কাগজপত্রে আছে ৬০ ফুট প্রস্থের সড়ক। বাস্তবে এর অস্তিত্বই নেই। সেখানে এখন নামি ব্র্যান্ডের গাড়ির সার্ভিস সেন্টার, শিল্পকারখানা, রিকশার গ্যারেজসহ নানা স্থাপনা। এই সড়ক না হওয়ায় অসংখ্য মানুষ নাকাল হচ্ছে যানজটে। রাজধানীর তেজগাঁও শিল্প এলাকায় ৩০০ ফুট দীর্ঘ এই সড়কের জমি প্লট বানিয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে পানির দামে।
তেজগাঁও শিল্প এলাকায় ব্যস্ত লাভ রোড। সেটি থেকে হাতিরঝিল হয়ে মধুবাগ যাওয়ার জন্য নকশায় ছিল ৬০ ফুট প্রস্থের সড়ক। এটি না হওয়ায় হাতিরঝিল যেতে গাড়িগুলোকে ঘুরতে হয় অনেক পথ। এতে আশপাশের সড়কগুলোতে পড়ে প্রচণ্ড চাপ। বিজয় সরণি ফ্লাইওভারের পূর্ব প্রান্তে নামার পর তাজউদ্দীন আহমদ সরণি অতিক্রম করে সোজা পূর্বদিকে চলে যাওয়া লাভ রোডটি প্রায় ২০০ গজ পরই বাঁয়ে বাঁক নিয়েছে। তেজগাঁও শিল্প এলাকার নকশা অনুসারে এই বাঁকের অংশ থেকে সড়কটি পূর্বদিকে হাতিরঝিলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কথা ছিল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজধানীতে যে পরিমাণ সড়ক থাকা প্রয়োজন, তার চেয়ে আছে অনেক কম। প্রভাবশালীদের চাপে অনেক সময় পরিবর্তন করা হয় নকশা। রাস্তা, খেলার মাঠ, এমনকি পার্কের জমি বরাদ্দ দেওয়া হয় প্লট বানিয়ে। তেজগাঁওয়ের মতো ব্যস্ত এলাকায় এমনটি হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে কোনো পরিকল্পনাই কাজে আসে না। সরকারের উচিত জনদুর্ভোগ কমাতে এসব জমি উদ্ধার করে মূল পরিকল্পনা অনুযায়ী রাস্তা করা।
স্থাপত্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সমকালকে বলেন, কয়েক যুগ আগে এই রাস্তার জমি কিছু লোক বস্তি বানিয়ে দখল করে ফেলেছিল। তা উদ্ধার করা যাচ্ছিল না। ওই জমির ওপর নজর পড়ে কিছু ব্যক্তির। তাদের চাপে সরকার প্লট বানিয়ে বরাদ্দ দেয়। তখন স্থাপত্য অধিদপ্তর অন্যান্য প্লটে যাতায়াতের জন্য আরেকটি রাস্তা থাকার খোঁড়া যুক্তি তুলে ধরে প্লট বানানোর পক্ষে মত দেয়। কিন্তু যখন এই কাজ হয়েছে, সেই সময়ের সংশ্লিষ্ট কেউ এখন আর স্থাপত্য অধিদপ্তরে নেই। তিনি বলেন, এসব ক্ষেত্রে সরকারের চাওয়াটাই মুখ্য বিষয়। একসময় এফডিসির সামনে হাতিরঝিলের জমি প্লট বানিয়ে তেলের পাম্পের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। আরেক সরকার এসে মনে করল, পাম্প থাকলে হাতিরঝিল প্রকল্প বাস্তবায়নে সমস্যা হবে। তখন সেটা বাতিল করা হলো। এ ক্ষেত্রেও ‘কর্তার ইচ্ছায় কর্ম’ হয়েছে।
