ব্যাংকিং সুবিধা না পাওয়া মানুষের ভাগ্য বদলাবে কি
Published: 17th, February 2025 GMT
দেশে জনসংখ্যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এখনো আনুষ্ঠানিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার বাইরে রয়ে গেছে। এ অবস্থায় আর্থিক অন্তর্ভুক্তি সমাজের বা রাষ্ট্রের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য।
কারণ, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি হলো কোনো ব্যক্তি এবং ব্যবসার নির্দিষ্ট পরিচয়, আয়ের স্তর বা ভৌগোলিক অবস্থান নির্বিশেষে একটি কার্যকর, সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী মূল্যে আর্থিক সেবা এবং পরিষেবাগুলোতে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার একটি সুচিন্তিত প্রক্রিয়া।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে বিগত সরকারের দীর্ঘ শাসনের অবসানের পরপরই দেশের সামগ্রিক খাতে পরিবর্তনের দাবি ওঠে। বিশেষ করে ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতের ব্যাপক সংস্কার এবং পরিবর্তনের দাবি ছিল সবার ওপরে।
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নেতৃত্বের পরিবর্তনসহ অর্থ পাচার রোধে বেশ কিছু ত্বরিত পদক্ষেপ হাতে নেয়।
এখনো বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশাল পরিবর্তনের আশা করা হচ্ছে, যেখানে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কার্যক্রমের গুরুত্ব বেশ জোরালো হয়ে উঠেছে।
বিষয়টি নিয়ে এখনো যথেষ্ট মাত্রায় জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
আরও পড়ুনব্যাংকিং খাত ঘুরে দাঁড়াতে পারে কী করে১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের দারিদ্র্য হ্রাসের মতো একটি বিরাট ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছে।
তা সত্ত্বেও বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার মধ্যে এখনো তিন কোটি মানুষ আর্থিক ব্যবস্থা থেকে বাদ পড়ে আছে।
আর বিশ্বের মোট ব্যাংকিং সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সংখ্যা প্রায় ১৪০ কোটি। বাংলাদেশের ব্যাংকিং সুবিধাবঞ্চিত মানুষ, বিশেষ করে যাঁরা গ্রামীণ এলাকায় থাকেন, তাঁরা এখনো তাঁদের সঞ্চয় অ্যাকাউন্ট, ঋণ, বিমা সুবিধা ও আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থার মতো মৌলিক আর্থিক পরিষেবাগুলো গ্রহণ করার ক্ষেত্রে নানাবিধ প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছেন।
বিশ্বব্যাংকের মতে, বাংলাদেশের প্রায় ৪৫ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি এখনো ব্যাংকিং সুবিধাবঞ্চিত।
এই বিশাল জনসংখ্যাকে প্রায়ই অনানুষ্ঠানিক আর্থিক চ্যানেলের ওপর নির্ভর করতে হয়, যা অনেকটা অবিশ্বাস্য, অনিরাপদ ও ব্যয়বহুলও বটে।
সুতরাং আর্থিক অন্তর্ভুক্তি দেশের মানুষের জীবন-জীবিকার মান উন্নয়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন তথা দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য একটি অপরিহার্য হাতিয়ার।
এটি অসংখ্য মানুষের, বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায়ন ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তৈরির ব্যাপক সম্ভাবনা রাখে।
কিন্তু এখনো বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে ব্যাংকিং সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে আনুষ্ঠানিক আর্থিক পরিষেবার আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না।
আরও পড়ুনবাংলাদেশ ব্যাংককে কথা নয় কাজ দেখাতে হবে২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৬৮ দশমিক৩৪ শতাংশের বেশি মানুষ প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাস করেন।
এ অঞ্চলগুলোতে ব্যাংকের শাখা, উপশাখা ও এজেন্ট আউটলেটের অভাবের কারণে অনেক মানুষ ব্যাংকিং পরিষেবা গ্রহণ করতে পারেন না।
অনেক সময় নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ ও যোগাযোগব্যবস্থার অভাবে তাঁদের সমস্যাটিকে আরও বাড়িয়ে তোলে।
বর্তমানে বাংলাদেশের আর্থিক সাক্ষরতার হার মাত্র ২৮ শতাংশ, তার মানে প্রায় ৭২ শতাংশ মানুষ এখনো ব্যাংক, ব্যাংকিং প্রোডাক্ট বা সেগুলো কীভাবে ব্যবহার করতে হয়, এ সম্পর্কে পরিচিত নন।
