বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশে যেতে কর্মীপ্রতি খরচ হয় পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকা। প্রতিবছর বিদেশগামী কর্মীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অভিবাসন ব্যয়। গন্তব্য অনুযায়ী বিমান ভাড়া ও মধ্যস্বত্বভোগীর মাধ্যমে ভিসার হাত বদলে ব্যয় আরও বেড়ে যায়। যদিও ভিসা কেনাবেচাকে ব্যয় বৃদ্ধি প্রধান কারণ বলছে জনশক্তি কর্মসংস্থান প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)।
জনশক্তি রপ্তানি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ভাষ্য, অভিবাসন ব্যয়ের শুরু হয় পাসপোর্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। এর পর ভিসা প্রসেসিং, বিমান ভাড়া, বিএমইটির প্রশিক্ষণ ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা মিলে খরচের খাত দীর্ঘ হতে থাকে। স্তরে স্তরে দালালের দৌরাত্ম্য থাকায় বাড়তি খরচ গুনতে হয়। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, কাতার, ওমান, বাহরাইনের মতো দেশে বাংলাদেশি কর্মীরা পাড়ি জমান আত্মীয়স্বজন কিংবা পরিচিত মাধ্যমে। এ ক্ষেত্রে মধ্যস্বত্বভোগীর মাধ্যমে ভিসা বেচাকেনার ঘটনা বেশি ঘটে। হাত বদলের কারণে বাড়তে থাকে ভিসার মূল্যও। মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কিছু দেশে শ্রমিক নেওয়ার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ খরচ বহন করার কথা নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানের। কিন্তু বাংলাদেশি কর্মীদের অতি আগ্রহের কারণে এ সুবিধা আদায় করে নিচ্ছে ওসব মধ্যস্বত্বভোগী। ভিসার মূল্য পরিশোধের পর গুনতে হয় বিমান ভাড়ার চড়া দাম। এতে কর্মীরা চূড়ান্তভাবে বিপাকে পড়েন। এর পর গন্তব্য দেশে পৌঁছে খরচের তুলনায় কম বেতনে কাজ করতে হয়। ফলে অভিবাসন বাবদ খরচ তুলতেই কর্মীদের পার করতে হয় কয়েক বছর।
প্রবাসীরা বলছেন, ভিসার হাত বদলে অভিবাসন খরচ কয়েক গুণ বাড়ছে। সরকারের উচিত, বিদেশে কর্মী পাঠানোর পদ্ধতির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও অভিবাসন ব্যয় কমিয়ে আনা।
বিএমইটির তথ্যমতে, গত বছর নতুন করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গেছেন ১০ লাখের বেশি কর্মী। তাদের মধ্যে বড় গন্তব্য ছিল সৌদি আরব, ৬ লাখ ২৮ হাজার ৫৬৪ জন। এর পর মালয়েশিয়ায় ৯৩ হাজার ৬৩২, কাতারে ৭৪ হাজার ৪২২, সিঙ্গাপুরে ৫৬ হাজার ৮৭৮, সংযুক্ত আরব আমিরাত ৪৭ হাজার ১৬৬ ও কুয়েতে ৩৩ হাজার ৩১ জন।
বিএমইটি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক (বহির্গমন শাখা) মোহাম্মদ জহিরুল আলম মজুমদার সমকালকে বলেন, ভিসা কেনাবেচার জন্য মধ্যপ্রাচ্যে অভিবাসন ব্যয় বেশি। আবার বাংলাদেশি কর্মী, কর্মীর আত্মীয়স্বজন, নিয়োগকর্তা, রিক্রুটিং এজেন্সি ও দালাল চক্রের কারণেও বাড়ছে ব্যয়।
আবুধাবির বাংলাদেশ দূতাবাস বলছে, আমিরাতের শ্রম আইন অনুযায়ী কর্মীদের সব খরচ বহন করবে নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান। আবুধাবিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ সমকালকে বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে একজন কর্মী বিনা খরচে আসতে পারার কথা। এ দেশের শ্রম আইন অনুযায়ী কর্মীর সম্পূর্ণ খরচ নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান বহন করার কথা থাকলেও বাস্তবে তা দেখা যায় না। বাংলাদেশ থেকে যেসব এজেন্সি কর্মী প্রেরণে কাজ করে, তারা ছাড়াও এ কাজে কয়েকটি মাধ্যম ব্যবহার হয়। ভিন্ন ভিন্ন ধাপের কারণে কর্মীদের খরচ কয়েক গুণ বেড়ে যায়। তিনি বলেন, বাংলাদেশি কর্মীদের অনেক আগ্রহ। এটিকে সুযোগটা হিসেবে নেয় মধ্যস্বত্বভোগীরা। দেশে সরকার নির্ধারিত ফি থাকে এবং এর থেকে বাড়তি নেওয়া যাবে না বলা হয়।
