বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনটির ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে এক শোভাযাত্রা ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়। সেটি শাহবাগ মোড় হয়ে মৎস্য ভবন ও প্রেসক্লাব হয়ে পল্টনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ হয়।

‘মেধা ও সততায় গড়ব সবার বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপন করছে ইসলামী ছাত্রশিবির। সমাবেশে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিবিরের ওপর নির্যাতনের ধারাবাহিকতা থাকলেও সংগঠনটির অবদানকে কেউ দমিয়ে দিতে পারেনি। ফ্যাসিবাদী সময়ে আমরা দেখেছি ছাত্ররাজনীতির নামে যে অপরাজনীতি শুরু হয়েছিল, এর কারণে ছাত্রসমাজের কাছে ছাত্ররাজনীতি ভয় ও আতঙ্কের নামে পরিণত হয়েছে। কিন্তু শিবির সব সময় ভালো নাগরিক তৈরি করার ছাত্ররাজনীতি করেছে।’

প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ চালুর দাবি জানিয়ে ছাত্রশিবিরের সভাপতি বলেন, সরকারকে ইসলামি মূল্যবোধের ভিত্তিতে স্বাধীন শিক্ষা কমিশন গঠন করতে হবে। এ ছাড়া শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনামলে লড়াই–সংগ্রাম করা ছাত্রদলসহ ইসলামি মূল্যবোধের ছাত্রসংগঠনকে জাতীয় ছাত্র ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।

সমাবেশে ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে হাজার হাজার ছাত্র–জনতা তাঁদের রক্ত বিলিয়ে দিয়ে এই দেশকে তাঁরা ফ্যাসিবাদমুক্ত করেছেন। তাঁদের চোখে স্বপ্ন ছিল এক বৈষম্যহীন সমাজের। আমরা মেধা ও সততার মাধ্যমে সেই বাংলাদেশ গড়ে তুলব।

ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ বলেন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সঙ্গে শত্রুতা করে পৃথিবীর কেউ টিকে থাকতে পারেনি। বাংলাদেশের অসংখ্য শক্তি তাদের সব শক্তি দিয়ে শিবিরের সুন্দরতম পথচলাকে রুদ্ধ করতে চেয়েছিল। ইসলামী ছাত্রশিবির যতটা না রাজপথে থেকেছে, তার চেয়ে বেশি ছিল শিক্ষার্থীদের মনে ইসলাম ও দেশের সমৃদ্ধি ঢুকিয়ে দেওয়ার কাজে।

ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে শোভাযাত্রা ও সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ছাত্রশিবির সংগীতের রচয়িতা মোহাম্মদ মোরশেদ আলী, ছাত্রশিবিরের প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ, আন্তর্জাতিক সম্পাদক মু’তাসিম বিল্লাহ, প্রকাশনা সম্পাদক আবু সাদিক কায়েমসহ কেন্দ্রীয় সেক্রেটারিয়েট সদস্যরা। শোভাযাত্রায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগর ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার দায়িত্বশীল নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় মেধাবী শিক্ষার্থীদের সম্মাননা অনুষ্ঠান ‘দুর্বার ২০২৫’ অনুষ্ঠিত হয়। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অদম্য মেধাবী (শারীরিক প্রতিবন্ধী) শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

’৬৪ বছর সাংবাদিকতার আদর্শ ধরে আছে পাবনা প্রেস ক্লাব’

‘‘৬৪ বছর ধরে সাংবাদিকতার ঐক্য, আদর্শ, ঐতিহ্য ধারণ করেছে উত্তরের অন্যতম প্রাচীণতম সংগঠন পাবনা প্রেস ক্লাব। ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে জড়িয়ে রয়েছে এই প্রেস ক্লাবের নাম। পাবনা প্রেস ক্লাবের ৯ সাংবাদিক সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ৩ জন সদস্য একুশে পদকপ্রাপ্ত। সারা দেশে সাংবাদিকদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য ও সাংবাদিকদের একাধিক প্রতিষ্ঠান থাকলেও পাবনা প্রেস ক্লাব সে ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। এই প্রতিষ্ঠান এখনো দেশের মধ্যে অখণ্ড এবং ঐক্যের অনন্য নজির হিসেবে দৃষ্টান্ত হয়ে রয়েছে। আগামীতেও ঐক্য আদর্শের ধারা অটুট থাকবে।’’

বৃহস্পতিবার (১ মে) পাবনা প্রেস ক্লাবের ৬৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ৬৫ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে আয়োজিত শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন সুধীজন ও সাংবাদিকরা। এ দিন উৎসবে আনন্দে নেচে-গেয়ে পাবনা প্রেস ক্লাবের ৬৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১ মে) সকাল ১১টায় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। সাংবাদিকতার প্রতীক হিসেবে কলম, টেলিভিশন, রেডিও, ক্যামেরা, টেলিভিশনের বুম বা মাইক্রোফোন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর লোগোসহ নানা প্ল্যাকার্ড নিয়ে বাদ্য বাজনার তালে তালে নেচে গেয়ে শোভাযাত্রা শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এর আগে বুধবার (৩০ এপ্রিল) প্রেস ক্লাব ভবন আলোকসজ্জাকরণসহ নানা সাজে সাজানো হয়।

