ঝিনাইদহ-৩ (মহেশপুর-কোটচাঁদপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা মেজর জেনারেল (অব.) সালাউদ্দিন মিয়াজী মঙ্গলবার রাতে যশোর থেকে আটক হয়েছেন। এ সময় তাঁর শ্যালক জাকির হোসেনকে হেফাজতে নেয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। সন্ধ্যা থেকে মিয়াজী ও তার শ্যালককে মিয়াজীর মালিকানাধীন যশোর সদরের রুদ্রপুর গ্রামের শ্যামলছায়া পার্কে অবরুদ্ধ করে রাখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতা। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেন গ্রামবাসী। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে যায়। তারা উত্তেজিত ছাত্র জনতার সঙ্গে আলোচনার পর রাত সাড়ে ১১টায় মিয়াজী ও তার শ্যালককে হেফাজতে নেয়।

পুলিশ জানায়, তাদের যশোর ডিবি অফিসে নেওয়া হয়েছে। যশোর কোতয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী বাবুল হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে যৌথবাহিনী সালাহউদ্দিন মিয়াজী ও তাঁর শ্যালককে হেফাজতে নিয়েছে। তাদের ব্যাপারে পরবর্তী আইনী ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

মেজর জেনারেল (অব.

) সালাউদ্দিন মিয়াজী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে ঝিনাইদহ-৩ (মহেশপুর-কোটচাঁদপুর) আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি কর্মজীবনের দীর্ঘসময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামরিক সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর বিরুদ্ধে যশোর সদরের রুদ্রপুর-তেঁতুলিয়া ও ঝিনাইদহের মহেশপুরে কয়েকশ’ বিঘা জমি জবরদখলের অভিযোগ রয়েছে। 

স্থানীয় ও প্রত্যদর্শীরা জানায়, সালাহউদ্দিন মিয়াজী ও তাঁর শ্যালক দীর্ঘদিন তাঁদের মালিকানাধীন শ্যামলছায়া পার্কে আত্মগোপন করেছিলেন। এমন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শ্যামলছায়া পার্কের প্রধান ফটক ঘিরে ফেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির বেশকিছু নেতাকর্মীসহ স্থানীয় কিছু লোকজন। এ সময় তাঁরা ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনীর সদস্যসহ যৌথবাহিনীর সদস্যরা সেখানে যান এবং উত্তেজিত ছাত্রজনতাকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু উত্তেজিত জনতা সালাহউদ্দিন মিয়াজীকে গ্রেপ্তার না করলে ঘটনাস্থল ছাড়বেন না বলে আল্টিমেটাম দেন। একপর্যায়ে রাত পৌনে ১১টার দিকে সালাহউদ্দিন মিয়াজী ও তাঁর শ্যালককে হেফাজতে নেন যৌথবাহিনীর সদস্যরা। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, এখানে শেখ হাসিনার ডামি এমপি মিয়াজি আত্মগোপনে রয়েছে শুনে গ্রামবাসী ও ছাত্ররা পার্কে আসে। মিয়াজির লোকজন তাদের মারধর করে। খবর পেয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতারাসহ স্থানীয় গ্রামবাসী জড়ো হয়ে পার্ক ঘিরে স্লোগান দিতে থাকেন। পরে আমাদের সহযোগিতায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাঁদের আটক করে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আটক আওয় ম ল গ স ল হউদ দ ন ম য় জ র শ য লকক খবর প

এছাড়াও পড়ুন:

বেড়েছে মাছ, মুরগি ও ডিমের দাম

উৎপাদন ও বাজারে সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে ডিমের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, উৎপাদন কম হওয়ায় খামারিরা মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন এবং টানা বৃষ্টিপাতের জন্য সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।

শুক্রবার (১ আগস্ট) রাজধানীর নিউ মার্কেট, রায়েরবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সপ্তাহে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে প্রতি ডজন ১২০ টাকায়, এ সপ্তাহে তা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। সেই হিসেবে ডিমের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।

সবজির দাম স্বাভাবিক
এ সপ্তাহে বাজারে টমেটো ছাড়া অন্যান্য সবজির দাম স্বাভাবিক আছে। গত সপ্তাহে টমেটো বিক্রি হয়েছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়, এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। কাঁচামরিচ ২০০ টাকা, শশা ৭০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, গাজর (দেশি) ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, প্রতিটি পিস জালি কুমড়া ৫০ টাকা এবং লাউ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুদিবাজারে চালসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল আছে। তবে, পেঁয়াজের দাম সামান্য বেড়েছে। এ সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে ৫৫ টাকায় কেজিতে বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। রসুন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা এবং দেশি আদা ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বেড়েছে মাছ ও মুরগির দাম
বিক্রেতারা বলছেন, নদীতে পানি বৃদ্ধির জন্য জেলেদের জালে মাছ কম ধরা পড়ছে এবং উজানের পানিতে খামারিদের পুকুর ও ঘের তলিয়ে যাওয়ায় মাছের দাম বেড়েছে। বাজারে এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে থেকে ৩৫০ টাকায়। চাষের পাঙাসের কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা, মাঝারি সাইজ কৈ মাছ ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, দেশি শিং ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, বড় সাইজের পাবদা ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৬০০ টাকা এবং এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায়।

এ সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে  ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহ ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ঢাকা/রায়হান/রফিক 

সম্পর্কিত নিবন্ধ