কবি সোহেল হাসান গালিবের মুক্তি দাবি শতাধিক পেশাজীবীর
Published: 16th, February 2025 GMT
কবি সোহেল হাসান গালিবের নিঃশর্ত মুক্তি এবং তার নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন শতাধিক লেখক, শিল্পী, শিক্ষক, সাংবাদিক, অধিকারকর্মীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী।
শনিবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়েছে।
লেখক ও সাংবাদিক ধ্রুব সাদিকের পাঠানো ওই বিবৃতিতে বলা হয়, “জাতীয় দৈনিক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সুবাদে আমরা অবগত হয়েছি যে একটি কবিতা লেখার কারণে একটি বিশেষ গোষ্ঠীর চাপে কবি-প্রাবন্ধিক ও শিক্ষক সোহেল হাসান গালিবকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।”
আরো পড়ুন:
বইমেলায় ‘আবৃত্তির কলাকৌশল ও নির্বাচিত কবিতা’
বাংলা একাডেমি পুরস্কার নির্বাচন প্রক্রিয়ায় গোলমাল ছিল: ফারুকী
“আমরা লেখক, শিল্পী, শিক্ষক, সাংবাদিক, অধিকারকর্মীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী নাগরিক মনে করি-কর্তৃপক্ষের এই ধরনের পদক্ষেপ লেখকের স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক পরিবেশের পরিপন্থি, এবং একই সাথে ছাত্রজনতার আন্দোলনের সাথেও অসঙ্গতিপূর্ণ।”
ধর্ম অবমাননার অভিযোগে বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে গালিবকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা। পরদিন তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
২০২৪ সালে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান উজান থেকে প্রকাশিত বইয়ে গালিবের লেখা একটি কবিতা ঘিরে সমালোচনা শুরু হয়। কবিতাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ালে গালিবের বিরুদ্ধে মহানবীকে ‘কটাক্ষ’ করার অভিযোগ ওঠে।
লেখালেখির পাশাপাশি গালিব একটি সরকারি কলেজে শিক্ষকতা করেন।
বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন-লেখক খালিকুজ্জামান ইলিয়াস, আনু মুহাম্মদ, ওয়াসি আহমেদ, সলিমুল্লাহ খান, কথাসাহিত্যিক ইমতিয়ার শামীম, কবি-প্রাবন্ধিক রাজু আলাউদ্দিন, কুমার চক্রবর্তী, আহমেদ স্বপন মাহমুদ, চঞ্চল আশরাফ, সাখাওয়াত টিপু, কথাসাহিত্যিক রাশিদা সুলতানা, লেখক মোহাম্মদ আজম, হেলাল মহিউদ্দিন, কবি খালেদ হোসাইন, লেখক ও অনুবাদক রওশন জামিল চৌধুরী, জিএইচ হাবীব, কথাসাহিত্যিক আহমাদ মোস্তফা কামাল, কথাসাহিত্যিক আফসানা বেগম, লেখক সাবিহা হক, সাংবাদিক সায়দিয়া গুলরুখ, কবি ও সংগীতশিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান, কথাসাহিত্যিক মাসকাওয়াথ আহসান, লেখক ও সাংবাদিক ধ্রুব সাদিক, কবি শামশেত তাবরেজী, কবি ও চিত্রশিল্পী মোস্তফা জামান, সাম্প্রতিক দেশকাল সম্পাদক ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ, লেখক সৌভিক রেজা, কথাসাহিত্যিক বর্ণালী সাহা, শিক্ষক রেজওয়ানা স্নিগ্ধা, চলচ্চিত্র নির্মাতা মুহাম্মদ কাইউম, লেখক সিরাজ সালেকীন, লেখক মোশাহিদা সুলতানা, কবি ফিরোজ এহতেশাম, লেখক মহীবুল আজিজ, কথাসাহিত্যিক ফজলুল কবিরী, চিত্রনাট্যকার শ্যামল শিশির, কবি ও অধিকার কর্মী ফেরদৌস আরা রুমী, চলচ্চিত্র নির্মাতা খন্দকার সুমন, লেখক দিলওয়ার হাসান, কথাসাহিত্যিক জিয়া হাশান, লেখক