চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে স্টার্কও খেলবেন না, অজিদের অধিনায়ক স্মিথ
Published: 12th, February 2025 GMT
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলে ইনজুরির ধাক্কা লেগেছে। নিয়মিত অধিনায়ক প্যাট কামিন্স ইনজুরির কারণে খেলতে পারবেন না টুর্নামেন্টে। ইনজুরিতে আসর শেষ জজ হ্যাজলউডেরও।
মিশেল মার্শ আগেই ইনজুরির কারণে দল থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। দল ঘোষণার ঠিক আগ মুহূর্তে ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিয়েছেন মার্কোস স্টইনিস। এতো সব দুঃসংবাদের ভীড়ে আরও এক ধাক্কা খেল ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে ব্যক্তিগত কারণে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন অভিজ্ঞ পেসার মিশেল স্টার্ক।
স্টিভ স্মিথকে অধিনায়ক করে সিএ’র নির্বাচক জর্জ বেইলি বুধবার দল ঘোষণা করেছেন। নতুন চেহারার পেস বোলিং আক্রমণে জায়গা পেয়েছেন ডানহাতি পেসার শেন অ্যাবট, নাথান এলিস ও অ্যারন হার্ডি এবং বাঁ-হাতি পেসার বেন ডারসুইচ ও স্পেন্সার জনসন।
এছাড়া দুই স্পিন অলরাউন্ডার ও দুই বিশেষজ্ঞ স্পিনার আছেন অস্ট্রেলিয়ার দলে। অলরাউন্ডার হলেন- গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও ম্যাথু শট। লেগ স্পিনার হলেন অ্যাডাম জাম্পা ও তানভির শাংহা। ব্যাটিং আক্রমণে ট্রাভিস হেডের সঙ্গে ফ্রেশার ম্যাকগার্ক, মার্নাস লাবুশানে, জস ইংগলিস ও অ্যালেক্স কেরি।
দল নিয়ে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচন বেইলি বলেন, ‘আমরা স্টার্কের সিদ্ধান্তের সম্মান জানাই। তিনি অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাকে না পাওয়া দলের জন্য বড় ধাক্কা। তবে তিনি না থাকায় অন্যের জন্য ভালো সুযোগ তৈরি হয়েছে।’
অস্ট্রেলিয়ার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল: স্টিথ স্মিথ (অধিনায়ক), শেন অ্যাবট, অ্যালেক্স কেরি, বেন ডারসুইচ, নাথান এলিস, জ্যাক ফ্রেশার ম্যাকগার্ক, অ্যারন হার্ডি, ট্রাভিস হেড, জস ইংগলিস, স্পেন্সার জনসন, মার্নাস লাবুশানে, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, তানভির শাংহা, ম্যাথু শট, অ্যাডাম জাম্পা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইনজ র
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনায় এক মাসে ১৩ লাশ উদ্ধার, বাড়ছে উদ্বেগ
বাড়িতে ঝগড়া চলছিল বড় ভাই ও ভাবির। ছোট ভাই এসে ঝগড়া থামানোর চেষ্টা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বড় ভাই ছোট ভাইয়ের মাথায় শাবল দিয়ে আঘাত করেন। মাটিতে লুটিয়ে পড়লে ধারালো বঁটি দিয়ে ছোট ভাইকে হত্যা করেন। পরে বড় ভাই শহিদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি এখন কারাগারে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ৩০ মে, খুলনার কয়রা উপজেলার বাগালী ইউনিয়নের উলা গ্রামে।
এর আগে ২৭ মে কয়রার ইসলামপুর গ্রামের কয়রা নদীর চর থেকে শিকলে বাঁধা অবস্থায় আবদুল মজিদ (৬২) নামের এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ছাড়া ৮ জুন কয়রার কাছারিবাড়ি বাজার-সংলগ্ন পুকুর থেকে নমিতা (৪০) নামের এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়।
১০ জুন কয়রা সদরের গোবরা সড়কে এক ভ্যানচালকের সঙ্গে এক মোটরসাইকেলচালকের কথা-কাটাকাটিকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হন অন্তত ১৫ জন। ঘটনায় ১২ জনকে আসামি করে থানায় মামলাও হয়েছে। এ ছাড়া কথা-কাটাকাটির জেরে কয়রার পল্লীমঙ্গল গ্রামে গত তিন দিনে কয়েক দফা মারামারি, হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
অসন্তোষ-দ্বন্দ্বের জেরে কয়রা উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় হত্যা–সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। ১০ মে থেকে ৯ জুন পর্যন্ত এক মাসে খুলনার ১০টি থানা এলাকায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনাসহ ১৩টি লাশ উদ্ধার হয়েছে। এ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে।
কয়রা কপোতাক্ষ মহাবিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষক বিদেশ রঞ্জন মৃধা বলেন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উপাদান কমে যাওয়ায় মানুষ অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে। মূল্যবোধ ও ভারসাম্য নষ্ট হয়ে মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ব ও ভালোবাসা কমে যাচ্ছে। এতে খুনখারাবি বাড়ছে। একসময় সমাজের একজনের ভালোতে সবাই আনন্দ পেতেন। নেতিবাচক দিকগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করতেন। এখন সেই ব্যবস্থা উঠেই গেছে বলা যায়। পাশাপাশি রাজনৈতিক আধিপত্যের লড়াইয়ে প্রভাববলয় সৃষ্টি করতেও সহিংসতার ঘটনা ঘটছে।
৩ জুন খুলনা শহরে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে সবুজ হাওলাদার (৩০) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়। ৪ জুন খুলনা সদর থানার মতিয়াখালী খালের মধ্যে আটকে ছিল এক নারীর মরদেহ। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। ওই নারীর পরিচয় না পেয়ে বেওয়ারিশ হিসেবে আঞ্জুমান মুফিদুলে দাফন করা হয়। গত ৯ জুন বিকেলে রূপসা উপজেলার আঠারোবেকী নদীতে পাওয়া যায় অজ্ঞাতনামা যুবকের মরদেহ। মরদেহের শ্বাসনালিতে গভীর ক্ষতচিহ্ন ছিল। রূপসা নৌ পুলিশের ওসি আবুল খায়ের বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি হত্যাকাণ্ড।
এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রহস্য উদ্ঘাটন ও অপরাধী শনাক্তে দীর্ঘসূত্রতার কারণেই অপরাধ বেড়ে চলেছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার ব্যুরোর কয়রা উপজেলা শাখার সভাপতি তরিকুল ইসলাম। তাঁর ভাষ্য, প্রতিটি ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত শেষে দোষীদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করতে পারলে অপরাধপ্রবণতা কমে আসবে। আইনি প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতার কারণে অপরাধ বেড়ে চলেছে।
কয়রা উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুলী বিশ্বাস বলেন, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কয়েকটি ঘটনায় এলাকার মানুষের মধ্যে উৎকণ্ঠা বাড়ছে, এটা ঠিক। তবে প্রতিটি ঘটনায় পুলিশও তাৎক্ষণিকভাবে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। যে বিষয়গুলো পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও সামাজিক ভ্রাতৃত্ববোধের মধ্য দিয়ে সমাধান করা যায়, সেখানে খুনাখুনি, অস্থিরতা, মামলা-হামলার মধ্য দিয়ে একধরনের বিভীষিকাময় পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে; যা সবার জন্যই অকল্যাণকর ও ভয়ানক।