আর্থিক সাক্ষরতার এই জ্ঞানের অভাব আনুষ্ঠানিক আর্থিক পরিষেবাগুলোকে ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনেককে অবিশ্বাস্য ও অনিশ্চয়তার লেনদেনের দিকে নিয়ে যায়। এর মাধ্যমে কারও জীবনকে আর্থিক ভয় ও উদ্বেগের দিকে ধাবিত করতে পারে।
এ ছাড়া দেশের প্রচলিত সামাজিক প্রথা ও লৈঙ্গিক বৈষম্যের কারণে বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকার নারীদের জন্য সংস্কৃতিগতভাবে সীমাবদ্ধতা, চলাফেরায় ধীরস্থিরতা এবং আর্থিক অক্ষমতার কারণে তাঁরা আনুষ্ঠানিক আর্থিক পরিষেবাগুলোকে গ্রহণ করতে পারেন না।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মোবাইল ব্যাংকিং ও ডিজিটাল আর্থিক পরিষেবার উত্থান বাংলাদেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি প্রচেষ্টায় বিপ্লব এনেছে।
দেশে মোবাইল ফোনের প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি, ডিজিটাল পেমেন্টের উদ্ভাবনের সঙ্গে মিলিত হয়ে গ্রামীণ এবং সুবিধাবঞ্চিত এলাকার মানুষদের জন্য ব্যাংক শাখার প্রয়োজন ছাড়াই আর্থিক পরিষেবা গ্রহণে করতে সক্ষম হচ্ছেন।
আরও পড়ুনআলোচিত ব্যাংকগুলোর ভবিষ্যৎ কী১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ডিজিটাল আর্থিক পরিষেবার প্রসারের কথা বলতে গেলে প্রথমে আসে বিকাশ, যা প্রায় ২ কোটি ১২ লাখ গ্রাহক ব্যবহার করেন এবং নগদ, যা প্রায় ৪৫ লাখ গ্রাহক ব্যবহার করেন।
উভয় প্ল্যাটফর্ম দুটি প্রমাণ করেছে, প্রযুক্তি কীভাবে ব্যাংকিং সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে আর্থিক সেবা প্রদানের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।
এ প্ল্যাটফর্মগুলোর মাধ্যমে গ্রাহক মোবাইল ফোন ব্যবহার করে খুব সহজে অর্থ প্রেরণ, অর্থ গ্রহণ, বিল পরিশোধ, সঞ্চয় ও ডিজিটাল ঋণ গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছেন।
বাংলাদেশ সরকার তার জাতীয় উন্নয়ন কর্মসূচিতে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির গুরুত্ব স্বীকার করেছে।
দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিক অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতীয় লক্ষ্য অর্জনে অবদান রাখার প্রয়াসে আর্থিক নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করার জন্য সুবিধাবঞ্চিত অঞ্চল ও ব্যাংকিং সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছানোর জন্য, আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য, পূর্বের সুবিধাবঞ্চিতদের ক্ষেত্রে সুযোগ উন্মুক্ত করার জন্য, আর্থিক প্রোডাক্টের জন্য গ্রাহকের ভিত্তি সম্প্রসারণ করার জন্য, দেশের একটি প্রাণবন্ত এবং স্থিতিশীল আর্থিক খাত গঠনে অবদান রাখার জন্য বেশ কয়েকটি উদ্যোগ চালু করেছে।
এসব উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে মোবাইল ব্যাংকিং, এজেন্ট ব্যাংকিং, উপশাখা ও ক্ষুদ্রঋণ খোলার জন্য নিয়মকানুন তৈরি করা, সেই সঙ্গে আর্থিক সাক্ষরতা কর্মসূচি এবং স্কুল ব্যাংকিং ও কৃষি ব্যাংকিং উদ্যোগসহ নো-ফ্রিল অ্যাকাউন্ট খোলার কর্মসূচি চালু করা ইত্যাদি।
পাশাপাশি সরকার দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে জড়িত হওয়ার জন্য উৎসাহিত করে থাকে, যাতে ব্যাংকগুলো সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে সেবা প্রদানের জন্য সরকারঘোষিত ভর্তুকি এবং প্রণোদনা প্রদানের কাজ চালিয়ে যায়।
অধিকন্তু সরকার আমাদের দেশে বৈদেশিক মুদ্রার প্রধান উৎস অর্থাৎ অভিবাসীদের আনুষ্ঠানিক ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করার জন্য বিভিন্ন প্রণোদনা প্রদান করছে।
মোদ্দাকথা সরকার আর্থিক অন্তর্ভুক্তির জন্য যথেষ্ট আন্তরিক, তবে লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে এখনো বহু পথ পাড়ি দিতে হবে।
বাংলাদেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে ক্ষুদ্রঋণ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অবদানকারী। গ্রামীণ ব্যাংক ও ব্র্যাকের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে।
