লঞ্চে তাস খেলায় বাধা দেওয়ায় হামলা, আহত ১০
Published: 17th, February 2025 GMT
তাস খেলায় বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে ঢাকা-বগা-পটুয়াখালীগামী যাত্রীবাহী লঞ্চে হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে বাউফলের বগা লঞ্চঘাটে ঘটনাটি ঘটে।
বাউফল থানার ওসি কামাল হোসেন বলেন, “বিষয়টি আমরা শুনেছি। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ৮টায় সুন্দরবন-১৪ নামে একটি যাত্রীবাহী দোতালা লঞ্চ বগা ঘাটে এসে পৌঁছায়। এসময় রুহুল আমিনের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন লঞ্চে উঠে স্টাফ ও যাত্রীদের ওপর হামলা করে। এতে লঞ্চের লস্কর ইব্রাহিম (৩০), রহমান (২৮), ফিরোজ (৩০) লঞ্চযাত্রী সুজন (২০), রাতুল (১৭) ও ইশরাফিলসহ (১৮) অন্তত ১০ জন আহত হন।
আরো পড়ুন:
কুষ্টিয়ায় সাংবাদিকের ওপর সন্ত্রাসীদের হামলা, ওসি প্রত্যাহার
কুমিল্লায় এসি ল্যান্ডের উপর হামলা, ২ কর্মকর্তা আহত
লঞ্চের সুপারভাইজার মো.
সুজন (২০) নামে তাবলিগ জামাতের এক সাথি জানান, তাদের গ্রুপে ৪৫ জন সদস্য ছিলেন। তারা সাদপন্থিদের ইজতেমা থেকে বাড়ি ফেরার জন্য সুন্দরবন ১৪ লঞ্চে ওঠেন। তাদের বাড়ি বাউফলের কনকদিয়া বাজার এলাকায়। রাতে তাস খেলা নিয়ে তাদের গ্রুপের আমির মো. ডালিমের সঙ্গে চার যুবকের বাকবিতাণ্ডা হয়। এ ঘটনার জেরে সকালে রুহুল ও ২০-২৫ জন লঞ্চে উঠে তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় লঞ্চ স্টাফরা বাধা দিলে তাদের ওপরেও হামলা চালানো হয়।
ঢাকা/ইমরান/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আহত দ র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’
পূর্ব সুন্দরবনের নিসর্গঘেরা অভয়ারণ্যে গড়ে তোলা হয়েছে নতুন পর্যটন কেন্দ্র ‘আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার’। সবুজ ম্যানগ্রোভ বনের বুক চিরে, নদীর নোনাজলে ভেসে, প্রকৃতির নীরব সৌন্দর্যে ঘেরা এই কেন্দ্রটি চলতি নভেম্বর মাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা।
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আওতাধীন আলী বান্দা এরইমধ্যে ভ্রমণপিপাসুদের দৃষ্টি কেড়েছে। শরণখোলা রেঞ্জ অফিস থেকে ট্রলারযোগে মাত্র ৪০ মিনিটের নৌপথ পেরিয়ে পৌঁছানো যায় সেখানে।
যাত্রাপথে চোখে পড়ে বনের গভীর সবুজ গাছগাছালি, ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে যাওয়া পাখি, কচুরিপানায় ঢাকা জলাশয় এবং সুন্দরী-গেওয়া গাছের সারি যা পর্যটকদের মোহিত করে।
বন বিভাগ জানিয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টারের অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু হয়। এখানে তৈরি হয়েছে ছয়তলা ভবনের সমান উচ্চতার একটি ওয়াচ টাওয়ার, যেখান থেকে সুন্দরবনের বিস্তৃত সবুজাভ দৃশ্য চোখে ধরা পড়ে।
রয়েছে দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ফুট ট্রেইল (ওয়াকওয়ে)। পথের দুই পাশে ঘন বনের মাঝে হাঁটলে দেখা যায় প্রকৃতির আসল রূপ। এছাড়া রয়েছে মিষ্টি পানির পুকুর, হরিণ রাখার সেড, জেটি, বিশ্রামাগার, সুভেনিয়ার শপ এবং পর্যটকদের নিরাপত্তায় বনরক্ষী ও স্থানীয় গাইডের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান।
ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আলীবান্দা বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর মানুষের জন্য সবচেয়ে সহজগম্য স্পট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কম সময় ও কম ঝুঁকিতে সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে এখানে। স্থানীয় পর্যটকরা এরইমধ্যে আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা শাহিন বলেন, “আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার চালু হলে স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে স্থানীয় গাইড, নৌযানচালক, হোটেল ব্যবসায়ী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কর্মসংস্থান বাড়বে। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব পর্যটনের মাধ্যমে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সচেতনতা বাড়বে।”
তবে পর্যটনকেন্দ্রে প্রবেশ ফি নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। আলীবান্দায় প্রবেশের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪৫ টাকা।
শরণখোলা ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল বয়াতী বলেন, ‘‘আলীবান্দায় প্রবেশ ফি ৩৪৫ টাকা, অথচ একই বনের করমজল পর্যটন পয়েন্টে ফি মাত্র ৪৬ টাকা। অনেকেই আলীবান্দায় যেতে আগ্রহী, কিন্তু ফি বেশি হওয়ায় নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।’’
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “আলীবান্দা এখন প্রায় প্রস্তুত। চলতি মাসেই এখানে হরিণ আনা হবে। বর্তমানে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে স্পটটি। যেহেতু এটি ২০১৭ সালে ঘোষণা করা অভয়ারণ্য এলাকার অন্তর্ভুক্ত, তাই সাধারণ বনাঞ্চলের তুলনায় কিছু বিধিনিষেধ ও প্রবেশ ফি বেশি রাখা হয়েছে। তবে পর্যটকদের দাবির বিষয়টি আমরা সরকারের কাছে জানাব।’’
ঢাকা/শহিদুল/এস