সম্প্রতি মালদ্বীপের আড্ডু সিটি ভ্রমণ করে মালদ্বীপ বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রতিনিধি দল। এতে নেতৃত্ব দেন ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার মোহাম্মদ সোহেল পারভেজ। 

সফরকালে উক্ত দ্বীপে অবস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য স্থানীয় ভিস্তাবিচ হোটেলে ২ দিন ব্যাপি ভ্রাম্যমাণ কনস্যুলার ও কল্যাণ ক্যাম্প আয়োজন করা হয়। সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলেন মিশনের তৃতীয় সচিব জিল্লুর রহমান, কল্যাণ সহকারী আল মামুন পাঠান ও কনস্যুলার সহকারী এবাদউল্লাহ।

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার মোহাম্মদ সোহেল পারভেজ উক্ত ক্যাম্প উদ্বোধন করেন। 

সেবা ক্যাম্পে মোবাইল ডিভাইসের মাধ্যমে ৫৫ টি ই পাসপোর্ট, ১২টি এমআরপি আবেদন এনরোলমেন্ট করা হয়। এছাড়াও ৩৪ জন প্রবাসী বাংলাদেশীকে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মেম্বারশিপ কার্ড তাৎক্ষণিকভাবে প্রদান করা হয় ।

সিটি কাউন্সিল সেক্রেটারিয়েটে আড্ডু সিটির মেয়র ও কাউন্সেলরবৃন্দের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত

পরবর্তীতে আড্ডু সিটি মেয়র আলী নিজার এই ক্যাম্প ভিজিট করেন এবং আগত প্রবাসীদের হাতে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মেম্বারশিপ কার্ড তুলে দেন। তিনি এই ধরনের ভ্রাম্যমান ক্যাম্প আরও আয়োজনের জন্য অনুরোধ জানান।  

ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার ক্যাম্পে আসা প্রবাসী বাংলাদেশি সবাইকে বৈধ পথে রেমিটেন্স প্রেরণ, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড এর সদস্যপদ গ্রহণ, ই-পাসপোর্ট গ্রহণসহ স্থানীয় আইন কানুন মেনে চলার জন্য অনুরোধ করেন।

এছাড়াও তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিয়ে স্থানীয় আইন কানুন মেনে কাজ করার জন্য আহ্বান জানান। ক্যাম্পে আসা কর্মীদের মাঝে তথ্য সম্বলিত লিফলেট সহ প্রবাসী বাংলাদেশী কর্মীদের খেলাধুলার জন্য ফুটবল বিতরণ করা হয়।

সিটি কাউন্সিল সেক্রেটারিয়েটে আড্ডু সিটির মেয়র ও কাউন্সেলরবৃন্দের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতকালে এখানে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার বিষয়ে আলোচনা হয়। এসময় আনডকুমেন্টেড কর্মীদের দ্রুত বৈধকরণে নিয়োগকর্তাদের উদ্বুদ্ধকরণের জন্য কাউন্সিলকে অনুরোধ জানানো হয়। স্থানীয় কাউন্সিলরবৃন্দ প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাজের প্রশংসা করেন ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

ঢাকা/টিপু

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য কল য ণ

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানের কত পারমাণবিক স্থাপনা রয়েছে, কোথায় সেগুলোর অবস্থান

ইরানের রাজধানী তেহরানের বিভিন্ন শহরে আজ শুক্রবার ভোররাতে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। পারমাণবিক কর্মসূচির মূল কেন্দ্র লক্ষ্য করে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এ হামলার আগে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে বিভিন্ন সময় ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। ইরান তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি দ্রুত সম্প্রসারণ করছে—ক্রমবর্ধমান এই আশঙ্কার কারণেই মূলত এসব বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

২০১৫ সালে ছয় প্রভাবশালী দেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে ইরানের পারমাণবিক চুক্তি হয়। ওই চুক্তিতে ইরানকে পারমাণবিক কার্যক্রম সীমিত রাখার শর্ত দেওয়া হয়। বিনিময়ে দেশটির ওপর থেকে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। কিন্তু ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার পর থেকে ইরান তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি উল্লেখযোগ্যভাবে জোরদার করেছে।

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার ‍(আইএইএ) সর্বশেষ প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত ইরানে মোট সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত ছিল প্রায় ৯ হাজার ২৪৭ দশমিক ৬ কেজি বা ২০১৫ সালের চুক্তিতে নির্ধারিত সীমার চেয়ে ৪৫ গুণ বেশি।

মোট মজুতকৃত ইউরেনিয়ামের মধ্যে ৪০৮ দশমিক ৬ কেজি ৬০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ করেছে ইরান, যা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে প্রযোজ্য সমৃদ্ধকরণের চেয়ে সামান্য কম। পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য ইউরেনিয়াম ৯০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ করতে হয়।

