গাজীপুরের শ্রীপুরে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে বাদল মিয়া নামের এক বৃদ্ধের হাত-পা বেঁধে ডাকাতির অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রোববার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার সিরিশগুড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, ডাকাতেরা অর্থের পাশাপাশি স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে গেছেন।

বাদল মিয়ার ছেলে মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, গতকাল রাত আড়াইটার দিকে হঠাৎ একদল ডাকাত রান্নাঘরের বেড়া ভেঙে তাঁদের বসতবাড়িতে ঢুকেন। এরপর কৌশলে বাইরে থেকে তাঁর বাবার ঘরের দরজা খুলে ভেতরে যান। এ সময় ওই ঘরে বাদল মিয়ার হাত ও পা বেঁধে গলায় ছুরি ধরে চিৎকার–চেঁচামেচি করতে নিষেধ করেন তাঁরা। পরে ঘরে থাকা স্বর্ণালংকার, টাকাপয়সা ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যান।

বিল্লাল হোসেন বলেন, লুটপাটের বিষয়টি পাশের কক্ষ থেকে টের পান তাঁর ছোট বোন। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি আত্মীয়স্বজন ও আশপাশের লোকজনকে মুঠোফোনে কল করে ঘটনাটি জানান। এ সময়ের মধ্যে ডাকাত দল অন্য কক্ষের দরজাও ভাঙতে চেষ্টা করে। দ্রুত লোকজন বিভিন্ন জায়গা থেকে হইচই শুরু করলে ডাকাত দল একটি কক্ষের মালামাল লুট করে সেগুলো নিয়ে পালিয়ে যায়। ডাকাত দলের অন্তত পাঁচজন ঘরের ভেতরে প্রবেশ করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে তিনজনের মুখ বাঁধা অবস্থায় ছিল। প্রত্যেকের বয়স ১৯ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। তাঁদের হাতে দেশি অস্ত্র, দা, ছুরি, লোহার রড ও দরজা খোলার যন্ত্রাংশ ছিল।

আজ সকাল ১০টার দিকে শ্রীপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো.

শামীম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ঘটনা সম্পর্কে আমরা জানি না। এখনো কেউ অভিযোগ করেননি।’

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত ও নিপীড়ন বন্ধের দাবি সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের

গণতান্ত্রিক শ্রম আইন, শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা, ন্যায্য মজুরি, অবাধ ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত ও শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে সমাবেশ ও মিছিল করেছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। একই সঙ্গে তারা বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তারকৃত শ্রমিকনেতাদের মুক্তির দাবিও জানায়।

মে দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।

সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জুলফিকার আলী, আইনবিষয়ক সম্পাদক বিমল চন্দ্র সাহা, নির্বাহী সদস্য আফজাল হোসেন, নির্বাহী সদস্য ও বোম্বে সুইটস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রতন মিয়া প্রমুখ।

সমাবেশে নেতারা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন করার চেষ্টার অপরাধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দিয়ে গার্মেন্টস উইংয়ের সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, রবিনটেক্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তারসহ ৭ জনকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে এবং রিকশা শ্রমিকদের রুটি–রুজির আন্দোলনে সংহতি জানানোর অপরাধে চট্টগ্রামে রিকশা সংগ্রাম পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি আল কাদেরি জয়, মিরাজ উদ্দিন ও রোকন উদ্দিনকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। অথচ সরকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, তারা শ্রমক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শ্রমমান বাস্তবায়ন করবে।

এ সময় নেতারা শ্রম সম্পর্ক উন্নয়নে সরকারের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত হচ্ছে কি না, তা জানতে চান। তাঁরা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করার অধিকার চর্চায় বাধা দেওয়া বন্ধ না হলে, শ্রমিকের ওপর নিপীড়ন বন্ধ না হলে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র পরিচালনা বা বৈষম্য নিরসনের প্রতিশ্রুতি শ্রমজীবী মানুষের কাছে প্রতারণা হিসেবে পরিগণিত হবে।

মে দিবসের ইতিহাস তুলে ধরে নেতারা আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও দেশের শ্রমজীবী মানুষের ৮৫ শতাংশ শ্রম আইনের সুরক্ষার বাইরে। শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের শ্রম খাতের দুর্দশার যে ভয়ানক চিত্র ফুটে উঠেছে, তা প্রমাণ করে স্বাধীনতা–পরবতী প্রতিটি সরকার শ্রম শোষণকে তীব্র থেকে তীব্রতর করার ক্ষেত্র তৈরি করেছে।

এ সময় গ্রেপ্তার সব শ্রমিকের মুক্তি, শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধ এবং মে দিবসের প্রকৃত চেতনায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নেতারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