তুচ্ছ ঘটনায় সংঘর্ষ, কামড়ে ছিঁড়ে নেওয়া হলো যুবকের কান
Published: 12th, February 2025 GMT
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় ব্যাটারিচালিত ভ্যানের হর্ন বাজানোকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে এক যুবকের কান কামড়ে ছিঁড়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় আরো একজন আহত হন। তাদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসাপতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়ন বোর্ড অফিসের সামনে প্রথম দফায় সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে। এতে উভয় পক্ষের আহত দুইজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে হাসপাতালে হামলা করে প্রতিপক্ষের লোকজন আহত একজনকে আরো আহত করে।
এলাকাবাসী জানান, উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের চর কুচিয়াগ্রামের সাঈদ ফকিরের ছেলে মোহাম্মাদ ফকিরসহ (২৪) তার তিন ভাই জন্মনিবন্ধন করার জন্য কাগজপত্র নিয়ে অটোভ্যান করে গোপালপুর বোর্ড অফিসের সামনে যান। একই ইউনিয়নের কামারগ্রামের হানিফ রেজা ছেলে আলফাডাঙ্গা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের ডিগ্রি শাখার শিক্ষার্থী রিফাত হোসেন (২৫) তার সহপাঠীদের সঙ্গে সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এসময় অটোভ্যানের হর্ন বাজালে চালকের সাথে রিফাতদের কথা কাটাকাটি হয়।
আরো পড়ুন:
কুষ্টিয়ায় দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে আহত ৮
হাইমচরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৬
এসময় রিফাত হোসেন ও মোহাম্মদ ফকিরের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। মোহম্মাদ ফকির রিফাত হোসেনের বাম কান কামড়ে ছিঁড়ে ফেলেন। পরে সহপাঠীরা রিফাতকে আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পর আহত মোহাম্মাদকে তার ভাইরা হাসপাতালে আনেন। এ সময় রিফাতের বন্ধুরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে মোহাম্মাদ গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা.
আলফাডাঙ্গা থানার ওসি হারুন অর রশিদ বলেন, “হাসপাতালে হামলার ঘটনা শুনে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/তামিম/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ আহত আলফ ড ঙ গ স ঘর ষ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস