কবি সোহেল হাসান গালিবের নিঃশর্ত মুক্তি এবং তার নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন শতাধিক লেখক, শিল্পী, শিক্ষক, সাংবাদিক, অধিকারকর্মীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী।

শনিবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়েছে।

লেখক ও সাংবাদিক ধ্রুব সাদিকের পাঠানো ওই বিবৃতিতে বলা হয়, “জাতীয় দৈনিক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সুবাদে আমরা অবগত হয়েছি যে একটি কবিতা লেখার কারণে একটি বিশেষ গোষ্ঠীর চাপে কবি-প্রাবন্ধিক ও শিক্ষক সোহেল হাসান গালিবকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।”

আরো পড়ুন:

বইমেলায় ‘আবৃত্তির কলাকৌশল ও নির্বাচিত কবিতা’

বাংলা একাডেমি পুরস্কার নির্বাচন প্রক্রিয়ায় গোলমাল ছিল: ফারুকী

“আমরা লেখক, শিল্পী, শিক্ষক, সাংবাদিক, অধিকারকর্মীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী নাগরিক মনে করি-কর্তৃপক্ষের এই ধরনের পদক্ষেপ লেখকের স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক পরিবেশের পরিপন্থি, এবং একই সাথে ছাত্রজনতার আন্দোলনের সাথেও অসঙ্গতিপূর্ণ।”

ধর্ম অবমাননার অভিযোগে বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে গালিবকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা। পরদিন তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

২০২৪ সালে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান উজান থেকে প্রকাশিত বইয়ে গালিবের লেখা একটি কবিতা ঘিরে সমালোচনা শুরু হয়। কবিতাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ালে গালিবের বিরুদ্ধে মহানবীকে ‘কটাক্ষ’ করার অভিযোগ ওঠে।

