শুক্রাণু দান করে বিশ্বজুড়ে ১৮০ জনের বেশি সন্তানের বাবা হওয়ার দাবিদার এক ব্যক্তিকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরে অনিয়ন্ত্রিত শুক্রাণুদানের বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করেছেন এক বিচারক। যুক্তরাজ্যের কার্ডিফ শহরের পারিবারিক আদালতে এ ঘটনা ঘটেছে।

মার্কিন বংশোদ্ভূত এই শুক্রাণুদাতার নাম রবার্ট চার্লস অ্যালবন। তিনি উত্তর-পূর্ব ইংল্যান্ডের বাসিন্দা। নিজেকে জো ডোনার নামে পরিচয় দেওয়া এই ব্যক্তি অনলাইনে শুক্রাণুদানের বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নারীরা তাঁর কাছ থেকে শুক্রাণু নিয়ে সন্তান জন্ম দিয়ে থাকেন। এই শুক্রাণুদাতার দাবি, চীন থেকে অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত সারা বিশ্বে তাঁর সন্তান আছে। গত মাসে সংবাদমাধ্যম দ্য সানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, তাঁর ১৮০টি জীবিত সন্তান আছে এবং তাদের মধ্যে ৬০ জনের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়েছে।

তবে অ্যালবনের কাছ শুক্রাণু গ্রহণ করে সন্তান জন্ম দেওয়ার পর এক যুগলের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। তাঁদের সন্তানের ওপর পিতৃত্বের অধিকার চেয়ে বসেন ওই দাতা। শুধু তা–ই নয়, ওই দাতা বিষয়টির সুরাহা করতে কার্ডিফ শহরের পারিবারিক আদালতের শরণাপন্ন হন।

পারিবারিক আদালতে করা মামলার ক্ষেত্রে প্রকাশ্যে কোনো শিশুর পিতৃপরিচয় চিহ্নিত করার ঘটনা বিরল। তবে কার্ডিফের পারিবারিক আদালতের বিচারক জোনাথন ফারনেস কেসি এ ক্ষেত্রে জনস্বার্থে অ্যালবনের নাম প্রকাশ করা উচিত বলে মনে করেছেন। বিচারক ফারনেস বলেছেন, তিনি অনিয়ন্ত্রিত শুক্রাণুদানের সম্ভাব্য পরিণতি এবং অ্যালবনের শুক্রাণু ব্যবহার থেকে নারীদের রক্ষা করতে চান।

অ্যালবন এই মামলায় যে যুগলের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন, তাঁরা সমকামী দম্পতি। সিরিঞ্জ ইনজেকশনের মাধ্যমে অ্যালবনের শুক্রাণু গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে গর্ভধারণ করেছিলেন তাঁদের একজন। তবে অ্যালবনের দাবি, গর্ভধারণকারী ওই নারীর সঙ্গে তাঁর গোপনে যৌন সম্পর্ক হয়েছিল। অবশ্য আদালত তাঁর এই দাবি খারিজ করে দিয়েছেন।

কার্ডিফের পারিবারিক আদালতের শুনানিতে বলা হয়, ৫০ বছর বয়সী অ্যালবন শিশুটির কাছে ‘অপরিচিত’। কয়েক সপ্তাহ বয়সে একটি ছবি তোলার জন্য মাত্র ১০ মিনিটের জন্য তাঁদের দেখা হয়েছিল।

অ্যালবন আদালতে পিতৃত্ব দাবি করে বলেছেন, সন্তানের জন্মসনদে বাবার পরিচয়ে যেন তাঁর নাম লেখানো হয়। সন্তানের নাম পরিবর্তনের জন্যও আবেদন করেছেন তিনি।

ওই সমকামী যুগলের মধ্যে যেজন ওই সন্তানকে গর্ভে ধারণ করেননি, তাঁকে ‘মা’–এর বদলে সন্তান যেন আন্টি ডাকে—এমন দাবিও জানিয়েছেন অ্যালবন।

দুই মা-ই বলেছেন, দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলা আইনি প্রক্রিয়ার চাপে তাঁদের সম্পর্কে ভাঙন তৈরি করেছে।

আদালতের শুনানিতে বলা হয়, জন্মদাতা মা উদ্বেগ, বিষণ্নতা ও আত্মহত্যার প্রবণতায় ভুগছিলেন। মামলার কারণে তা আরও খারাপ হয়েছে।

রায়টি ২০২৩ সালে তৈরি করা হলেও এখন প্রকাশিত হয়েছে।

বিচারক ফারনেস মনে করেন, জনসাধারণ ও অন্তঃসত্ত্বা হতে চাওয়া অসহায় নারীদের জানা উচিত যে এভাবে শুক্রাণু নিলে তাঁরাও এমন ভয়ংকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অ য লবন র কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা বিভিন্ন দলের

ইরানে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন দল। অবিলম্বে এই হামলা ও গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে এ বিষয়ে দুনিয়ার শান্তিকামী দেশ ও বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে তারা। গতকাল রোববার পৃথক বিবৃতিতে এসব দলের নেতারা এই দাবি জানান। তারা ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ-ইহুদিবাদী ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ ও ইরানের জনগণের পাশে দাঁড়াতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ বকুল এক বিবৃতিতে বলেন, বর্তমান সময়ের সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তার নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী সংকট সৃষ্টি করে রেখেছে। একতরফা যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে ইরানের রাজনৈতিক সামরিক অগ্রযাত্রাকে রুখতে চেষ্টা করছে। যুদ্ধবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে এখনই থামতে হবে। অন্যায়ভাবে ইরানের শিশু-নারী ও সাধারণ নাগরিকদের ওপর বোমা ও মিসাইল হামলা বন্ধ করতে হবে। 

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক পৃথক বিবৃতিতে বলেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অঞ্চল লক্ষ্য করে ইসরায়েলের বেপরোয়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা রাষ্ট্রীয় ভয়ানক সন্ত্রাসী তৎপরতা। পরিকল্পিত এই হামলা আন্তর্জাতিক সব ধরনের বিধিবিধানকে  বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল। জাতিসংঘকেও এরা পুরোপুরি ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করেছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