দর্শকদের বিশৃঙ্খলায় ট্রফি উঁচিয়ে ধরেই মঞ্চ ছাড়লেন তামিম–মুশফিকরা
Published: 9th, February 2025 GMT
বিপিএলে চ্যাম্পিয়ন দল ফরচুন বরিশালের খেলোয়াড়েরা ট্রফি নিয়ে বরিশালে আসবেন এই ঘোষণায় বরিশালের বেলস পার্কে জড়ো হয়েছিলেন হাজারো জনতা। অনুষ্ঠানের নির্ধারিত সময় বেলা দুইটার আগেই সেখানে জনতার ঢল নামে। কিন্তু জোড়া ট্রফি নিয়ে খেলোয়াড়দের মঞ্চে আসতে আসতে বেজে যায় প্রায় বিকেল ৪টা। ততক্ষণে প্রচণ্ড ভিড়, ভ্যাপসা গরম আর ঠেলাঠেলিতে দর্শকদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায়। তামিম–মুশফিকরা মঞ্চে উঠতে উঠতে শুরু হয় চরম বিশৃঙ্খলা। ফলে দর্শকদের উদ্দেশে ট্রফি উঁচিয়ে ধরে দ্রুত অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন তাঁরা।
আজ রোববার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। ফলে এবারের বিপিএলজয়ী ফরচুন বরিশালের নির্ধারিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ও কনসার্ট পণ্ড হয়ে যায়।
সরেজমিনে ও দলের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার বেলা ২টার দিকে বিশেষ বিমানে গতবারের এবং এবার চ্যাম্পিয়ন হিসেবে পাওয়া দুটি শিরোপা নিয়ে বরিশাল বিমানবন্দরে পৌঁছান ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবালসহ খেলোয়াড়েরা। তাঁদের বরণ করতে আগে থেকেই বিমানবন্দরে অবস্থান নেন উচ্ছ্বসিত মানুষ। বিমান অবতরণ করার পর তামিমদের বহরকে বরণ করে নেন ফরচুন বরিশাল দলের কর্ণধার মো.
এরপর ফরচুন বরিশালের বাসে নগরের বিসিক শিল্প এলাকায় ফরচুন কার্যালয় উদ্দেশে রওনা হন খেলোয়াড়েরা। মোটরসাইকেলের শোভাযাত্রা সহকারে তাদের শহরে নিয়ে আসা হয়। বরিশাল বিমানবন্দর থেকে নগরের কাউনিয়া বিসিক শিল্প এলাকার ফরচুন শুজ কোম্পানির কার্যালয় পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে জড়ো হন হাজারো মানুষ। সড়কের দুই পাশে দাঁড়ানো নারী-পুরুষের পাশাপাশি শিশুরাও দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে মুঠোফোনে ছবি তুলেছে, উচ্ছ্বাসে মেতেছে।
রেকর্ড গড়ে বিপিএলের ট্রফি আবারও লঞ্চে তুলল বরিশালএদিকে বেলা ২টা থেকেই বরিশাল নগরের ঐতিহাসিক বেলস পার্কে জড়ো হতে থাকেন হাজারো মানুষ। তাঁরা লাল জার্সি পরে, হাতে ফরচুন বরিশালের লোগোসংবলিত লাল পতাকা নিয়ে নেচে-গেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। বেলা ৩টার মধ্যে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় বিশাল আয়তনের বেলস পার্ক। সেখানে চলে দর্শকদের অপেক্ষার পালা। বাড়তে থাকে ভিড়। কড়া রোদ-ভ্যাপসা গরমের মধ্যে মানুষ লাল ফরচুনের লোগোসংবলিত জার্সি পরে, হাতে লাল পতাকা নিয়ে নেচে-গেয়ে আনন্দে মাতে।
এবারের বিপিএলে চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশালকে স্বাগত জানাতে হাজির হয়েছিলেন অসংখ্য মানুষ। আজ রোববার বিকেলে বরিশাল নগরের ঐতিহাসিক বেলস পার্কেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব লস প র ক ব প এল নগর র
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।