রায়হান রাইন, কবি মজনু শাহ, অভিনয়শিল্পী ইমতিয়াজ বর্ষণ, চলচ্চিত্র নির্মাতা খিজির হায়াত খান, কবি হাসান রনি, লেখক মাজহার জীবন, লেখক নাহিদ হাসান, সাংবাদিক নাসরিন আখতার, কবি রাসেল রায়হান, কবি ও গদ্যকার বায়েজিদ বোস্তামী, কবি ও সাংবাদিক সাদাত সায়েম, শিক্ষক ও অনুবাদক আলমগীর মোহাম্মদ, চলচ্চিত্রকর্মী রাফসান আহমেদ, কবি ও কথাসাহিত্যিক জব্বার আল নাঈম, কবি সাম্মি ইসলাম নীলা, কবি ও সাংবাদিক শিমুল সালাহ্উদ্দিন, কথাসাহিত্যিক পিওনা আফরোজ, চলচ্চিত্র নির্মাতা জায়েদ সিদ্দিকী, কথাসাহিত্যিক মোস্তফা অভি, কবি উপল বড়ুয়া, চলচ্চিত্র নির্মাতা মেজবাউর রহমান সুমন, লেখক-চিন্তক জাহিদ জগৎ, চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রসূন রহমান, কবি মিছিল খন্দকার, সাংবাদিক রাজীব কান্তি রায়, লেখক ও শিক্ষক সুদীপ্ত সালাম, কথাসাহিত্যিক আনিফ রুবেদ, কবি ও নাট্যকার জেনিস মাহমুন, লেখক আহমেদ ফিরোজ, কবি মাহবুব কবির, অধ্যাপক মাসউদ ইমরান মান্নু, সংগীতশিল্পী মাহমুদুজ্জামান বাবু, লেখক ও অনুবাদক শাহরোজা নাহরিন, কবি ইরাজ আহমেদ, কবি রনক জামান, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক অলাত এহ্সান, কবি সাজ্জাদ সাঈফ সরকার, লেখক মাহফুজুর রহমান সজীব, কথাসাহিত্যিক কাজী রাফি, কবি-প্রাবন্ধিক শাহেদ কায়েস, লেখক তাইয়্যেবুন মিমি, কবি জাবেদ হোসাইন জিদান, স্থপতি ও চলচ্চিত্র নির্মাতা কামার আহমাদ সাইমন, কবি সাইয়েদ জামিল, সম্পাদক ও শুদ্ধস্বর প্রকাশক আহমেদুর চৌধুরী, অধ্যাপক শরৎ চৌধুরী, শিক্ষক সৈয়দ আসাদুজ্জামান, শিক্ষক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা লাবনী আশরাফি, লেখক ও চিত্রশিল্পী দেবাশীষ চক্রবর্ত্তী, চিত্রশিল্পী অনিন্দ্য নাহার হাবীব, লেখক ও শিক্ষক সৈয়দ নিজার, গবেষক সামিও শিশ, অধ্যাপক স্বাধীন সেন, লেখক ষড়ৈশ্বর্য মুহম্মদ, লেখক ও শিক্ষক কামরুন নাহার শীলা, লেখক ও সাংবাদিক দেবদুলাল মুন্না, কবি-প্রাবন্ধিক মজিদ মাহমুদ, লেখক ও রাজনীতিক ফিরোজ আহমেদ, কবি সালেহীন শিপ্রা, নাট্য নির্মাতা মাতিয়া বানু শুকু, লেখক ও প্রকাশক দীপক রায়, কবি-অনুবাদক শাফিনূর শাফিন, কবি নুরেন দূর্দানী, সংগীতশিল্পী সানী জুবায়ের।
ঢাকা/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র ন র ম ত প র বন ধ ক আহম দ
এছাড়াও পড়ুন:
গেইল-পেরেরাদের পারিশ্রমিক, হোটেল বিল না দিয়েই লিগের আয়োজকেরা পালিয়েছেন
টুর্নামেন্টের নাম ইন্ডিয়ান হেভেনস প্রিমিয়ার লিগ বা আইএইচপিএল। ভূস্বর্গ খ্যাত কাশ্মীরে আয়োজিত টুর্নামেন্টটি ক্রিস গেইল, থিসারা পেরেরাদের জীবনে নিয়ে এসেছে মহা বিড়ম্বনা। বিশ্ব ক্রিকেটের নামি এই খেলোয়াড়দের হোটেলে রেখে শহর থেকে পালিয়ে গেছেন লিগের আয়োজকেরা। খেলোয়াড়, ম্যাচ কর্মকর্তাদের পারিশ্রমিক দেওয়া হয়নি, পরিশোধ করা হয়নি হোটেলের বিলও।
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে। গত ২৫ অক্টোবর আট দল নিয়ে শুরু হওয়া আইএইচপিএল শেষ হওয়ার কথা ছিল ৮ নভেম্বর। কিন্তু শনিবার সকালে খেলোয়াড়দের জানানো হয়, কারিগরি কারণে দিনের খেলা বাতিল করা হয়েছে। এরপর রোববার সকালে হোটেলে থাকা খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারা জানতে পারেন, আয়োজকেরা আগের রাতে শ্রীনগর ছেড়ে চলে গেছেন।