এর ফলে লাখ লাখ মানুষ, বিশেষ করে নারীরা নিজ উদ্যোগে ছোট ছোট ব্যবসা শুরু করতে বা তাঁদের জীবিকা উন্নত করতে এবং দারিদ্র্যের চক্র থেকে মুক্তি পেতে সক্ষম হয়েছেন।
আরও পড়ুনব্যাংকিং খাতের যেসব সমস্যার জরুরি সমাধান প্রয়োজন০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪২০২৩ সালের ৩০ জুনের প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশে প্রায় ৪ কোটি ৮৬ লাখ মানুষ ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের সদস্য ছিলেন, যাঁর মধ্যে ৩ কোটি ১৫ লাখই ক্ষুদ্রঋণগ্রহীতা।
তবু ক্ষুদ্রঋণের সুদের হার ও ঋণচক্রের জন্যও কারও কারও দ্বারা সমালোচিত হয়েছে।
তবে বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হলো কিছু সমালোচনাকে উপেক্ষা করে বা আমলে নিয়ে আরও উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে সারা দেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির জন্য ক্ষুদ্রঋণ আরও টেকসই এবং সহায়ক হাতিয়ার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে, তা নিশ্চিত করা।
দেশের প্রতিটি কোণে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির সুবিধা পৌঁছানোর জন্য ডিজিটাল অবকাঠামোতে আরও বিনিয়োগ করা প্রয়োজন।
প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ ও মোবাইলের নেটওয়ার্ক কাভারেজের সম্প্রসারণ ডিজিটাল আর্থিক পরিষেবাগুলোকে সহজতর করতে এবং সব মানুষের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।
ডিজিটালাইজেশনের বাইরেও আর্থিক অন্তর্ভুক্তির সাফল্যের জন্য আর্থিক সাক্ষরতা বৃদ্ধি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় যেখানকার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬৮ শতাংশ নারী।
এ ছাড়া নারী-পুরুষের আর্থিক বৈষম্য দূর করতে হলে সমগ্র দেশে নারীদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে, যাঁরা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫০ দশমিক ৮০ শতাংশ।
দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জনশক্তি তরুণ-তরুণীদের সম্পৃক্ত করতে হবে, যাঁরা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩৪ শতাংশ এবং বর্তমানে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২৭ লাখ ৫০ হাজার, যাঁদেরকেও আর্থিক সাক্ষরতা কর্মসূচির মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক আর্থিক ব্যবস্থায় যুক্ত হতে উৎসাহিত করতে হবে।
ইতিমধ্যে ডিজিটাল আর্থিক পরিষেবা, মোবাইল ব্যাংকিং ও ক্ষুদ্রঋণ আর্থিক বৈষম্য দূর করার ক্ষেত্রে শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য তথা ব্যাংকিং সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য আর্থিক অন্তর্ভুক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। এ ক্ষেত্রে সরকার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও প্রযুক্তি উদ্যোক্তাদের সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে বাংলাদেশের ব্যাংকিং সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করা যেতে পারে।একই সঙ্গে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমন সব প্রোডাক্ট উদ্ভাবন করতে হবে, যা ব্যাংকিং সুবিধার বাইরে থাকা জনগোষ্ঠীর চাহিদা পূরণে সহায়ক হয়।
নিম্ন আয়ের ব্যক্তিদের জন্য তৈরি আকর্ষণীয় সুবিধার সঞ্চয় অ্যাকাউন্ট, ক্ষুদ্রঋণ সুবিধা এবং বিমা পণ্যগুলোর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি দেশজুড়ে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধিকে অনেক এগিয়ে নিয়ে যাবে।
অন্যদিকে আর্থিক ব্যবস্থায় জেন্ডার সংবেদনশীল নীতি ও উদ্যোগগুলোকে যথাযথভাবে প্রচার করাটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অর্থনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হলে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি খাত আরও টেকসই ও সুনিয়ন্ত্রিত হবে।
ইতিমধ্যে ডিজিটাল আর্থিক পরিষেবা, মোবাইল ব্যাংকিং ও ক্ষুদ্রঋণ আর্থিক বৈষম্য দূর করার ক্ষেত্রে শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।
বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য তথা ব্যাংকিং সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য আর্থিক অন্তর্ভুক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যেটি বলার অপেক্ষা রাখে না।
