ওই অফিসের টোটন নামের আরেক জন।’’

দলিল লেখক সমিতির সভাপতি বদর উদ্দিন বলেন, ‘‘সকালে সাব-রেজিস্ট্রার আমাদের ডাকেন। কথা হয় জমি রেজিস্ট্রিতে অতিরিক্ত টাকার প্রসঙ্গে। তিনি আমাদের ওয়ারিশের জমির দলিলে টাকা বাড়িয়ে দিতে বলেন। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের অজুহাতে টাকা নিয়ে দিতে বলেন জমি রেজিস্ট্রি করতে আসা ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে।’’  

আগে কত করে টাকা নেওয়া হতো— এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘আগে পাঁচ হাজার টাকা নেওয়া হতো। এখন আরো বাড়িয়ে দিতে বলছেন। যা আমোদের পক্ষে আদৌও সম্ভব না।’’ আর প্রত্যয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘প্রত্যয়নে টাকার কোনো ধরা-বাধা নিয়ম নেই।’’ 

সাব-রেজিস্ট্রার তামিম আহম্মেদ চৌধুরীর তাঁর বিরুদ্ধে তোলা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘‘সকালে লেখকদের ডেকে ছিলাম জমি রেজিস্ট্রির বিষয় নিয়ে কথা বলতে। আমি উনাদের একটা কথা বলায় উনারা তাতে রাজি হননি। এরপর আমি লেখকদের চলে যেতে বললে উনারা বাইরে গিয়ে ক্ষোভ দেখান। পরে তারা দলিল লেখা বন্ধ করে দেন। এতে করেই বাধে বিপত্তি। পরে জমি রেজিস্ট্রি করতে আসা মানুষেরা ক্ষিপ্ত হয়ে যান।’’

কোট চাঁদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অপু কুমার বিশ্বাস বলেন, এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। 

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী আনিসুল ইসলাম বলেন, ‘‘ওই ঘটনার ভিকটিম সাব-রেজিস্টার। আপনারা উনার সঙ্গে কথা বলেন। এ ব্যাপারে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আর কোনো মন্তব্য করতেও চাই না।’’ এরপর তিনি সাব-রেজিস্ট্রারকে সাংবাদিকদের ভালো করে খাইয়ে দিতে বলেন।
 

ঢাকা/সোহাগ/বকুল 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দল ল ল খ অফ স র

এছাড়াও পড়ুন:

বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার

সংস্কার শেষে ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার চালু হয়েছে। আজ শনিবার সকালে বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ করার মধ্য দিয়ে এ কারার যাত্রা শুরু হয়। এতে চট্টগ্রাম বিভাগের আটটি কারাগারের সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ও ফেনী জজ আদালতে বিচারাধীন মামলার আসামিদের রাখা হবে।

কারা সূত্র জানায়, দেশের পুরোনো চারটি কারাগারের মধ্যে ফেনী-২ কারাগার একটি। শত বছরের পুরোনো এ কারাগার ভবন ছিল জরাজীর্ণ। এ কারণে ২০১৯ সালে ১২ জানুয়ারি এ কারাগার থেকে বন্দীদের ফেনীর শহরতলির রানীরহাট এলাকার নতুন কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। এরপর থেকে কারাগারটি অনেকটা ‘পরিত্যক্ত’ অবস্থায় ছিল।

নতুন করে চালু হওয়া কারাগারটির অবস্থান ফেনী শহরের মাস্টারপাড়ায়। এটি ১৯১৫ সালে সাবজেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর ১৯৯৮ সালে জেলা এটিকে কারাগারে উন্নীত হয়। এ কারাগারের বর্তমান ধারণক্ষমতা ১৭২ জন। এর মধ্যে ১৭০ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। কারাগার চালু করার জন্য গতকাল কুমিল্লা জেলা কারাগার থেকে ২৪ জন ও চট্টগ্রাম থেকে চারজন বন্দীকে আনা হয়েছিল। তাঁরা সবাই সশ্রম সাজাপ্রাপ্ত। এ কারাগারে তাঁরা রান্নার দায়িত্বে থাকবেন।

কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ধাপে ধাপে সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন বন্দীদের ফেনীর দ্বিতীয় কারাগারে আনা হবে। আপাতত এতে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২৬ জন, কুমিল্লা থেকে ৭৪ জন, নোয়াখালী থেকে ১৫ জন, লক্ষ্মীপুর থেকে ৪ জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ৩৩ জন বন্দী এখানে স্থানান্তর করা হবে। এতে সেল, রান্নাঘর, কিশোর ওয়ার্ড, মসজিদসহ প্রয়োজনীয় সুবিধা রয়েছে। এ কারাগার নিয়ে বর্তমানে দেশে কারার সংখ্যা ৭১।

জানতে চাইলে ফেনী-২–এর জেল সুপার মো. দিদারুল আলম বলেন, ‘রাষ্ট্র চায়, কারাগার শুধু শাস্তির জায়গা নয়, সংশোধনের কেন্দ্র হোক। এরই অংশ হিসেবে সংস্কার শেষে ফেনী কারাগার-২ চালু হয়েছে।’

কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার ফেরদৌস মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ কারাগারে স্থানান্তরিত বন্দীদের সব সুযোগ-সুবিধা ইতিমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে। চিকিৎসক ও প্রশিক্ষিত নার্সও যোগদান করেছেন। বেশির ভাগ পদে কর্মচারীরাও কাজ শুরু করেছেন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘দূরে থেকেও আমরা কাছে, এটাই বাস্তব’
  • বিলাসবহুল প্রমোদতরিতে খুন, এরপর...
  • ফাইনালে দ. আফ্রিকাকে ২৯৯ রানের টার্গেট দিল ভারত
  • শাহরুখকে ‘কুৎসিত’ বলেছিলেন হেমা মালিনী, এরপর...
  • প্রথম দেখায় প্রেম নাকি ঝগড়া? আসছে ইয়াশ–তটিনীর ‘তোমার জন্য মন’
  • জেমিনিতে যুক্ত হলো গুগল স্লাইডস তৈরির সুবিধা, করবেন যেভাবে
  • নড়াইলে ৩ দিন ধরে স্কুলছাত্রী নিখোঁজ
  • রোহিতের পর কোহলির রেকর্ডও কাড়লেন বাবর, পাকিস্তানের সিরিজ জয়
  • নাজমুলই থাকছেন টেস্ট অধিনায়ক
  • বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার