Risingbd:
2025-05-01@00:17:36 GMT

সুখবর নেই চাল ও তেলে

Published: 14th, February 2025 GMT

সুখবর নেই চাল ও তেলে

দুয়ারে কড়া নাড়ছে সংযমের মাস পবিত্র রমজান। কিন্তু, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে সংযম নেই ব্যবসায়ীদের। সবজি ছাড়া অন্যান্য নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্য আগের মতোই আছে, কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। চাল ও তেলে মিলছে না সুখবর। 

বিক্রেতারা বলছেন, রমজানকে সামনে রেখে বড় কোম্পানিগুলো আরেক দফায় দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে। কিন্তু, সরকারের কঠোর নীতির কারণে এখনো দাম বাড়াতে না পারলেও সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে।

শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর নিউ মার্কেট ও কারওয়ান বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলোতে ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট এখনো কাটেনি। আগের বাড়তি দামেই আটকে আছে চালের বাজার।

বাজারে এখন প্রতি কেজি মিনিকেট চাল ৮০ থেকে ৮৪ টাকা, ব্রি-২৮ চাল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, মোটা স্বর্ণা চাল ৫২ থেকে ৫৫ টাকা, নাজিরশাইল চাল ৭৬ থেকে ৮৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি চিনিগুড়া পোলাও চাল বিক্রি হচ্ছে ১১৬ থেকে ১১৮ টাকায়।

খুচরা বাজারে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ টাকায়, প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ও পাম অয়েল বিক্রি হচ্ছে ১৫৭ টাকায়। ২ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায় এবং বোতলজাত ৫ লিটার সয়াবিন তেলে বিক্রি হচ্ছে ৮৬০ টাকায়। 

এদিকে, সরকার সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে গত সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) থেকে সাশ্রয়ী মূল্যে বোতলজাত সয়াবিন তেলসহ পাঁচটি পণ্য বি‌ক্রি করছে।

টিসিবির ট্রাক থেকে এক জন ভোক্তা সর্বোচ্চ ২ লিটার সয়াবিন তেল, ২ কেজি করে মসুর ডাল ও ছোলা, ১ কে‌জি চিনি এবং ৫০০ গ্রাম খেজুর কিনতে পারবেন। এর মধ্যে প্রতি লিটার সয়াবিন তে‌লের দাম রাখা হবে ১০০ টাকা। প্রতি কেজি চিনি ৭০ টাকা, মসুর ডাল ও ছোলা ৬০ টাকা করে এবং খেজুর প্রতি কেজি ১৫৬ টাকায় পাওয়া যাবে।

বেড়েছে মুরগি ও পেঁয়াজের দাম
গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে কিছুটা বেড়েছে মুরগি ও পেঁয়াজের দাম। গত সপ্তাহে যে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকা কেজি দরে, এ সপ্তাহে তার দাম ৪৫ টাকা। এ সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৯০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে। এখন সোনালি জাতের মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকায়। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ থেকে ৮৫০ টাকায়। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে। প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ সপ্তাহেও বাজারে সবজির দাম তুলনামূলক কম আছে। প্রায় সব সবজির দাম প্রতি কেজি ৬০ টাকার মধ্যে। রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি কেজি বেগুন মানভেদে ২৫ থেকে ৩০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, গাজর ৩০ টাকা, শিম ২৫ টাকা, মুলা ২০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৬০ টাকা, টমেটো ২০ থেকে ৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, দেশি শসা ৩০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকা, প্রতি পিস লাউ ৪০ টাকা, জালি কুমড়া ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা এবং বড় সাইজের ফুলকপির জোড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকা।

প্রতি কেজি নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। প্রতি কেজি রসুন ২৪০ টাকা ও দেশি আদা ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি মসুর ডাল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা এবং ছোলা ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে মাছের সরবরাহ ভালো থাকায় দাম স্বাভাবিক আছে। এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২৫ টাকায়। প্রতি কেজি চাষের পাঙাস ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা, কৈ ১৫০ টাকা, শিং ৫০০ টাকা, পাবদা ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায়।

রাজধানীর হাজারীবাগ কাঁচাবাজারে কেনাকাটা করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী সাদ্দাম হোসেন রাইজিংবিডিকে বলেছেন, “রমাজান মাস চলে আসছে। এখনো কোনো প্রস্তুতি নিতে পারিনি। বাজারে সবজি বাদে সবকিছুর দাম আগের মতোই বাড়তি। আমাদের দেশে ব্যবসায়ীরা রমজানকে মুনাফা লাভের মাস মনে করে সবকিছুর দাম বাড়িয়ে দেন। রমজান মাসকে সামনে রেখে সরকারের উচিত বেশি বেশি বাজার তদারকি করা।”