তেজগাঁও এলাকার ১৯৯৪ সালের সংশোধিত নকশায় দেখা যায়, তাজউদ্দীন আহমদ সরণি থেকে লাভ রোড ধরে প্রায় ২০০ গজ পর ডান পাশে ১৩৬, ১৩৭, ১৩২ ও ১২৯ নম্বর হোল্ডিং। এসব হোল্ডিংয়ের উত্তর পাশে ১৭১ ও ১৭২ নম্বর হোল্ডিং। দু’পাশের হোল্ডিংগুলোর মাঝ দিয়ে হাতিরঝিল অভিমুখে ৬০ ফুট প্রশস্ত সড়ক। এই সড়কের জায়গায় প্লট বানানো হয়। নতুন নকশায় হোল্ডিংগুলোর নম্বর দেওয়া হয় ১৩৬/১, ১৩৭/এ, ১৩৩/১/ক ও ১৩১/১। ২০০৪ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে এসব প্লট রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কাঠাপ্রতি দাম ধরা হয় মাত্র দেড় লাখ টাকা। অথচ বরাদ্দের সময় ওই এলাকায় প্রতি কাঠার মূল্য ছিল অন্তত ১ কোটি টাকা। বর্তমানে প্রতি কাঠার মূল্য ৫ কোটি টাকারও বেশি।
স্থানীয় বাসিন্দা মোতালেব লস্কর বলেন, তেজগাঁও এবং মধুবাগের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করার জন্য ওই রাস্তাটি নকশায় রাখা হয়। কিন্তু প্লট বানিয়ে ফেলায় অনেক পথ ঘুরে গিয়ে লোকজনকে হাতিরঝিলে ঢুকতে হয়। এতে যানজট লেগেই থাকে। ব্যস্ত সময়ে তীব্র দুর্ভোগ পোহাতে হয় লোকজনকে।
জানা যায়, ১৩৬/১ নম্বর প্লটটি বরাদ্দ দেওয়া হয় ফোকাস ফ্যাশন নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে। কাগজে-কলমে এটির পরিচালক জনৈক নাজমা ইসলাম। সরেজমিন দেখা যায়, সেখানে মিলেনিয়াম নামে একটি দামি ব্র্যান্ডের গাড়ির সার্ভিস সেন্টার। কিন্তু সেখানে কর্মরতরা জানেন না জমিটির মালিক কে।
১৩১/১ নম্বর প্লটটির বর্তমান মালিক সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে তানভীর শাকিল জয়। সরেজমিন দেখা যায়, প্লটটিতে একটি রিকশার গ্যারেজ। ফটক দিয়ে ঢুকে ভেতরে গেলে গ্যারেজের ম্যানেজার পরিচয় দেওয়া একজনকে পাওয়া যায়। তিনি জানান, আওয়ামী লীগের আমলে এখানে আনসার সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। ৫ আগস্টের পর স্থানীয় বিএনপির কিছু লোক এটি দখল করে রিকশার গ্যারেজ হিসেবে ভাড়া দিচ্ছে। তিনি তাদের হয়ে ম্যানেজারি করছেন। বিএনপির লোকজন কারা, তা তিনি বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। বলেন, প্লটটি বিক্রি করার জন্য তানভীর শাকিল জয় মাঝেমধ্যেই লোক পাঠান। আগ্রহীরা প্লটটি দেখে যান।
এ ব্যাপারে জানতে জয়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর থেকেই তিনি পলাতক বলে জানা গেছে।
১৩৩/১/ক নম্বর প্লটটি বরাদ্দ পেয়েছিলেন সাবেক এমপি ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হন। প্লটটিতে গিয়ে দেখা যায়, ফটকে তালা। ফটকের পাশে ‘দ্য এন্টারপ্রাইজ’ নামফলক। সেটির ভেতরে কিছু অবকাঠামো থাকলেও জনশূন্য। এ ছাড়া ১৩৭/এ নম্বর প্লটটিতে কিছু গাড়ি পার্ক করা। স্থানীয়রা জানান, এখানে রানার গ্রুপের কর্মকর্তাদের গাড়ি রাখা হয়। তেজগাঁও অঞ্চলে গণপূর্তের কার্যালয়ে গেলে তারা প্লটটির মালিক সম্পর্কে তথ্য দিতে পারেননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন জানান, ২০০৮ সালের পর প্লটের মালিকানার তথ্যের হালনাগাদ করা হয়নি। বর্তমান হালনাগাদ তালিকা করা হচ্ছে। এটা করা হলে মালিক সম্পর্কে জানা যাবে।
