সিদ্ধিরগঞ্জে আতত্বাকওয়া সমাজ কল্যানের উদ্যোগে “সমাজ পরিবর্তনে যুব সমাজের ভূমিকা ও মাহে রমজানের প্রস্তুতি” বিষয়ক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। বোববার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় আদমজী কদমতলী এলাকায় হাজী আবেদ আলী আইডিয়াল হাই স্কুল প্রাঙ্গণে আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।

আতত্বাকওয়া সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মো. মোশারেফ হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে আদমজী হাই স্কুলের সাবেক সিনিয়র শিক্ষক মো.

আইয়ুব হোসেন বলেন, বিশ্বায়নের যে কয়টি উপসর্গ ঘৃণিত ও কলঙ্কিত তার মধ্যে অন্যতম সব অপরাধের জনক মাদক। এটি চুরি, ডাকাতি, খুন ও যৌন হয়রানির মতো অপরাধের নেপথ্যের অন্যতম কারণ।

ছিনতাই কিংবা খুনের ঘটনা মাদকাসক্ত লোকের মাধ্যমে ঘটছে এমন নজির বহু রয়েছে। মাদক নির্মূল না করতে পারলে, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যাবে। কেননা অধিকাংশ অপরাধমূলক কর্মকান্ডের পেছনে রয়েছে মাদকের কালো থাবা। 

এক সমীক্ষায় জানা যায়, শতকরা ৮০ ভাগ মাদকাসক্তের বয়স ১৬ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। তার মানে বোঝাই যাচ্ছে, আমাদের মূল চালিকাশক্তি তরুণদের একটি বিরাট অংশ মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে যা দেশের প্রগতি ও সমৃদ্ধির অন্তরায়। 

তিনি আতত্বাকওয়া সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মোঃ মোশারেফ হোসেনের প্রশংসা করে আরো বলেন এধরনে সামাজি সংগঠন গুলো এগিয়ে আসতে হবে আর সমাজটাকে ভালো রাখতে হলে সমাজের ভালো মানুষ গুলো এগিয়ে আসতে হবে।

আতত্বাকওয়া সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মো. মোশারেফ হোসেন বলেন, সামাজিক উন্নয়ন হলো সমাজের জীবনযাত্রার মানের পরিবর্তন। অর্থাৎ জীবনমান, শিক্ষার হার এবং শ্রমিকের স্তরের উন্নতি করা, সহজ ভাষায় সামাজিক উন্নয়ন হলো সমাজের প্রতিটি ব্যক্তির কল্যানকে উন্নত করা, জ্ঞানকে কাজে লাগাতে হবে, আল্লাহ তাআলা সকলকেই জ্ঞান দান করে, ঐ জায়গা থেকে চেষ্টা, পরিশ্রম সৃজনশীলতাই, সমাজকে জাগ্রত করতে পারে। 

আজকের যুব সমাজ আগামী দিনের ভাবিষ্যৎ যে সমাজ আজ উন্নত তা শুধু যুবসমাজ এগিয়ে আসার জন্যই তা হয়েছে, তাই আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। দেখুন, আমাদের প্রত্যেকের উচিৎ সকলের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়ানো এতে করে সমাজের প্রত্যেকটি ব্যক্তিই তার গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে, একে অপরের প্রতি দায়িত্ব পালন করা সবই আল্লাহর কাছে মূল্যবান আমাদের সকলকেই আল্লাহ তাআলা কবুল করুক ।

এসময় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আদমজী সোনামিয়া বাজার শাহী জামে মসজিদের খতিব হযরত মাওলানা মুফতি আব্দুল আজিজ, ও প্রধান জামে মসজিদের খতিব হযরত মাওলানা মুফতি  মাকসুদুর রহমান, প্রধান জামে মসজিদের সাধারন সম্পাদক মো. শামসুল হক, আই.ই.টি গভমেন্ট উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো. শফিকুল ইমলাম, এম,ডব্লিউ উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো. আবুল কাশেম তালুকদগার, নিয়াজ, মাহম্মুদ হাসান, জাহিদুল ইসলাম, নাদিম সিকদার প্রমূখ ।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ আম দ র অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

সাদপন্থীদের ইজতেমা আয়োজন করতে না দেওয়ার দাবি

টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে মাওলানা সাদ কান্ধলভী অনুসারীদের (সাদপন্থী) ইজতেমা আয়োজন করতে না দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাবলিগ জামাতের শুরায়ে নেজাম (জুবায়েরপন্থী) অনুসারীরা। পাশাপাশি তাঁরা সরকারের প্রস্তাবে রাজি হয়ে আগামী বছরের মার্চ মাসে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা করার কথাও বলেছেন। গত আয়োজনে ইজতেমা মাঠে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও সাজা নিশ্চিতের দাবিও জানান তাঁরা।

আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। ‘হযরত ওলামায়ে কেরাম ও দাওয়াত ও তাবলিগের সাথীবৃন্দের’ উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।

এর আগে গত রোববার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনের পর বিশ্ব ইজতেমা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তাবলিগের শুরায়ে নেজামের সাথী মুফতি আমানুল হক বলেন, ‘কোরআন ও হাদিসের কথা যারা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে, তাদের ইসলামি দাওয়াতের এই ময়দানে জায়গা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। রাসুল (সা.)-এর তরিকা, সুন্নাহ ও হাদিসের অনুসরণে যারা তাবলিগি কার্যক্রম পরিচালনা করে, কেবল তারাই ইজতেমা করার অধিকার রাখে।’

মুফতি আমানুল হক আরও বলেন, ‘সরকারের ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে জারি করা প্রজ্ঞাপনে সাদপন্থীরা শেষবারের মতো টঙ্গী ময়দানে ইজতেমা করার অনুমতি পেয়েছিল। সেই প্রজ্ঞাপনে তাদের স্বাক্ষরও রয়েছে। সরকার তখনই বুঝেছিল—একই মাঠে দুই পক্ষের ইজতেমা আয়োজন দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।’

২০২৪ সালের ডিসেম্বরের ইজতেমা মাঠে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে মুফতি আমানুল হক বলেন, ‘গত বছরের ১৮ ডিসেম্বরের রাতে সাদপন্থীদের অনুসারীরা অতর্কিত হামলা চালায়। তাদের বাংলাদেশি নেতা ওয়াসিফ সাহেবের চিঠিতে উল্লেখ ছিল, “যুগটা ব্যতিক্রমী, সবাই প্রস্তুতি নিয়ে আসবে”—এই প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই তারা হামলার পরিকল্পনা করেছিল। ঘুমন্ত মুসল্লিদের ওপর টর্চলাইট নিয়ে হামলা চালানো হয়, যা একতরফা সন্ত্রাসী কার্যক্রম ছিল।’ তিনি দাবি করেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠকেও প্রমাণিত হয়েছে, ‘এ হামলা একতরফাভাবে সাদপন্থীদের পক্ষ থেকেই হয়েছিল।’

মুফতি কেফায়েত উল্লাহ আজহারী তাঁর লিখিত বক্তব্যে বলেন, কিছু স্বার্থান্বেষী ও ইসলামবিরোধী মহলের প্ররোচনায় তাবলিগ জামাতে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের মাওলানা সাদ সাহেবের অনুসারীরা বেআইনি পথে টঙ্গী ইজতেমা মাঠ ও কাকরাইল মসজিদে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এমনকি তাঁরা সরকারকে বিব্রত করতে ‘যমুনা ভবন ঘেরাও’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর বিশৃঙ্খলাকারীদের কাকরাইল মসজিদে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয় এবং শুরায়ে নেজামপন্থীদের কাকরাইলে দাওয়াত কার্যক্রম চালানোর অনুমতি দেয় বলে জানান মুফতি কেফায়েত উল্লাহ আজহারী। তিনি বলেন, ২০২৫ সালের ৪ ফেব্রুয়ারির ৬৩ নম্বর স্মারকে বলা হয়, সাদপন্থীরা শেষবারের মতো ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে টঙ্গীতে ইজতেমা করতে পারবে, এরপর আর নয়। তারা স্বাক্ষর দিয়ে সেই শর্ত মেনে নিয়েছিল।

শুরায়ে নেজামপন্থীরা বলেন, ‘আমরা সরকারের সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করছি। আগামী বছরের মার্চে ইজতেমা আয়োজনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করা হবে।’

সংবাদ সম্মেলন থেকে সরকারের কাছে ৪ দফা দাবি পেশ করেন তাবলিগ জামাতের শুরায়ে নেজাম (জুবায়েরপন্থী) অনুসারীরা। তাঁদের দাবিগুলো হলো ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ইজতেমার তারিখ ঘোষণা, টঙ্গী ইজতেমা মাঠকে অস্থায়ীভাবে ‘কেপিআই’ হিসেবে ঘোষণা, বিদেশি মেহমানদের ভিসা সহজীকরণের পরিপত্র নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে প্রকাশ ও গত বছরের ইজতেমা মাঠে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা শাহরিয়ার মাহমুদ, মতিন উদ্দিন আনোয়ার, রুহুল আমিন এবং তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের (শুরায়ে নেজাম) মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