হোটেল কর্তৃপক্ষ জানায়, আয়োজকদের কাছ থেকে তারা কোনো বিল পায়নি। সেই সময় প্রায় ৪০ জনের মতো খেলোয়াড় ও কর্মকর্তা হোটেলেই আটকা পড়েছিলেন।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) কর্মকর্তা মেলিসা জুনিপার আইএইচপিএলে আম্পায়ারিং করতে গিয়েছিলেন। শ্রীনগরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আয়োজকেরা হোটেল থেকে পালিয়ে গেছেন। তারা হোটেল, খেলোয়াড় বা আম্পায়ার কারও বিল পরিশোধ করেননি। আমরা হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতায় এসেছি যেন সবাই বেরিয়ে যেতে পারে।’
শ্রীনগরের যে হোটেলে খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের রাখা হয়েছিল, সেখানকার এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘আয়োজকেরা ১০ দিন আগে খেলোয়াড়দের জন্য ১৫০টি কক্ষ চেয়েছিলেন। তাঁরা বলেছিলেন, ক্রিস গেইলের মতো তারকার কারণে কাশ্মীরের পর্যটন উপকৃত হবে। কিন্তু রোববার সকালে দেখি তাঁরা উধাও হয়ে গেছেন। আমাদের বিলও দেননি। গেইলসহ কয়েকজন খেলোয়াড় শনিবারই হোটেল ছেড়ে চলে গেছেন।’
গেইল ছাড়াও টুর্নামেন্টে খেলতে গিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার থিসারা পেরেরা, নিউজিল্যান্ডের জেসি রাইডার, দক্ষিণ আফ্রিকার রিচার্ড লেভি এবং ওমানের আয়ান খান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে টুর্নামেন্টের প্রচারণায় যে সব পোস্টার ব্যবহার করা হয়েছে, তার একটিতে বাংলাদেশের সাকিব আল হাসানের ছবিও বড় আকারে দেখা গেছে।
ভারতের সাবেক ক্রিকেটার পারভেজ রসুল এই টুর্নামেন্টে খেলেছিলেন। তিনি জানান, কয়েকজন বিদেশি খেলোয়াড় হোটেলে আটকা পড়েছিলেন। পরে ব্রিটিশ হাইকমিশনের সহায়তায় তাঁরা বেরিয়ে যান, ‘এক ইংলিশ আম্পায়ার হাইকমিশনে যোগাযোগ করেছিলেন’।
স্থানীয় এক ক্রিকেটার জানান, আয়োজকেরা সম্ভবত ধারণাই করতে পারেননি এমন একটি টুর্নামেন্ট চালাতে কত বড় বাজেট প্রয়োজন। শেষ মুহূর্তে স্পনসররা সরে যাওয়ায় অর্থ সংকট তৈরি হয়েছিল, ‘প্রথম দিন নির্ধারিত পোশাকও ছিল না, স্থানীয়ভাবে কিনে আনা হয়েছিল। কোনো খেলোয়াড়ের সঙ্গেও লিখিত চুক্তি করা হয়নি।’
টুর্নামেন্টটির আয়োজক ছিল যুবা সোসাইটি মোহালি নামের একটি সংস্থা। সহযোগিতায় ছিল জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর স্পোর্টস কাউন্সিল। কাউন্সিলের এক কর্মকর্তা জানান, আইএইচপিএল সভাপতি আশু দানি পুলিশের ছাড়পত্র ও মাঠ ব্যবহারের অনুমতি নিয়েছিলেন, ‘তারা আমাদের টাকা দিয়েছে। এখানে সরকারের সরাসরি সংশ্লিষ্টতা নেই। কেন লিগ মাঝপথে বন্ধ হয়ে গেল, আমরা জানি না।’
তবে ২২ অক্টোবরের একটি সরকারি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জম্মু ও কাশ্মীরের বিভাগীয় কমিশনার অংশুল গার্গের সভাপতিত্বে আইএইচপিএল নিয়ে এক প্রস্তুতি সভার কথা উল্লেখ ছিল, যেখানে অনুমান করা হয়েছিল বকশি স্টেডিয়ামে ২৫–৩০ হাজার দর্শক উপস্থিত থাকবেন। কিন্তু বাস্তবে দর্শক উপস্থিতি ছিল হতাশাজনক। টিকিটের দাম কমিয়েও সাড়া মেলেনি।
এ ব্যাপারে বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাঁর মন্তব্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।