লেখালেখির পাশাপাশি গালিব একটি সরকারি কলেজে শিক্ষকতা করেন।

বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন-লেখক খালিকুজ্জামান ইলিয়াস, আনু মুহাম্মদ, ওয়াসি আহমেদ, সলিমুল্লাহ খান, কথাসাহিত্যিক ইমতিয়ার শামীম, কবি-প্রাবন্ধিক রাজু আলাউদ্দিন, কুমার চক্রবর্তী, আহমেদ স্বপন মাহমুদ, চঞ্চল আশরাফ, সাখাওয়াত টিপু, কথাসাহিত্যিক রাশিদা সুলতানা, লেখক মোহাম্মদ আজম, হেলাল মহিউদ্দিন, কবি খালেদ হোসাইন, লেখক ও অনুবাদক রওশন জামিল চৌধুরী, জিএইচ হাবীব, কথাসাহিত্যিক আহমাদ মোস্তফা কামাল, কথাসাহিত্যিক আফসানা বেগম, লেখক সাবিহা হক, সাংবাদিক সায়দিয়া গুলরুখ, কবি ও সংগীতশিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান, কথাসাহিত্যিক মাসকাওয়াথ আহসান, লেখক ও সাংবাদিক ধ্রুব সাদিক, কবি শামশেত তাবরেজী, কবি ও চিত্রশিল্পী মোস্তফা জামান, সাম্প্রতিক দেশকাল সম্পাদক ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ, লেখক সৌভিক রেজা, কথাসাহিত্যিক বর্ণালী সাহা, শিক্ষক রেজওয়ানা স্নিগ্ধা, চলচ্চিত্র নির্মাতা মুহাম্মদ কাইউম, লেখক সিরাজ সালেকীন, লেখক মোশাহিদা সুলতানা, কবি ফিরোজ এহতেশাম, লেখক মহীবুল আজিজ, কথাসাহিত্যিক ফজলুল কবিরী, চিত্রনাট্যকার শ্যামল শিশির, কবি ও অধিকার কর্মী ফেরদৌস আরা রুমী, চলচ্চিত্র নির্মাতা খন্দকার সুমন, লেখক দিলওয়ার হাসান, কথাসাহিত্যিক জিয়া হাশান, লেখক রায়হান রাইন, কবি মজনু শাহ, অভিনয়শিল্পী ইমতিয়াজ বর্ষণ, চলচ্চিত্র নির্মাতা খিজির হায়াত খান, কবি হাসান রনি, লেখক মাজহার জীবন, লেখক নাহিদ হাসান, সাংবাদিক নাসরিন আখতার, কবি রাসেল রায়হান, কবি ও গদ্যকার বায়েজিদ বোস্তামী, কবি ও সাংবাদিক সাদাত সায়েম, শিক্ষক ও অনুবাদক আলমগীর মোহাম্মদ, চলচ্চিত্রকর্মী রাফসান আহমেদ, কবি ও কথাসাহিত্যিক জব্বার আল নাঈম, কবি সাম্মি ইসলাম নীলা, কবি ও সাংবাদিক শিমুল সালাহ্উদ্দিন, কথাসাহিত্যিক পিওনা আফরোজ, চলচ্চিত্র নির্মাতা জায়েদ সিদ্দিকী, কথাসাহিত্যিক মোস্তফা অভি, কবি উপল বড়ুয়া, চলচ্চিত্র নির্মাতা মেজবাউর রহমান সুমন, লেখক-চিন্তক জাহিদ জগৎ, চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রসূন রহমান, কবি মিছিল খন্দকার, সাংবাদিক রাজীব কান্তি রায়, লেখক ও শিক্ষক সুদীপ্ত সালাম, কথাসাহিত্যিক আনিফ রুবেদ, কবি ও নাট্যকার জেনিস মাহমুন, লেখক আহমেদ ফিরোজ, কবি মাহবুব কবির, অধ্যাপক মাসউদ ইমরান মান্নু, সংগীতশিল্পী মাহমুদুজ্জামান বাবু, লেখক ও অনুবাদক শাহরোজা নাহরিন, কবি ইরাজ আহমেদ, কবি রনক জামান, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক অলাত এহ্সান, কবি সাজ্জাদ সাঈফ সরকার, লেখক মাহফুজুর রহমান সজীব, কথাসাহিত্যিক কাজী রাফি, কবি-প্রাবন্ধিক শাহেদ কায়েস, লেখক তাইয়্যেবুন মিমি, কবি জাবেদ হোসাইন জিদান, স্থপতি ও চলচ্চিত্র নির্মাতা কামার আহমাদ সাইমন, কবি সাইয়েদ জামিল, সম্পাদক ও শুদ্ধস্বর প্রকাশক আহমেদুর চৌধুরী, অধ্যাপক শরৎ চৌধুরী, শিক্ষক সৈয়দ আসাদুজ্জামান, শিক্ষক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা লাবনী আশরাফি, লেখক ও চিত্রশিল্পী দেবাশীষ চক্রবর্ত্তী, চিত্রশিল্পী অনিন্দ্য নাহার হাবীব, লেখক ও শিক্ষক সৈয়দ নিজার, গবেষক সামিও শিশ, অধ্যাপক স্বাধীন সেন, লেখক ষড়ৈশ্বর্য মুহম্মদ, লেখক ও শিক্ষক কামরুন নাহার শীলা, লেখক ও সাংবাদিক দেবদুলাল মুন্না, কবি-প্রাবন্ধিক মজিদ মাহমুদ, লেখক ও রাজনীতিক ফিরোজ আহমেদ, কবি সালেহীন শিপ্রা, নাট্য নির্মাতা মাতিয়া বানু শুকু, লেখক ও প্রকাশক দীপক রায়, কবি-অনুবাদক শাফিনূর শাফিন, কবি নুরেন দূর্দানী, সংগীতশিল্পী সানী জুবায়ের।

ঢাকা/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র ন র ম ত প র বন ধ ক আহম দ

এছাড়াও পড়ুন:

ছয় কোটি শ্রমিক রাষ্ট্রীয় সুরক্ষার বাইরে

দেশের মোট শ্রমিকের ৮৪ দশমিক ১ শতাংশের কোনো দায়দায়িত্ব নেয় না রাষ্ট্র । শ্রমিক হিসেবে তাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নেই। কোনো রকম আইনি ও সামাজিক সুরক্ষা নেই। কর্মস্থলের পরিচয়পত্র নেই। কাজের ক্ষেত্রে অন্যায়ের শিকার হলে তাদের শ্রম আদালতে মামলা করার সুযোগও নেই। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী,  অপ্রাতিষ্ঠানিক এই শ্রমিকের সংখ্যা ৫ কোটি ৯৬ লাখ ৮০ হাজার।

বিশালসংখ্যক শ্রমিকের প্রতি রাষ্ট্রের এ রকম অবহেলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সরকারের গঠিত শ্রম সংস্কার কমিশন। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গত ২১ এপ্রিল পেশ করা কমিশনের ২৫ সুপারিশের মধ্যে প্রথমে প্রাতিষ্ঠানিক এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের সব শ্রমিকের আইনি সুরক্ষা ও স্বীকৃতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। 