সড়কটি সম্পর্কে জানতে চাইলে গণপূর্ত অধিদপ্তরের তেজগাঁও এলাকার দায়িত্ব পালনকারী নির্বাহী প্রকৌশলী মঈনুল ইসলাম বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কোনো ধারণা নেই। রাস্তাকে প্লট বানিয়ে বরাদ্দ দেওয়ার ঘটনা এই প্রথম শুনলাম।’ তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান।
এ প্রসঙ্গে গণপূর্তের তেজগাঁও অঞ্চলের এক কর্মকর্তা বলেন, প্লট তৈরির আগে তাদের ওই এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার বাস্তব চিত্র সম্পর্কে মতামত দিতে বলা হয়। তখন রাস্তার বিদ্যমান অবস্থা তুলে ধরা হয়। কিছুদিন পরই তিনি জানতে পারেন, রাস্তাকে প্লট বানিয়ে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, ১৯৯৪ সালে প্রথম তেজগাঁও শিল্প এলাকায় রাস্তাকে প্লট বানিয়ে বরাদ্দ দেওয়ার নজির তৈরি হয়। তখন লাভ রোডের পাশে ১২২/১ ও ১২৩/১ নম্বর হোল্ডিং দিয়ে একটি রাস্তাকে দলীয় লোকদের বরাদ্দ দেওয়া হয়। এখন সেখানে আছে বহুতল বাণিজ্যিক ভবন। অথচ তেজগাঁও শিল্প এলাকার নকশা অনুযায়ী এখানেও ৬০ ফুট প্রশস্ত রাস্তা থাকার কথা। এসব রাস্তা থাকলে হাতিরঝিলের সঙ্গে যোগাযোগ আরও সহজ হতো।
২০০৮ সালের নকশায় দেখা গেছে, প্রায় ৫ কাঠা আয়তনের ১২২/১ নম্বর প্লটটি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল আর জেড নিট ফ্যাশন নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে। তখন ওই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন রেদওয়ান আহমেদ। ১২৩/১ নম্বর প্লটটি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল জনৈক আব্দুল্লাহর মালিকানাধীন চায়নিজ ফার্নিচার লিমিটেড নামে এক প্রতিষ্ঠানকে।
এভাবে সড়ককে প্লট বানানো প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ মেহেদী আহসান বলেন, শহরের বাসিন্দাদের নির্বিঘ্নে যাতায়াতের জন্য মোট আয়তনের ২৫ শতাংশ সড়কের প্রয়োজন হলেও রাজধানীতে মাত্র ৮ শতাংশ জায়গায় সড়ক আছে। এর মধ্যে ৫২ শতাংশই মোটরযান চলাচলের অনুপযোগী। এ কারণে বাড়ছে যানজট। বিভিন্ন সময় রাজধানীতে গড়ে ওঠা পরিকল্পিত এলাকাগুলোতেও রাস্তা, উন্মুক্ত স্থান, খেলার মাঠ, পার্কের জমিকে প্লট বানিয়ে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রভাবশালীদের চাপে এগুলো করা হয়। এ অবস্থার পরিবর্তন প্রয়োজন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সড়ক ও শ ল প এল ক ৬০ ফ ট প ব যবস থ এল ক র র জন য এল ক য় নকশ য় সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।