তারেক আহমেদ আরও বলেন, আমরা সরকারিভাবে জনগণকে বিভিন্নভাবে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করি। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, আমাদের আশপাশের যেসব দেশ জিসিসিভুক্ত দেশে কর্মী পাঠাচ্ছে, তাদের খরচ আমাদের তুলনায় কম। কীভাবে তারা এটি ম্যানেজ করছে, তা আমরাও অনুসরণ করতে পারি। সে ক্ষেত্রে সব পক্ষের সহায়তা প্রয়োজন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কর ম দ র আম র ত কর ম র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রাক্তন স্ত্রী দেবশ্রীর সঙ্গে প্রেমের সিনেমা করতে চান প্রসেনজিৎ
ভারতীয় বাংলা সিনেমার তারকা জুটি প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি ও দেবশ্রী রায়। পর্দায় এ জুটির রোমান্স দেখে মুগ্ধ হয়েছেন অসংখ্য ভক্ত। রুপালি পর্দার রোমান্স ব্যক্তিগত জীবনেও গড়ায়। ভালোবেসে দেবশ্রী রায়কে বিয়ে করেন প্রসেনজিৎ। কিন্তু কয়েক বছর পরই এ বিয়ে ভেঙে যায়। তারপর দুজনের পথ আলাদা হয়ে যায়।
সংসার ভাঙার পাশাপাশি দর্শক হারান রুপালি পর্দার জনপ্রিয় এই জুটিকে। এরপর আর কোনো সিনেমায় একসঙ্গে দেখা যায়নি তাদের। অবশেষে দূরত্ব কমিয়ে দেবশ্রীর সঙ্গে সিনেমা করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করলেন প্রসেনজিৎ।
আরো পড়ুন:
নিজেকে তৈরি করে খোলামেলা দৃশ্যে অভিনয় করব: স্বস্তিকা
ছেলের বন্ধুরা ‘দিদি’ বলে ডাকে: শ্রাবন্তী
কিছুদিন আগে ‘আমি যখন হেমা মালিনী’ সিনেমার প্রচারে চিরঞ্জিত চক্রবর্তী বলেছিলেন—“দেব-শুভশ্রী জুটির পর আমি চাই আবার প্রসেনজিৎ-দেবশ্রী জুটি ফিরুক, এই জুটিটা ফেরার অত্যন্ত প্রয়োজন।” ‘দেবী চৌধুরানী’ সিনেমার প্রচারে চিরঞ্জিতের এই বক্তব্য প্রসেনজিৎকে জানানো হয়।
এ বিষয়ে প্রসেনজিৎ বলেন, “আমি তো চাই দীপকদা একটা স্ক্রিপ্ট লিখুক আমাদের জন্য, আমার বহুদিনের ইচ্ছা ছিল এবং আমি অনেকবার দীপকদাকে বলেছি যে, আমি তোমার পরিচালনায় একটা কাজ করতে চাই। দীপকদা, আমাদের জন্য যদি পরিচালনা করেন তাহলে অবশ্যই আমি সিনেমা করতে চাই। আর আমি নিজেও ব্যক্তিগতভাবে দেবশ্রীর সঙ্গে আবারো একটা পরিণত প্রেমের সিনেমা করতে চাই।”
তাহলে কী পুরোনো তিক্ততা ভুলে গেছেন প্রসেনজিৎ? জবাবে এই নায়ক বলেন, “আমার কারো সঙ্গে কোনো তিক্ততা নেই। যে আমার সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলবে, আমি সব সময় তাদের জন্য আছি। আর কোনো তিক্ততা নিয়ে বাঁচতে চাই না, যে কটা দিন আছি সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক নিয়েই থাকতে চাই।”
এক সময় দেবশ্রীকে নিয়ে কথা বলতে খুব একটা স্বাচ্ছন্দ বোধ করতেন না প্রসেনজিৎ। তবে অভিমান ভুলে কাজের ক্ষেত্রে আবার এক হওয়ার কথা বললেন তিনি। বর্তমানকে ভালোবেসে যেমন এগিয়ে যান, ঠিক তেমনই কি অতীতকেও আঁকড়ে বাঁচেন?
এ প্রশ্নের জবাবে প্রসেনজিৎ বলেন, “নিজের অতীতকে কখনো উপেক্ষা করা যায় না। মাঝেমাঝেই আমি আমার অতীতে ফিরে যাই; সেই সময়গুলোর জন্যই আজকের আমি। অতীত আমাকে অনেক ভালোবাসা, রাগ-দুঃখ-ক্ষোভ দিয়েছে। আমার ক্ষেত্রে যেটা অল্প কিন্তু তবু আছে সেটা হলো—ঘৃণা। সেটাও পেয়েছি, তবে অতীত যেমনই হোক না কেন, তাকে কখনো ফেলে দেওয়া যায় না। আমরা সবাই মাঝে মাঝে অতীতে ফিরে যাই।”
সময়ের সঙ্গে অনেক কিছু বদলে গেছে। বর্তমান প্রজন্মের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতেও দ্বিধাবোধ করেন না প্রসেনজিৎ।তার ভাষায়—“এই বদলগুলোকে মেনে না নিলে আমাকে পিছিয়ে পড়তে হবে। আমি প্রচুর বদল দেখেছি, তবে যেই সময় যেটা এসেছে, তার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছি, এটাই তো করা উচিত। না হলে বর্তমান প্রজন্ম থেকে দূরে সরে যেতে হবে।”
ঢাকা/শান্ত