দেশের শ্রম খাতের দুর্বলতা চিহ্নিত করা এবং শ্রমিকের অধিকার ও জীবনমান উন্নয়নে সুপারিশ প্রণয়নের উদ্দেশ্যে গঠিত ১৯ সদস্যের কমিশনপ্রধান ছিলেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ-বিলসের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ। জানতে চাইলে গতকাল তিনি সমকালকে বলেন, ‘আমরা সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছি। শ্রম আইনে অন্য সব শ্রমিকের মতো একই অধিকার এবং সুযোগসুবিধা পাওয়ার পাশাপাশি ক্ষেত্রবিশেষে তাদের বাড়তি সুবিধা দেওয়ার কথা বলেছি। সামাজিক সুরক্ষার আওতায় তাদের জন্য ভাতার কথা বলেছি। প্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকের জন্য এ সুবিধার সুপারিশ করা হয়নি। কারণ, তারা চাকরি শেষে কমবেশি কিছু আর্থিক সুবিধা পান।’ 

কমিশনের এ সব সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে নিয়মিত নজরদারি রাখার কথাও জানান তিনি। 

এ বাস্তবতায় আজ বৃহস্পতিবার মহান শ্রমিক দিবস পালন করা হচ্ছে। আজ সরকারি ছুটি থাকবে। এ দিনও কাজ করতে হবে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দিবসটি পালনের বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক মালিক এক হয়ে, গড়ব এ দেশ নতুন করে’। 

বিবিএসের গত নভেম্বরে প্রকাশিত সর্বশেষ জরিপ প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে কর্মক্ষম জনসংখ্যা ১২ কোটি ৬ লাখ ২০ হাজার। তাদের মধ্যে শ্রমশক্তি ৭ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার। মোট শ্রমশক্তির ৮৪ দশমিক ১ শতাংশ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করে। 

দেশে শ্রমশক্তি বলতে ১৫ বছরের বেশি বয়সের মানুষের মধ্যে যারা কর্মে নিয়োজিত এবং বেকার জনগোষ্ঠীর সমষ্টিকে বোঝায়। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা–আইএলওর মানদণ্ড অনুযায়ী, যারা সাত দিনে কমপক্ষে ১ ঘণ্টার বেতন, মজুরি বা মুনাফার বিনিময় অথবা পরিবারের নিজস্ব ভোগের জন্য পণ্য উৎপাদনের কাজ করেছেন জরিপে তাদের কর্মে নিয়োজিত হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। আবার যারা কর্মক্ষম কিন্তু কোনো কাজে নিয়োজিত নন, নির্দিষ্ট সময়ে কাজ খুঁজে বেড়ান এবং ওই সময়ে কাজের সুযোগ পেলে সে কাজ করতে প্রস্তুত তাদের বেকার বলা হয়েছে। এ হিসাবে দেশে বেকারের সংখ্যা ২৪ লাখ ৬০ হাজার। 

অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিক কারা 

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা–আইএলওর আন্তর্জাতিক শ্রম পরিসংখ্যানবিদের সম্মেলন ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অব লেবার স্ট্যাটিসিয়ান্স–আইসিএলসির সংজ্ঞা অনুযায়ী, বেসরকারি অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি বা খানামালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান, যেগুলোর আইনি সত্তা নেই, পরিপূর্ণ হিসাব নেই, উৎপাদনের হিসাব দিতে হয় না এবং বেসরকারি ও অনিবন্ধিত–এরকম খাতকে অনানুষ্ঠানিক খাত এবং এ খাতের শ্রমিকদের অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিক বলা হয়। 

মূলত কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতে অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক বেশি। কৃষিতে ৯৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ অপ্রাতিষ্ঠানিক। শিল্প খাতে ৮২ দশমিক ৭৫ শতাংশ। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের বড় অংশই গ্রামে থাকেন। 

বিবিএস বলছে, গ্রামের মোট শ্রমিকের ৮৭ দশমিক ৪ শতাংশ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন। সংখ্যায় তারা ৪ কোটি ৬১ লাখ ১০ হাজার। শহরের শ্রমিকদের এ হার কিছুটা কম। ৭৪ দশমিক ৫ শতাংশ। সংখ্যায় এক কোটি ৩৫ লাখ ৭০ হাজার। নারী শ্রমিকদের ৯৫ দশমিক ৭ শতাংশ অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করে থাকেন।

