সত্তরোর্ধ্ব মানসিক প্রতিবন্ধী বৃদ্ধার মুখসহ শরীরে গরম পানি নিক্ষেপ
Published: 8th, February 2025 GMT
কুমিল্লার মুরাদনগরে সত্তরোর্ধ্ব মানসিক প্রতিবন্ধী এক বৃদ্ধা তার গাছ থেকে বরই পাড়ার প্রতিবাদ করায় ওই বৃদ্ধার শরীরে গরম পানি নিক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে পলি আক্তার নামে এক তরুণী ও তার ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে। শুক্রবার দুপুরে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ডুমুরিয়া গ্রামে এ ঘটনায় ওই বৃদ্ধার শরীরের প্রায় ২০ শতাংশ ঝলসে গেছে বলে জানা গেছে।
ওই বৃদ্ধার নাম জাহানারা বেগম (৭১)। তিনি ডুমুরিয়া গ্রামের প্রয়াত মনসুর আলীর মেয়ে। ওই গ্রামেই তিনি বাবার বাড়িতে থাকেন। তার বিয়ে হয়েছিল, তবে কোনো সন্তান নেই। মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় বিয়ের পরপরই স্বামীর সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়েছিল। আর অভিযুক্ত পলি পাশের বাড়ির মোশারফ হোসেনের মেয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুরে জাহানারার গাছ থেকে বরই পেড়ে নিয়ে যান পাশের বাড়ির পলি আক্তার ও তার ছোট ভাই। বিষয়টি জানতে পেরে ওই বৃদ্ধা পলি আক্তারকে গালমন্দ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পলি আক্তার ও তার ছোট ভাই ফুটন্ত গরম পানি এনে জাহানারা বেগমের মুখসহ শরীরে নিক্ষেপ করেন। এতে বৃদ্ধার মুখ ও শরীরের বিভিন্ন স্থান ঝলসে যায়। ঘটনা জানাজানি হলে জড়িত দুজন দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে পালিয়ে যান। পরে ওই বৃদ্ধার ভাইয়ের পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জাহানারা বেগমকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে বলেন। তবে পরিবারের লোকজন কুমিল্লা না গিয়ে ওই বৃদ্ধাকে ঢাকায় নিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে।
মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফারজানা আক্তার বলেন, ‘গরম পানি নিক্ষেপের কারণে ওই বৃদ্ধার মুখের এক পাশসহ শরীরের কয়েকটি স্থানে ঝলসে গেছে। সব মিলিয়ে শরীরের প্রায় ২০ শতাংশ ঝলসে গেছে। আমরা তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেছি।’
এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছি। তবে আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গরম প ন ম র দনগর গরম প ন
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লায় বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্রসহ চারজনের মৃত্যু
কুমিল্লার বরুড়া ও মুরাদনগরে বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্রসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে বরুড়ায় দুই স্কুল ছাত্র এবং মুরাদনগরে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়। সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বরুড়া উপজেলার পয়ালগাছা গ্রামের মৃত খোকন মিয়ার ছেলে ফাহাদ হোসেন (১৩) এবং বিল্লাল হোসেন ছেলে মোহাম্মদ জিহাদ (১৪) দুপুরে হালকা বৃষ্টির মাঝে মাঠে ঘুড়ি উড়াতে ব্যস্ত ছিলেন। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে দুই ছাত্র মারাত্মকভাবে আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
ওই দুই স্কুলছাত্র বরুড়ার উপজেলার বড়হরিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।
বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হাসান বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। পরিবারের কোনও অভিযোগ না থাকায় বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
অপর ঘটনায় মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানা এলাকায় বজ্রপাতে দুই কৃষক মারা গেছেন।
স্থানীয়রা বলেন, পূর্বধইর পূর্ব ইউনিয়নের কোরবানপুর পশ্চিম পাড়ার মৃত বীর চরন দেবনাথের ছেলে নিখিল দেবনাথ (৫৫) ও উপজেলার আন্দিকোট ইউনিয়নের দেওড়া গ্রামের জসিম উদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে জুয়েল ভূঁইয়া (৩২) মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় আহত হন আরও ২ ব্যক্তি।
কোরবানপুর গ্রামের ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, দুপুরে কোরবানপুর পূর্বপাড়া কবরস্থনের পাশের একটি মাঠে জমিতে ধান কাটছিলেন ওই দুই কৃষক। এ সময় হঠাৎ বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত শুরু হলে ঘটনাস্থলে ওই দুই কৃষক মারা যান। পরে এলাকাবাসী গিয়ে তাদের উদ্ধার করে থানায় খবর দেন।
বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান বলেন, কোরবানপুর পূর্বপাড়া কবরস্থানের পাশের মাঠে দুই জন কৃষক বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে আইনি প্রক্রিয়া শেষ মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।