কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে উড়ো চিঠিতে রেজাউল ইসলাম (৫৭) নামে এক গামছা বিক্রেতার কাছে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ১২টার মধ্যে টাকা না দিলে বা পুলিশকে জানালে রেজাউল করিমের দুই নাতিকে গুলি করে হত্যার হুমকিও দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

গত দুই মাসে উড়ো চিঠিতে তিনবার চাঁদা দাবি ও হত্যার হুমকি পেয়েছেন বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবার। 

রেজাউল ইসলাম উপজেলার সদকী ইউনিয়নের বাটিকামারা এলাকার আব্দুল গফুরের ছেলে। তিনি ফুটপাতে গামছা বিক্রি করেন। এ ঘটনায় রেজাউল বৃহস্পতিবার দুপুরে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।

লিখিত অভিযোগে রেজাউল জানিয়েছেন, গত ১২ ফেব্রুয়ারি  দিবাগত রাত ২টার দিকে অজ্ঞাত কে বা কারা তারা বাড়ির জানালা ভাঙে। শব্দ পেয়ে তিনি বাইরে এসে দেখেন একটি হাতে লেখা চিঠি পড়ে রয়েছে। চিঠিতে তার কাছে তিন লাখ টাকা দাবি করা হয়েছে। বিষয়টি পুলিশ অথবা কাউকে জানালে তার নাতিসহ তাকেও গুলি করে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, কুষ্টিয়া-রাজবাড়ি সড়ক থেকে ২০০ মিটার নিচে রেজাউলের চার কক্ষবিশিষ্ট টিনসেড ঘর। স্ত্রী, ছেলে, ছেলের স্ত্রী, নাতি-নাতনিসহ সাতজনের বসবাস। ঘরের একটি কাঁচের জানালা ভাঙা।

এ সময় রেজাউলের মেয়ে রিমা খাতুন বলেন, ‘‘কারো সাথে শত্রুতা নেই। তবুও কে বা কারা চিঠি দিয়ে চাঁদা দাবি করে হত্যার হুমকি দিচ্ছে বুঝতে পারছি না। গেল দুই মাসে তিনবার এ ঘটনা ঘটেছে। এতে আমরা আতঙ্কিত।’’

দুর্বৃত্তের রেখে যাওয়া চিঠি এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। সেখানে ভাঙা ভাঙা অক্ষরে লেখা রয়েছে: ‘ভয় নাই আজ মারবো নানে। চলে গেলাম। তোর দুই নাতি ছেলের মাথার দাম ধরা হয়েছে তিন লাখ টাকা। বৃহস্পতিবার রাত ১২টার মধ্যে তিন লাখ টাকা নিয়ে চলে আসবি। আর এটা আমার এলাকা। তাই পুলিশ বা অন্য কোনো ঝামেলা না করলে তোর ভালো হবে। আর যদি কিছু করিস। তাহলে, রেজাউল তুই বাড়ির বাইরে আসলে আগে তোকে পাখির মতো গুলি করে মারব মনে রাখিস।’

এ প্রসঙ্গে ভুক্তভোগী রেজাউল বলেন, ‘‘কারা কেনো এমন করছে জানি না। পরিবার নিয়ে খুব ভয়ে আছি। বিচার চেয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি। এর আগেও ২০২৪ সালের ২ ডিসেম্বর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম।’’
উড়ো চিঠিতে চাঁদা দাবি ও হত্যার হুমকির বিষয়ে লিখিত অভিযোগের কথা স্বীকার করেছেন কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ সোলায়মান শেখ। তিনি বলেন, ‘‘ঘটনাটি গভীরভাবে তদন্ত চলছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।’

কাঞ্চন//

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত ও নিপীড়ন বন্ধের দাবি সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের

গণতান্ত্রিক শ্রম আইন, শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা, ন্যায্য মজুরি, অবাধ ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত ও শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে সমাবেশ ও মিছিল করেছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। একই সঙ্গে তারা বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তারকৃত শ্রমিকনেতাদের মুক্তির দাবিও জানায়।

মে দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।

সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জুলফিকার আলী, আইনবিষয়ক সম্পাদক বিমল চন্দ্র সাহা, নির্বাহী সদস্য আফজাল হোসেন, নির্বাহী সদস্য ও বোম্বে সুইটস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রতন মিয়া প্রমুখ।

সমাবেশে নেতারা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন করার চেষ্টার অপরাধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দিয়ে গার্মেন্টস উইংয়ের সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, রবিনটেক্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তারসহ ৭ জনকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে এবং রিকশা শ্রমিকদের রুটি–রুজির আন্দোলনে সংহতি জানানোর অপরাধে চট্টগ্রামে রিকশা সংগ্রাম পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি আল কাদেরি জয়, মিরাজ উদ্দিন ও রোকন উদ্দিনকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। অথচ সরকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, তারা শ্রমক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শ্রমমান বাস্তবায়ন করবে।

এ সময় নেতারা শ্রম সম্পর্ক উন্নয়নে সরকারের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত হচ্ছে কি না, তা জানতে চান। তাঁরা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করার অধিকার চর্চায় বাধা দেওয়া বন্ধ না হলে, শ্রমিকের ওপর নিপীড়ন বন্ধ না হলে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র পরিচালনা বা বৈষম্য নিরসনের প্রতিশ্রুতি শ্রমজীবী মানুষের কাছে প্রতারণা হিসেবে পরিগণিত হবে।

মে দিবসের ইতিহাস তুলে ধরে নেতারা আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও দেশের শ্রমজীবী মানুষের ৮৫ শতাংশ শ্রম আইনের সুরক্ষার বাইরে। শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের শ্রম খাতের দুর্দশার যে ভয়ানক চিত্র ফুটে উঠেছে, তা প্রমাণ করে স্বাধীনতা–পরবতী প্রতিটি সরকার শ্রম শোষণকে তীব্র থেকে তীব্রতর করার ক্ষেত্র তৈরি করেছে।

এ সময় গ্রেপ্তার সব শ্রমিকের মুক্তি, শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধ এবং মে দিবসের প্রকৃত চেতনায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নেতারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