আরো পড়ুন:

সিরাজগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাসান, সম্পাদক শরীফুল

পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের সভাপতি জাফর খান আর নেই

শোভাযাত্রা শেষে প্রেস ক্লাবের ভিআইপি মিলনায়তনে চলে শুভেচ্ছা বিনিময় পর্ব। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের পর প্রেস ক্লাবের প্রয়াত সদস্যদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। তারপর প্রেস ক্লাবের নির্বাচিত কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। পরে পাবনা প্রেস ক্লাব সভাপতি আখতারুজ্জামান আখতারের সভাপতিত্বে ও সাহিত্য সাংস্কৃতিক সম্পাদক ইয়াদ আলী মৃধা পাভেলের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন প্রেস ক্লাব সম্পাদক জহুরুল ইসলাম।

অন্যান্যের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন, পাবনা জেলা প্রশাসক মফিজুল ইসলাম, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এস এম আব্দুল আওয়াল, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মশিউর রহমান মণ্ডল, এনএসআই এর উপ-পরিচালক তৌফিক ইকবাল, জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার আফরোজা আক্তার, সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আব্দুল আওয়াল মিয়া, শহীদ বুলবুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর বাহেজ উদ্দিন, বিশিষ্ট সমাজ সেবক মাহাতাব উদ্দিন বিশ্বাস, পাবনা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি প্রফেসর শিবজিত নাগ, সাবেক সম্পাদক আব্দুল মতীন খান, প্রবীণ সাংবাদিক হাবিবুর রহমান স্বপন, সাবেক সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান, সাবেক সম্পাদক আঁখিনূর ইসলাম রেমন, উৎপল মির্জা, প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিফাত রহমান সনম, সহ-সভাপতি এস এম আলাউদ্দিন, বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক নেছার আহমেদ নান্নু, চাটমোহর প্রেসক্লাবের সভাপতি হেলালুর রহমান জুয়েল, ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এম এ হাফিজ, সাঁথিয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি মানিক মিয়া রানা, সুজানগর প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম এ আলিম রিপন প্রমুখ।

শুভেচ্ছা পর্ব শেষে পাবনা প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাকাল থেকে এ যাবত পর্যন্ত দায়িত্ব পালনকারী সভাপতি ও সম্পাদকদের সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়। যারা প্রয়াত হয়েছেন তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করেন। পরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটেন অতিথিরা। শেষে উপস্থিত সবাইকে মিষ্টি মুখ করানো হয়। দুইদিনব্যাপী আয়োজনের শেষ দিন শুক্রবার (২ মে) সন্ধ্যায় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়েছে।

১৯৬১ সালের ১ মে পাবনা শহরে পাবনা প্রেস ক্লাবের গোড়াপত্তন ঘটে। প্রেস ক্লাব প্রতিষ্ঠার বছরেই ৮ ও ৯ মে পাবনায় অনুষ্ঠিত হয় পূর্ব পাকিস্তান মফস্বল সাংবাদিক সম্মেলন। যে সভা থেকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায় পূর্ব পাকিস্তান মফস্বল সাংবাদিক সমিতি। যা বর্তমানে বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি হিসেবে পরিচিত।

পাবনা প্রেস ক্লাব প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়ে সেদিন সংবাদপত্রে মফস্বলে কর্মরত প্রতিনিধিদের পেশার স্বীকৃতি ঘটেছিল। এখন ঢাকার বাইরে অনেকে এটাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়ে স্বচ্ছল জীবন যাপন করছেন। তাই অনেক প্রবীণ সাংবাদিক পাবনা প্রেস ক্লাবকে মফস্বল সাংবাদিকতার বাতিঘর হিসেবে চিহিৃত করেছেন। পাবনা প্রেস ক্লাবের অতীত ঐতিহ্য ও বিশাল ইতিহাস থাকলেও আজও পাবনা প্রেস ক্লাবের নিজস্ব ভবন হয়নি। পরিত্যক্ত সম্পত্তির উপর গড়ে ওঠা এই ক্লাবটির শরীর শীর্ণ হলেও মর্যাদা ও আভিজত্যে অনন্য। 
 

ঢাকা/শাহীন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শ্রমিক দিবস উপলক্ষে সিদ্ধিরগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের র‌্যালি
  • দেশে ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও শ্রমজীবী মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি: জাসদের শ্রমিক জোট
  • ’৬৪ বছর সাংবাদিকতার আদর্শ ধরে আছে পাবনা প্রেস ক্লাব’
  • ক্ষমতায় গেলে নারীদের মর্যাদা, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে: জামায়াত আমির
  • এখনো শ্রমিকদের লড়াই করতে হচ্ছে, কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবি
  • ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে তিতুমীরে মানববন্ধন
  • রাজধানীতে পরপর তিন দিনে তিন জনসমাবেশ
  • প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ চেয়ে ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের চিঠি
  • আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবসে শিল্পকলা একাডেমির  দুই দিনের আয়োজন
  • ছাত্রদলের দেওয়া বিবৃতি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য হুমকি: ডুজা