বইমেলায় দুই বন্ধুর ‘সন্ধিক্ষণের সংবাদ’
Published: 9th, February 2025 GMT
অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত হয়েছে ঐতিহাসিক সময়ের সংবাদ, সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতা নিয়ে বই ‘সন্ধিক্ষণের সংবাদ’। ২০টি অধ্যায় ও চারটি পরিশিষ্ট নিয়ে রচিত ১৯২ পৃষ্ঠার এ বইয়ে দুষ্প্রাপ্য সংবাদ, সংবাদপত্র ও ছবি যুক্ত করা হয়েছে। ফলে বইটি সাংবাদিকতার ইতিহাস অধ্যয়নের আকর গ্রন্থ হয়ে উঠেছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মো.
বইয়ের অধ্যায়গুলো সাজানো হয়েছে সংবাদপত্রে ব্রিটিশবিরোধিতা, ভাষা আন্দোলন, ৭ মার্চ, ২৫ মার্চ, মুক্তিযুদ্ধ, একাত্তরের চিত্র সাংবাদিকতার মতো বিষয়গুলো দিয়ে। এ ছাড়া ১৯৭৫ সালের ঘটনা প্রবাহের সংবাদ ও সাংবাদিকতা নিয়ে আছে একাধিক অধ্যায়। এর মধ্যে আছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা, ৩ ও ৭ নভেম্বরের অভ্যুত্থান।
আরো পড়ুন:
বইমেলায় ইশরাত জাহান ঊর্মির ‘অন্যপক্ষ’
বইমেলার ৮ম দিনে ১০২ নতুন বই প্রকাশিত
অধ্যায়গুলোতে যুক্ত করা হয়েছে ঐতিহাসিক ছবি, যা বইটিকে সমৃদ্ধ করেছে। চারটি পরিশিষ্টে ভারতবর্ষের সাংবাদিকতার জনক জেসম অগাস্টাস হিকি ছাড়াও আবুল মনসুর আহমদ, তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া ও কুলদীপ নায়ারকে নিয়ে বিষদ আলোচনা আছে।
গ্রন্থটি বিভিন্ন সময়ের সংবাদ ও সাংবাদিকতার চিত্রের পাশাপাশি কয়েকটি ঐতিহাসিক রিপোর্ট পাঠকের জন্য তুলে ধরা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ২৫ মার্চ কালরাতে ঢাকার বুকের সংঘঠিত জেনোসাইড নিয়ে বিশ্বখ্যাত সাংবাদিক সায়মন জন ড্রিং এর প্রতিবেদন, ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ নিয়ে দ্য নিউইউর্ক এর প্রতিবেদন।
বইটির লেখক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মিনহাজ উদ্দীন বলেন, “বাংলাদেশের সংবাদপত্র নামে অসাধারণ একটি বই আছে সুব্রত সংকর ধরের। কিন্তু বইটির পরিসর ছোট, মাত্র ১১৪ পৃষ্ঠা। তা ছাড়া ১৯৮৫ সালে প্রথম প্রকাশিত এ বইয়ে কোন ছবি নেই।”
তিনি বলেন, “সংবাদপত্রের ইতিহাস পাঠের সঙ্গে যদি প্রাসঙ্গিক ছবি থাকে, তা শিক্ষণ প্রক্রিয়ার জন্য ভালো। সেই ধারণা থেকে এই বইয়ে দুষ্প্রাপ্য অনেক ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। অন্যদিকে সুব্রত সংকর ধরের গ্রন্থটিতে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত আলোচিত হয়েছে। সেখানে এ গ্রন্থে আমরা ১৯৭১ সাল-পরবর্তী বেশ কয়েকটি অধ্যায় যুক্ত করেছি।”
গ্রন্থটির অপর লেখক সাইফুল সামিন বলেন, “মো. মিনহাজ উদ্দীন ও আমি একসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে পড়েছি। মিনহাজের ইতিহাসের প্রতি ঝোঁক প্রবল। আমারও আগ্রহ আছে। সেই ভালোলাগা থেকেই দুজন মিলে এ গ্রন্থের পরিকল্পনা করি।”
তিনি বলেন, “বইটির অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। কিন্তু তারপরও আমরা চেষ্টা করেছি এমন একটা গ্রন্থ রচনা করতে, যাতে সাংবাদিকতার শিক্ষার্থীরা উপকৃত হন। তারা যাতে একটি গ্রন্থের মধ্যে অনেক কিছু পেয়ে যান। ভবিষ্যতে গ্রন্থটিতে আরও কয়েকটি অধ্যায় যুক্ত করে বড় পরিসরে প্রকাশ করার ইচ্ছে আমাদের রয়েছে। আমরা এটিকে সাংবাদপত্র ও সাংবাদিকতার ইতিহাস নিয়ে একটি পরিপূর্ণ বই হিসেবে দাঁড় করাতে চাই।”
পলল প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত বইটির দাম রাখা হয়েছে ৫৪০ টাকা। ২৫ শতাংশ ছাড়ে অমর একুশে গ্রন্থমেলা থেকে আগ্রহীরা বইটি কিনতে পারবেন। গ্রন্থ মেলায় পলল প্রকাশনীর স্টল নম্বর ১২৬ -১২৭।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ব দপত র ব দ কত র য ক ত কর বইট র
এছাড়াও পড়ুন:
গজারিয়ায় পরিবারকে জিম্মি করে অর্ধলক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার একটি বাড়িতে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে স্বর্ণালংকারসহ অর্ধলক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাতরা।
রবিবার (২ নভেম্বর) মধ্যরাত ৩টার দিকে উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বালুয়াকান্দি দক্ষিণপাড়া এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ফজলুল হকের বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে।
আরো পড়ুন:
ভাড়া নেওয়ার কথা বলে বাসায় ঢুকে গৃহবধূকে বেঁধে ডাকাতি
বগুড়ায় বৃদ্ধাকে খুন করে ডাকাতি: গ্রেপ্তার ৪, টাকা উদ্ধার
ভুক্তভোগী সাথী বেগম বলেন, “রাত ১টার দিকে একটি শব্দ পেয়ে আমার ঘুম ভাঙে। সে সময় বিষয়টি সেভাবে আমলে নেইনি। রাত ৩টার দিকে উঠে তাহাজ্জুতের নামাজ পড়তে বসলে জানালার গ্রিল কেটে বাসার ভেতরে প্রবেশ করে দুই যুবক। তারা প্রথমে আমাকে, পরে আমার ছেলে সাবিদকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। পরে তারা আমাদের বিল্ডিংয়ের চারটি ফ্ল্যাটের প্রত্যেকটিতে একের পর এক লুট করতে থাকে। প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে চলে এই ডাকাতি।”
তিনি বলেন, “ডাকতরা নগদ ৩ লাখ টাকা, ৩২ ভরি স্বর্ণালংকার ও ৯টি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় তারা আমাদের সবাইকে একটি রুমে আটকে রেখে বাহির থেকে তালা লাগিয়ে যায়।”
প্রত্যক্ষদর্শী সাবিদ বলেন, “জানালার গ্রিল কেটে রুমের ভেতরে প্রবেশ করে দুইজন। পরে ডাকাত দলের আরো ২২-২৩ জন সদস্য বাসার ভেতরে প্রবেশ করে। বাইরে আরো কয়েকজন পাহারায় ছিল। ডাকাত দলের অধিকাংশ সদস্যের মুখে মাস্ক ও গামছা ছিল। তারা অস্ত্রের মুখে আমাকে জিম্মি করে আমাকে দিয়েই অন্যান্য ফ্ল্যাটের দরজা খোলান। আমার চোখের সামনে একের পর এক রুমে ডাকাতি হয়।”
অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ফজলুল হক বলেন, “আমার তিন ছেলে দেশের বাহিরে থাকে। তাদের পাঠানো প্রায় ৩২ ভরি স্বর্ণালংকার, কয়েকদিন আগে ব্যাংক থেকে তোলা নগদ ৩ লাখ টাকা ও ৯টি মোবাইল সেট লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাতরা। তারা আমাদের পরিবার সম্পর্কে অনেক কিছু জানত। কোন রুমে কী আছে, আমরা কবে ব্যাংক থেকে টাকা তুলেছি এমনকি বাসায় ওয়াইফাই বন্ধ সবই জানত। আমার ধারণা, স্থানীয় লোক এর সঙ্গে জড়িত। আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দেব।”
ভুক্তভোগীর প্রতিবেশী লাক মিয়া বলেন, “আমরা ভোর ৫টার দিকে বিষয়টি প্রথমে বুঝতে পারি। পরবর্তীতে বাইরে থেকে লক করা রুম খুলে আমরা আটকে থাকা পরিবারের সদস্যদের উদ্ধার করি। তারপর বিষয়টি জানাজানি হয়।”
রবিবার (৩ নভেম্বর) গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, “সকাল ৬টার দিকে দিকে আমি ৯৯৯ থেকে একটি কল পেয়ে এ বিষয়ে জানতে পারি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আমরা ঘটনাটি খতিয়ে দেখছি।”
ঢাকা/রতন/মাসুদ