২০২১ সালের এপ্রিল মাসে নাতাঞ্জ পারমাণবিক কর্মসূচি কেন্দ্রে একটি হামলা হয়। এ হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে ইরান।

ভিয়েনাভিত্তিক সংস্থা আইএইএ-এর সংজ্ঞা অনুযায়ী, তাত্ত্বিকভাবে ইরানের কাছে বর্তমানে যে পরিমাণ অস্ত্র তৈরির উপযোগী ইউরেনিয়াম রয়েছে, আরও কিছু পরিশোধন করলে তা দিয়ে দেশটি প্রায় ১০টি পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে পারবে।

তবে ইরান বরাবরই এ কথা অস্বীকার করে আসছে। পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কোনো অভিপ্রায় নেই বলে জানিয়েছে দেশটি।

নিচে ইরানের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনার তালিকা দেওয়া হলো, যেগুলো জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক দল নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে:

ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র

০১. নাতাঞ্জ

তেহরান থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত নাতাঞ্জ ইরানের মূল ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র। এটি গভীরভাবে সুরক্ষিত (বাংকারযুক্ত) একটি স্থাপনা। কেন্দ্রটির অস্তিত্ব প্রথম সামনে আসে ২০০২ সালে।

নাতাঞ্জের দুটি সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রে প্রায় ৭০টি সেন্ট্রিফিউজের সারি আছে। এর মধ্যে একটি কেন্দ্রের কার্যক্রম ভূগর্ভে পরিচালিত হয়। সেন্ট্রিফিউজ হলো এমন যন্ত্র, যা ব্যবহার করে ধাপে ধাপে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করা হয়।

২০২১ সালের এপ্রিলে নাতাঞ্জ পারমাণবিক কর্মসূচি কেন্দ্রে একটি হামলা হয়। এ হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে ইরান।

আজ শুক্রবার ভোররাতে এই কেন্দ্রে হামলা চালায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। কেন্দ্রটির পাশাপাশি সেখানে অবস্থানরত পরমাণুবিজ্ঞানীদেরও নিশানা করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

আইএইএ–এর প্রধান রাফায়েল গ্রোসি নিশ্চিত করেছেন, যেসব স্থান লক্ষ্য করে হামলা করা হয়েছে, তার মধ্যে একটি নাতাঞ্জ।

মধ্য ইরানের পবিত্র শহর কোমের কাছে একটি পাহাড়ের নিচে গোপনে নির্মিত পারমাণবিক কর্মসূচি কেন্দ্র ফোর্ডো ২০০৯ সালে প্রথম প্রকাশ্যে আসে। এটি জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে তৈরি করা হয়।

ফোর্ডো

মধ্য ইরানের পবিত্র শহর কোমের কাছে একটি পাহাড়ের নিচে গোপনে নির্মিত পারমাণবিক কর্মসূচি কেন্দ্র ফোর্ডো ২০০৯ সালে প্রথম প্রকাশ্যে আসে। এটি জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে তৈরি করা হয়।

প্রাথমিকভাবে এটিকে ‘জরুরি’ স্থাপনা হিসেবে বর্ণনা করা হলেও পরে ইরান জানায়, এটি একটি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র। সম্ভাব্য বিমান হামলা থেকে রক্ষার জন্য মাটির নিচে এটি নির্মাণ করা হয়। এই কেন্দ্রে প্রায় তিন হাজার সেন্ট্রিফিউজ বসানো সম্ভব।

২০২৩ সালে এই কেন্দ্রে ৮৩ দশমিক ৭ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের কণা পাওয়া যায়। ইরানের দাবি, পরিশোধন প্রক্রিয়ায় অনিচ্ছাকৃত তারতম্যের কারণে এমনটি হয়েছে।

আরও পড়ুনইরানে ইসরায়েলের হামলার লক্ষ্যবস্তু কী, কারা জড়িত, নিহত কারা ৮ ঘণ্টা আগেইরানের বুশেহর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোর অবস্থা কী
  • ইরানকে পরমাণু জগতে ঠেলে দিয়েছে ইসরায়েলই
  • ইসরায়েলের হামলা, ইরানের জবাব
  • ইরানের কত পারমাণবিক স্থাপনা রয়েছে, কোথায় সেগুলোর অবস্থান
  • এই হামলা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির ন্যায্যতা দিয়েছে: ইরান 
  • নাতানজ পারমাণবিক কেন্দ্রে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা বাড়েনি: আইএইএ
  • ইরানের ৮ শহরে কয়েক শ বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল
  • ইরানে ইসরায়েলের হামলা নিয়ে কী জানা গেল
  • ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাগুলো ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যবস্তু: নেতানিয়াহু  
  • ইরানের পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচির মূলকেন্দ্রে আঘাত হেনেছে ইসরায়েল: নেতানিয়াহু