সেই নাফিস কামাল ফিরছেন ‘স্মরণে ঋত্বিক’ নিয়ে
Published: 7th, February 2025 GMT
‘এই দেশে এক শহর ছিল’ গানটি দিয়ে ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসেন সেই সময়ের তরুণ গায়ক নাফিস কামাল। ১৯৯৮ সালের অক্টোবরে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে প্রচারিত হয় গানটি। গানটি কাওসার আহমেদ চৌধুরীর লেখা, সুর ছিল নকীব খানের। দীর্ঘ বিরতির পর আবার গানে ফিরেছেন নাফিস। উপমহাদেশের অন্যতম চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের স্মরণে তাঁরই ঘনিষ্ঠ বন্ধু প্রয়াত গীতিকবি কাওসার আহমেদ চৌধুরীর লেখা গানে কণ্ঠ দিলেন তিনি।
ঋত্বিক ঘটকের প্রয়াণদিবস উপলক্ষে ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে প্রথম আলো অনলাইন প্ল্যাটফর্মে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে শিল্পী নাফিস কামাল এ ঘোষণা দেন। প্রথম আলো অনলাইনের (ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম) পেজগুলোতে ধারণকৃত এ অনুষ্ঠানটি আপলোড করা হয়। গীতিকার কবির বকুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে নাফিস কামাল এ গানের পেছনের সব গল্প শ্রোতাদের জানান। ২২ ফেব্রুয়ারি গীতিকবি কাওসার আহমেদ চৌধুরীর প্রয়াণদিবসে মুক্তি পাবে এই গানের ভিডিও চিত্র। ওই দিন গানটি নাফিসের ইউটিউব চ্যানেল থেকে অনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তি দেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।
নাফিস কামালের ভাষ্য, ঋত্বিক ঘটক ও কবি কাওসার আহমেদ চৌধুরীর সম্পর্কের গভীর ভাব, আবেগ আর শূন্যতার বেদনা নিয়ে রচিত হয়েছে ‘স্মরণে ঋত্বিক’।
নাফিস জানান, তিনি একটা সময় গান ছেড়েই দিয়েছিলেন। প্রায় ১৫ বছর গান থেকে দূরে ছিলেন। তাঁর ভাষ্যে, ‘গানের সঙ্গে অভিমানই ছিল। সম্পূর্ণ দূরে রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু একসময় দেখলাম, গান ছাড়া থাকতে পারছি না, গান না করলে আমার ভালো লাগে না। বছর তিনেক আগে ঠিক করলাম গানে ফিরি। গানও ভালো থাকুক, আমিও ভালো থাকি। এখন থেকে নিয়মিতই গান করছি। বন্ধুরা রীতিমতো গালমন্দ দিয়ে গান করিয়েছে। ওদের মতে, গান করলে নাকি আমি ভালো থাকি। শিগগিরই আরও নতুন গান আসবে। ভালো থাকার লোভেই নিয়মিত গান করব।’
বহুদিন ধরে অপ্রকাশিত থাকা এ গানটি সৈয়দ কল্লোলের সুরে ও তুষার রহমানের সংগীতায়োজনে নতুন আঙ্গিকে নির্মাণ করা হয়েছে। ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহযোগিতায় করা গানটির প্রযোজক সংস্থা কুল এক্সপোজারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদুল হক জানান, কবি নিজে তাঁর এ গানটি সংগীতায়োজনের জন্য নাফিস কামালের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। যদিও এর সুরারোপ শুনে যেতে পারেননি তিনি।
‘স্টুডিও আবোল তাবোল’ টিম গানটি এনিমেটেড ফর্মে চিত্রায়ণ করছে। নতুন এই গান প্রসঙ্গে সুরকার সৈয়দ কল্লোল জানান, গানটির মধ্যে তাঁদের শিল্প, সাহিত্য, সংগীত ও চলচ্চিত্রচর্চার বর্ণনার মাধ্যমে উঠে এসেছে বাংলার মানুষের জীবনসংগ্রাম, দুর্দশা ও আত্মপরিচয়ের সন্ধান।
আরও পড়ুনঋত্বিক ঘটক বললেন, চুলটুল লাগবে না, এমনিতেই তোমাকে জমিদারের মতো লাগতেছে...১৬ জুলাই ২০২২
সুদূর অস্ট্রেলিয়া থেকে কাওসার আহমেদ চৌধুরীর একমাত্র সন্তান প্রতীক তাঁর বাবার অপ্রকাশিত গানটি মুক্তি পাচ্ছে জেনে প্রথম আলো, কুল এক্সপোজার, আবোল তাবোল, ইউনিভার্সাল মেডিক্যাল আর তাঁর বাল্যবন্ধু নাফিসের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তিনি তাঁর বাবার গানটির মূল লেখা স্ক্রিপ্ট থেকে শুরু করে সেই সময়কার কিছু আলোকচিত্র ও তথ্য প্রদান করে সহায়তা করেছেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ ন কর
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।