শ্রম আইনে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতকেও অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ কমিশনের 

শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে প্রাতিষ্ঠানিক, অপ্রাতিষ্ঠানিক, কৃষি, গৃহশ্রমিক, অভিবাসী, স্বনিয়োজিত শ্রমিকসহ সব শ্রমিকের জন্য শ্রম আইনে সুরক্ষা নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে শ্রমিকদের কাজের স্বীকৃতি, পরিচয়পত্র, নিরবচ্ছিন্ন কাজ এবং আয়ের নিশ্চয়তা, মর্যাদাকর শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার কথা বলা হয়। এতে আরও বলা হয়, এসব শ্রমিকের জন্য রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা হিসেবে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সব অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় থেকে প্রতিটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আলাদা অফিস অথবা ডেস্ক স্থাপন করতে হবে। শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা এবং কল্যাণে প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের সব ধরনের তথ্য নিয়ে তথ্যভান্ডার করা, পরিচয়পত্র দেওয়া এবং অবসর ভাতা চালুসহ বেশ কিছু সুপারিশ করে কমিশন। 

অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের প্রবীণ শ্রমিকদের জন্য অসরকালীন ভাতার সুপারিশ 

রাষ্ট্রের নিম্নতম মজুরি বোর্ডের আওতায় বিভিন্ন সুবিধা পেয়ে থাকেন প্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকরা। অবসরের পরও কিছু সুবিধা পান তারা। তবে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকরা সারা জীবন খাটুনির পর প্রবীণ বয়সে আরও কষ্টে থাকেন। কারণ সামান্যতম কোনো সুবিধা পান না তারা। এ বিবেচনা থেকে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের জন্য অসরকালীন ভাতা বা তাদের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় আনার সুপারিশ করেছে কমিশন। তাদের অবসরের বয়সসীমা ৬০ বছর নির্ধারণের কথা বলা হয় এতে। দরিদ্র বেকার শ্রমিকদের বয়স্কভাতা এবং তাদের প্রতিদিনের খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা ও অন্যান্য চাহিদা বিবেচনায় বয়স্কভাতার পরিমাণ নির্ধারণের কথা বলেছে কমিশন। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের পেশা ও খাত অনুযায়ী সংগঠিত হওয়া, প্রতিনিধিত্ব করা ও নিয়োগকারী, তাদের সমিতি করার সুযোগ দেওয়ার কথাও বলা হয় কমিশনের সুপারিশে। 

প্রাতিষ্ঠানিকের ৫৫ খাতেও ন্যূনতম মজুরি নেই 

অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের চেয়ে কিছুটা ভালো হলেও প্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের অবস্থাও খুব বেশি ভালো নয়। এখনও অনেক শিল্প খাতকে ন্যূনতম মজুরি কাঠামোর আওতায় আনা হয়নি। মালিকপক্ষ যা দেয়, তা মেনে নিয়ে কাজ করেন শ্রমিকরা। এরকম অন্তত ৫৫টি খাতে ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা হয়নি। 

শ্রম মন্ত্রণালয়ের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশের স্বীকৃত শিল্প আছে ১০২টি। 

টাইপ ফাউন্ড্রি শিল্পের মজুরি বোর্ড হয় সর্বশেষ ১৯৮৩ সালে। অর্থাৎ, গত তিন যুগ ধরে একই মজুরি চলছে এ খাতে। জানতে চাইলে সরকারের নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সচিব রাইসা ইসলাম গতকাল সমকালকে বলেন, ন্যূনতম মজুরি কাঠামোতে বর্তমানে ৪৭টি শিল্প রয়েছে। নতুন করে দুটি শিল্পকে ন্যূনতম মজুরির আওতায় আনা হবে। আরও ২০ শিল্পকে এর আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে। তিনি জানান, পেট্রোল পাম্পের শ্রমিকদের মজুরি পুনঃনির্ধারণে বোর্ড গঠন হয়েছে। মালিক পক্ষ এ-সংক্রান্ত সভায় আসছে না। এ অবস্থায় করণীয় জানতে শ্রম মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ চেয়েছে মজুরি বোর্ড। 

টাইপ ফাউন্ড্রি শিল্পে তিন যুগ ধরে একই মজুরির বিষয়ে জানতে চাইলে রাইসা ইসলাম বলেন, টাইপ ফাউন্ড্রি শিল্পের আর অস্তিত্ব নেই। খাতটি হয়তো বিলুপ্ত ঘোষণা করা হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