বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারীদের জন্য ২০২৩ সালে প্রগতি স্কিম চালু করেছে সরকার। তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের মধ্যে এ স্কিমে খুব বেশি সাড়া নেই। কারণ হিসেবে ৬১ দশমিক ৩ শতাংশ শ্রমিক বলেছেন, চাকরির নিরাপত্তা না থাকায় স্কিমে অংশগ্রহণে তারা আগ্রহী নন। ৬৪ দশমিক ৭ শতাংশ শ্রমিক জানিয়েছেন, মাসিক চাঁদা দেওয়ার আর্থিক সক্ষমতা নেই তাদের। ৭৫ দশমিক ৩ শতাংশ শ্রমিক এ স্কিম সম্পর্কে জানেন না। 
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিসের (বিলস) এক জরিপে এ চিত্র উঠে এসেছে। নেদারল্যান্ডসভিত্তিক সংগঠন মন্ডিয়াল এফএনভি এতে সহায়তা দিয়েছে। গতকাল সোমবার এ জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এ উপলক্ষে রাজধানীর শ্রম ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মেদ। 
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সাবেক শ্রম সচিব ড.

মাহফুজুল হক, জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিন খান, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সাকিউন নাহার, আইএলও ঢাকা অফিসের চিফ টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজর সৈয়দ সাদ হোসেন গিলানি, সলিডারিটি সেন্টার বাংলাদেশ অফিসের কান্ট্রি প্রোগ্রাম ডিরেক্টর এ কে এম নাসিম, বিলস নির্বাহী পরিষদের সম্পাদক শাকিল আক্তার চৌধুরী, বিলস পরিচালক নাজমা ইয়াসমিন প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন বিলসের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন। 
প্রসঙ্গত, সরকারের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় বেসরকারি খাতের শ্রমিকদের জন্য প্রগতি স্কিম চালু করে সরকার। এ স্কিমে মাসিক চাঁদার ৫০ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের মালিক এবং বাকি ৫০ শতাংশ শ্রমিক-কর্মচারীরা দেওয়ার কথা। 
বৈঠকে জরিপের ফল তুলে ধরেন বিলসের গবেষণা বিভাগের উপপরিচালক মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রগতি স্কিমের সর্বনিম্ন মাসিক চাঁদা তুলনামূলকভাবে বেশি। ১০ বছরের জন্য অবিরাম প্রিমিয়াম দিতে হয়, সুরক্ষা স্কিমের অধীনে অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের কোনো প্রত্যাহার বা ঋণ সুবিধা নেই, চাকরি পরিবর্তনের অনুমতি নেই। অথচ মাত্র ৮ শতাংশ শ্রমিক এক কারখানায় ১০ বছরের বেশি কাজ করছেন। এ ছাড়া শ্রমিকের দেওয়া কিস্তির মেয়াদ শেষে যে লভ্যাংশ দেওয়ার কথা, তা ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে দেওয়া লভ্যাংশের চেয়ে কম। 
এ বাস্তবতায় গবেষণা প্রতিবেদনে কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে স্কিমে মাসিক চাঁদা বা কিস্তির পরিমাণ কমিয়ে আনা। স্কিমে প্রতিষ্ঠান ও মালিকের অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক করা। সরকার স্কিমে অংশগ্রহণ বাড়াতে ভর্তুকির ব্যবস্থা করতে পারে। এ ক্ষেত্রে একজন শ্রমিক যে পরিমাণ কিস্তি দেবেন, সরকার থেকে তার সমপরিমাণ বা বেশি দেওয়া যেতে পারে। শ্রমিকদের সর্বজনীন পেনশন স্কিম সম্পর্কে আরও সচেতনতামূলক কার্যক্রম ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা দরকার। এসব সুপারিশ শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মেদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প নশন র ট ক র জন য সরক র প নশন

এছাড়াও পড়ুন:

গজারিয়ায় পরিবারকে জিম্মি করে অর্ধলক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার একটি বাড়িতে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে স্বর্ণালংকারসহ অর্ধলক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাতরা।

রবিবার (২ নভেম্বর) মধ্যরাত ৩টার দিকে উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বালুয়াকান্দি দক্ষিণপাড়া এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ফজলুল হকের বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে।

আরো পড়ুন:

ভাড়া নেওয়ার কথা বলে বাসায় ঢুকে গৃহবধূকে বেঁধে ডাকাতি

বগুড়ায় বৃদ্ধাকে খুন করে ডাকাতি: গ্রেপ্তার ৪, টাকা উদ্ধার

ভুক্তভোগী সাথী বেগম বলেন, “রাত ১টার দিকে একটি শব্দ পেয়ে আমার ঘুম ভাঙে। সে সময় বিষয়টি সেভাবে আমলে নেইনি। রাত ৩টার দিকে উঠে তাহাজ্জুতের নামাজ পড়তে বসলে জানালার গ্রিল কেটে বাসার ভেতরে প্রবেশ করে দুই যুবক। তারা প্রথমে আমাকে, পরে আমার ছেলে সাবিদকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। পরে তারা আমাদের বিল্ডিংয়ের চারটি ফ্ল্যাটের প্রত্যেকটিতে একের পর এক লুট করতে থাকে। প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে চলে এই ডাকাতি।” 

তিনি বলেন, “ডাকতরা নগদ ৩ লাখ টাকা, ৩২ ভরি স্বর্ণালংকার ও ৯টি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় তারা আমাদের সবাইকে একটি রুমে আটকে রেখে বাহির থেকে তালা লাগিয়ে যায়।”

প্রত্যক্ষদর্শী সাবিদ বলেন, “জানালার গ্রিল কেটে রুমের ভেতরে প্রবেশ করে দুইজন। পরে ডাকাত দলের আরো ২২-২৩ জন সদস্য বাসার ভেতরে প্রবেশ করে। বাইরে আরো কয়েকজন পাহারায় ছিল। ডাকাত দলের অধিকাংশ সদস্যের মুখে মাস্ক ও গামছা ছিল। তারা অস্ত্রের মুখে আমাকে জিম্মি করে আমাকে দিয়েই অন্যান্য ফ্ল্যাটের দরজা খোলান। আমার চোখের সামনে একের পর এক রুমে ডাকাতি হয়।”

অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ফজলুল হক বলেন, “আমার তিন ছেলে দেশের বাহিরে থাকে। তাদের পাঠানো প্রায় ৩২ ভরি স্বর্ণালংকার, কয়েকদিন আগে ব্যাংক থেকে তোলা নগদ ৩ লাখ টাকা ও ৯টি মোবাইল সেট লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাতরা। তারা আমাদের পরিবার সম্পর্কে অনেক কিছু জানত। কোন রুমে কী আছে, আমরা কবে ব্যাংক থেকে টাকা তুলেছি এমনকি বাসায় ওয়াইফাই বন্ধ সবই জানত। আমার ধারণা, স্থানীয় লোক এর সঙ্গে জড়িত। আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দেব।”

ভুক্তভোগীর প্রতিবেশী লাক মিয়া বলেন, “আমরা ভোর ৫টার দিকে বিষয়টি প্রথমে বুঝতে পারি। পরবর্তীতে বাইরে থেকে লক করা রুম খুলে আমরা আটকে থাকা পরিবারের সদস্যদের উদ্ধার করি। তারপর বিষয়টি জানাজানি হয়।”

রবিবার (৩ নভেম্বর) গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, “সকাল ৬টার দিকে দিকে আমি ৯৯৯ থেকে একটি কল পেয়ে এ বিষয়ে জানতে পারি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আমরা ঘটনাটি খতিয়ে দেখছি।”

ঢাকা/রতন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