রাজধানীর নিউ মার্কেটের মুদি ব্যবসায়ী আরিফ হোসেন রাইজিংবিডিকে বলেছেন, “রমজানের আর বেশি দেরি নেই। কিন্তু, মুদি পণ্যের দাম কমার সম্ভাবনা দেখছি না, বরং কিছু পণ্যের দাম বাড়ার আশঙ্কা আছে। আমরা মূলত পাইকারদের কাছ থেকে যে দামে কিনি, তার থেকে সামান্য লাভ করে বিক্রি করে দিই। দাম বাড়ানো এবং কমানোর মধ্যে আমাদের কোনো হাত নেই।”

ঢাকা/রায়হান/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব তলজ ত ৪০ ট ক ৩০ ট ক ৬০ ট ক রমজ ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

মিরাজে দুর্দান্ত জয় বাংলাদেশের

এমন পারফরম্যান্সই তো চাওয়ার থাকে ভালো দলের কাছে। মেহেদী হাসান মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্য, সাদমান ইসলামের সেঞ্চুরি, তাইজুল ইসলামের ৯ উইকেট শিকারে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ইনিংস ও ১০৬ রানের বিশাল জয় এনে দেয় বাংলাদেশকে। প্রথম টেস্ট হারের পর যে সমালোচনা হয়েছিল, তার জবাবটা বোধ হয় দ্বিতীয় টেস্ট তিন দিনে জিতে দিয়ে দিলেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। ‘বাউন্স ব্যাক’ করে সিরিজ ড্র ১-১-এ।

চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে বীরোচিত পারফরম্যান্স ছিল টাইগারদের। এটি সম্ভব হয়েছে পছন্দের উইকেটে খেলা হওয়ায়। স্পিন ভুবনে উইকেট উৎসব করেছেন তাইজুল, মিরাজ গাঁটছড়া বেঁধে। সিরিজ নির্ধারণী টেস্টে দুটি সেঞ্চুরি দারুণ অর্জন অধারাবাহিক ব্যাটিং লাইনআপের। এই টেস্টে ওপেনিং জুটি ভালো করেছে। লম্বা সময় পর টেস্ট খেলার সুযোগ পাওয়া এনামুল হক বিজয় ভালোই সঙ্গ দেন সাদমানকে। লোয়ার মিডলঅর্ডারে মিরাজের লড়াই ছিল দেখার মতো।

টেলএন্ডারদের নিয়ে রীতিমতো বাজিমাত করেছেন তিনি। শেষ ৩ উইকেটে তৃতীয় দিন ১৫৩ রান যোগ করেন। বাংলাদেশকে পৌঁছে দেন ৪৪৪ রানে। ২১৭ রানের লিড থাকায় ইনিংস ব্যবধানে জয়ের স্বপ্ন দেখায়। মিরাজের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে সে স্বপ্ন পূরণ হয়। সাকিব আল হাসান ও সোহাগ গাজীর পর তৃতীয় বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার তাঁর। 

গত বছর দেশের মাটিতে টেস্টে ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার পর দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। ২০২৫ সালের শুরুটাও ভালো ছিল না। সিলেটে জিম্বাবুয়ের কাছে হেরেছে। সিরিজ বাঁচাতে চট্টগ্রামে জিততেই হতো। লক্ষ্যে পৌঁছাতে কন্ডিশনেও পরিবর্তন আনা হয়। চট্টগ্রামের উইকেটে খেলা হয় দ্বিতীয় টেস্ট। যেখানে শাসন ছিল স্পিনারদের। পছন্দের উইকেট পাওয়ায় তিন স্পিনার নিয়ে খেলে বাংলাদেশ। তিনজনই দারুণ বোলিং করেন প্রথম থেকে।

দীর্ঘ বিরতির পর টেস্ট খেলার সুযোগ পাওয়া অফস্পিনার নাঈম হাসান চ্যালেঞ্জ নিয়ে বোলিং করে গেছেন। বেশি উইকেট না পেলেও এক প্রান্তে ব্যাটারদের চাপে ফেলেছেন। যার সুফল তাইজুল ও মিরাজ পেয়েছেন অন্য প্রান্তে। প্রথম দিন শেষ সেশনে ব্রেক থ্রু দেন তিনি। বাঁহাতি স্পিনার পরে পিক করে ৬ উইকেট শিকার করেন। জিম্বাবুয়ে ৯ উইকেটে ২২৭ রানে প্রথম দিন শেষ করে। পরের দিন এক বল খেলে ওই রানেই অলআউট হয়। বাংলাদেশ ব্যাটিং শুরু করে বড় লক্ষ্য নিয়ে। সাদমান ইসলাম ও এনামুল হক বিজয় ১১৮ রানের ওপেনিং জুটি করায় প্রতিপক্ষকে ছাড়িয়ে যাওয়া সহজ হয়। সাদমানের সেঞ্চুরি ও মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম কিছু রান করায় ৭ উইকেটে ২৯১ রানে দ্বিতীয় দিন শেষ করে বাংলাদেশ।

