বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই, এটি শুধু উত্তরবঙ্গের মানুষের দাবি না। এটি সারা দেশের ১৮ কোটি মানুষের দাবি। আপনারা এই আন্দোলনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন, আমরা সেই উদ্যোগে সাড়া দিয়েছি। প্রয়োজনে সারা দেশে এই আন্দোলন ছড়িয়ে দেওয়া হবে।’

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নীলফামারীর ডালিয়া তিস্তা ব্যারাজ এলাকার হেলিপ্যাড মাঠে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচির অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

গতকাল সোমবার থেকে রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলায় তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে দুই দিনের আন্দোলন শুরু করে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন। কর্মসূচির অংশ হিসেবে তিস্তা নদীবেষ্টিত নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার ১১টি পয়েন্টে চলে সমাবেশ, পদযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আরও বলেন, ‘১৯৭৭ সালে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী ফারাক্কা অভিমুখে লংমার্চ করেছেন পানির জন্য। সেই দিন মওলানা ভাসানীর লংমার্চে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। প্রশাসনকে সহযোগিতা করার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু ফারাক্কার পানি কিন্তু এখনো আমরা পাই নাই।’

কর্মসূচিতে অংশ নিতে জেলা উপজেলাসহ বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মী সমর্থকেরা বাস, মিনিবাস, মোটরসাইকেল, কার, মাইক্রোবাসে সভামঞ্চে আসেন। সভা মঞ্চ ও এর আশপাশে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ ছিল। মঞ্চের পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে করা হয়েছে সারি সারি তাঁবু।

আজ বিকেলের সভায় নীলফামারী জেলা বিএনপির সভাপতি আলমগীর সরকারের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো.

জহুরুল আলম, সহসভাপতি মীর সেলিম ফারুক, আহমেদ সাঈদ চৌধুরী, মোক্তার হোসেন, নীলফামারী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আল মাসুদ চৌধুরী, ডিমলা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. মনোয়ার হোসেনসহ জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতারা।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র স

এছাড়াও পড়ুন:

২২ বছর পর চাকা ঘুরছে রাজশাহী টেক্সটাইলের

দীর্ঘ ২২ বছর পর আবার চাকা ঘুরতে যাচ্ছে রাজশাহী টেক্সটাইল মিলসের। এরই মধ্যে কারখানাটিতে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়েছে। তাতে কর্মসংস্থান হয়েছে এক হাজার জনের। সরকারি মালিকানাধীন বস্ত্রকলটি সরকারি-বেসরকারি যৌথ অংশীদারত্বে (পিপিপি) আবারও চালু করতে যাচ্ছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। আজ সোমবার প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কারখানাটি পরীক্ষামূলক চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পিপিপিতে নেওয়ার পর রাজশাহী টেক্সটাইল মিলসের নাম বদলে রাখা হয়েছে বরেন্দ্র রাজশাহী টেক্সটাইল। পরীক্ষামূলক উৎপাদন শেষে শিগগিরই কারখানাটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হবে। এটি পুরোদমে চালু হলে ১২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে। আজ দুপুরে রাজশাহী নগরের একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রাণ-আরএফএলের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আরএফএল গ্রুপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল, গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান মাল্টি লাইন ইন্ডাস্ট্রিজের নির্বাহী পরিচালক আনিসুর রহমান, গ্রুপের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (জনসংযোগ) তৌহিদুজ্জামান ও বরেন্দ্র রাজশাহী টেক্সটাইলের সহকারী মহাব্যবস্থাপক শরীফ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, রাজশাহীতে অবস্থিত সরকারি এই টেক্সটাইল মিলটি ২২ বছর ধরে বন্ধ ছিল। সম্প্রতি সরকারের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে এটি পিপিপিতে চালুর উদ্যোগ নেয় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। প্রায় ২৬ একর জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত এই কারখানাকে প্রাণ-আরএফএল উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ পরিবেশবান্ধব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে পরিণত করার উদ্যোগ নিয়েছে। কারখানাটিতে তৈরি হবে শতভাগ রপ্তানিমুখী পণ্য। এসব পণ্যের মধ্যে থাকবে বিভিন্ন ধরনের ব্যাগ, জুতা ও তৈরি পোশাক। দুই বছরের মধ্যে কারখানাটিতে ১২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরিতে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত বছরের অক্টোবরে চুক্তি স্বাক্ষরের পর ডিসেম্বরে কারখানার দায়িত্ব বুঝে নেয় গ্রুপটি। এরপর তিন মাসের মাথায় কারখানায় পরীক্ষামূলক উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। দুই বছরের মধ্যে কারখানাটি পুরোদমে চালু হবে।

সংবাদ সম্মেলনে কামরুজ্জামান কামাল বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য ঢাকাকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বের হয়ে তারা উত্তরবঙ্গে এই বৃহৎ শিল্প প্রকল্প শুরু করেছেন। এর মাধ্যমে রাজশাহীর হাজার হাজার মানুষ কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবেন এবং স্থানীয় অর্থনীতি গতিশীল হবে।

আনিসুর রহমান বলেন, কারখানায় বর্তমানে সীমিত পরিসরে জুতা ও ব্যাগ তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাতে রাজশাহীর প্রায় এক হাজার লোক কাজের সুযোগ পেয়েছেন। স্থানীয় কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এখানে একটি ‘স্কিলস ডেভেলপমেন্ট সেন্টার’ স্থাপন করা হবে। কারখানায় উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি হবে।

রাজশাহী টেক্সটাইল মিলসে কারখানা চালু করার প্রক্রিয়ায় কয়েক শ গাছ ও পুকুর ভরাটের বিষয়ে রাজশাহীতে সমালোচনা হয়। এ নিয়ে বিভিন্ন সংগঠন মানববন্ধনও করেছে। এ ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলনে জানতে চাইলে কামরুজ্জামান কামাল বলেন, গাছ কাটা নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। তাঁরা সঠিক উপায় অবলম্বন করেই এগুলো করেছেন। বন বিভাগকে চিঠি দিয়েছেন। তার বিপরীতে তিন হাজার নতুন গাছ লাগানো হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ২২ বছর পর চালু হচ্ছে রাজশাহী টেক্সটাইল মিল
  • ২২ বছর পর চাকা ঘুরছে রাজশাহী টেক্সটাইলের