এ ক্ষেত্রে সরকার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও প্রযুক্তি উদ্যোক্তাদের সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে বাংলাদেশের ব্যাংকিং সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করা যেতে পারে।
সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বাধাগুলো মোকাবিলা করে বাংলাদেশ আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থিক ব্যবস্থা তৈরি করতে পারে, যা সব নাগরিককে ক্ষমতায়ন করে এবং টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করবে।
এম এম মাহবুব হাসান, বাংকার ও উন্নয়ন গবেষক
ই-মেইল: [email protected]
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ষ ঠ ন ক আর থ ক আর থ ক ব যবস থ ম ট জনস খ য র আর থ ক প র ন র জন য র র জন য ও আর থ ক র জন য ব ব শ ষ কর য দ র কর গ র হক সরক র গ রহণ ত করত র করত
এছাড়াও পড়ুন:
সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না, মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন: সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, 'আমাদের একটা অভ্যাস হয়ে গেছে একটা নেতিবাচক সংবাদ দেখলেই যাচাই-বাছাই না করে শেয়ার করে দেওয়া হয়। অত্যন্ত ভিত্তিহীন সংবাদও আমরা শেয়ার করে দেই।'
সিইসি বলেন, 'দয়া করে সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না। এই মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন। তথ্যটা যেন আগে যাচাই করে তারপরে শেয়ার করেন।'
আজ সোমবার রাজধানীর ভাটারায় আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নে (এজিবি) এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন সিইসি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভুয়া সংবাদের প্রচার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপপ্রয়োগ রোধে করণীয় সম্পর্কে তিনি এসব কথা বলেন।
থানা আনসার কোম্পানি/প্লাটুন সদস্যদের আনসার মৌলিক প্রশিক্ষণের (৪র্থ ধাপ) সমাপনী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিইসি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো সংবাদ দেখা মাত্রই নাগরিকদের যাচাইবাছাই করতে আহ্বান জানান সিইসি। নিশ্চিত হওয়ার আগে শেয়ার না করতে বলেন তিনি।
জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে আনসার ভিডিপির ভূমিকাকে মূল শক্তি বলে উল্লেখ করেন সিইসি। তিনি বলেন, 'এনারাই অধিক সংখ্যায় নিয়োজিত থাকেন। এবং আমাদের হিসেব করতে গেলে প্রথম এদেরকেই হিসেব করতে হয় যে, কতজন আনসার ভিডিপি সদস্য আমরা মোতায়েন করতে পারব। মূল কাজটা আঞ্জাম (সম্পাদন) দিতে হয় কিন্তু আনসার এবং ভিডিপির সদস্যদের।'
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। নির্বাচনকালীন জনগণের নিরাপত্তা, ভোট কেন্দ্রের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা এবং সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণে আনসার বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে বলে জানান তিনি। নির্বাচনে দেশজুড়ে প্রায় ৬ লাখ আনসার ও ভিডিপি সদস্য দায়িত্বপালন করবেন বলেন মহাপরিচালক।
অনুষ্ঠানে মহড়ায় ঢাকা মহানগর আনসারের চারটি জোনের অধীন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৩২০ জন আনসার ও ভিডিপি সদস্য অংশ নেন। আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা টহল, দায়িত্ব বণ্টন ও জরুরি প্রতিক্রিয়া অনুশীলনে অংশ নেন।
মহড়ায় ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জামাদি নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া, ভোটারদের শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে ভোট প্রদানে সহায়তা, জাল ভোট প্রতিরোধ, প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা এবং সেনা, বিজিবি, র্যাব ও পুলিশের সঙ্গে দ্রুত সমন্বয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন জোনের অধিনায়ক এবং প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।