সেদিন সংবাদ সম্মেলনে সাদমান আশা প্রকাশ করেন, মিরাজ ও তাইজুল জুটি করবেন। অষ্টম উইকেটে ৬৪ রানের জুটি দু’জনের। বেশি ভালো করেছেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব। মিরাজের সঙ্গে ১৫৬ বলে ৯৬ রানের জুটি। অভিষেক টেস্টে সাকিবের ব্যাটিং দারুণ লেগেছে অধিনায়ক শান্তর কাছে। ৮০ বলে ৪১ রান করেন তিনি। সবচেয়ে বড় কথা, মাথায় বল লাগার পরও বিচলিত হননি তিনি। মিরাজ ছাড়া চট্টগ্রাম টেস্টের প্রাপ্তি হিসেবে ওপেনিং জুটির ভালো খেলা, সাদমানের সেঞ্চুরি, তাইজুলের ৫ উইকেট শিকার ও সাকিবের রান করাকে মনে করেন শান্ত। 

শেষের তিন উইকেটে তৃতীয় দিন প্রায় দুই সেশন ব্যাট করে বাংলাদেশ। তাইজুল, সাকিব ও হাসানকে নিয়ে ১৫৩ রান যোগ করে। মিরাজ ১০৪ রান করে ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে উইকেট দেন। নার্ভাস নাইটির ঘরে প্রবেশ করে কিছুটা ঝুঁকির মুখে ছিলেন মিরাজ। ৯৮ রানে পৌঁছানোর পর সেঞ্চুরি ছুঁতে দুই রান নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ফিল্ডারের কাছে বল চলে যাওয়ায় এক রানে থামতে হয়। তখন স্ট্রাইকে হাসান থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল সবাই। ড্রেসিংরুমে খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফের সবাই দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন। কখন হাসান আউট হয়ে যায়, সে ভয় কাজ করছিল হয়তো। কিন্তু হাসান ছিলেন দৃঢ়চেতা। মাসাকাদজাকে ডিফেন্স করে স্বস্তি দেন।

মিরাজ স্ট্রাইকে এসে মেদেভেরের প্রথম দুই বলে ঝুঁকি নেননি। তৃতীয় বলে এক রান নিয়ে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরির স্বাদ নেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ ও দ্বিতীয় টেস্টের সেরা খেলোয়াড় মিরাজ। প্রথম ম্যাচের উভয় ইনিংসে ৫ উইকেট করে ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে অতীতের সব পারফরম্যান্স ছাড়িয়ে গেছেন। সেঞ্চুরির সঙ্গে ৫ উইকেটপ্রাপ্তি, দুই হাজার রানের মাইলফলক পেয়েছেন। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। ২১৭ রানে পিছিয়ে থাকা জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হয় ১১১ রানে। ফ্লাডলাইটের আলো জ্বেলে নির্ধারিত সময়ের বেশি খেলান আম্পায়াররা। প্রায় সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খেলা হয়। জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটাররা তাতে আপত্তি করেননি। তাইজুল ৩, নাঈম ১ ও মিরাজ ৫ উইকেট নিলে ম্যাচ শেষ হয়।  

সিলেটে প্রথম টেস্ট হারের পর চট্টগ্রামে প্রভাব বিস্তার করে খেলে ম্যাচ জেতার পরও খুশি নন অধিনায়ক শান্ত, ‘আমি টেস্ট সিরিজ ড্র করে খুশি না। কারণ, প্রথম টেস্টে আমরা একেবারেই ভালো খেলিনি। এই টেস্টে একপেশে খেলে জিতলেও সিরিজে আরও ভালো খেলা উচিত ছিল। সিরিজটি জিততে হতো।’ টাইগার দলপতি জানান, এই পারফরম্যান্স শ্রীলঙ্কা সফরে কাজে দেবে। দেশের মাটিতে স্পোর্টিং উইকেট বানিয়ে বিদেশে খেলার পরিবেশ তৈরি করছিল বিসিবি। ২০২৩ সালে নিউজিল্যান্ড সিরিজ থেকে স্পোর্টিং উইকেটে খেলা হচ্ছে। কিউইদের বিপক্ষে সিলেটে ঐতিহাসিক জয় পেলেও মিরপুর থেকে হারতে শুরু করে। দেশের মাটিতে টানা ছয় হারের পর জয়ের দেখা পেল বাংলাদেশ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