ইয়াবা কাণ্ডে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহর পর এবার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি জাহাঙ্গীর আলমসহ সাত পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী। তিনি জানান, পৃথক দুটি আদেশে এই সাত পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, “ইয়াবা কাণ্ডের ঘটনায় ওসি জাহাঙ্গীর আলমসহ সংশ্লিষ্ট সদস্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান রয়েছে।”

প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন, ওসি জাহাঙ্গীর আলম, এসআই সমীর গুহ, কনস্টেবল জাহিদুল ইসলাম রানা, কনস্টেবল সাইফুল হাসান, কনস্টেবল মো.

রেজাউল করিম খান, কনস্টেবল মোহাম্মদ ইরফান ও কনস্টেবল (ড্রাইভার) রিয়াজ উদ্দিন।

এর আগে, একই ঘটনায় সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহকে প্রত্যাহার করে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে সংযুক্ত করা হয়।

এদিকে, ইয়াবা কাণ্ডের তদন্তে চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) ওয়াহিদুল হক চৌধুরী বর্তমানে কক্সবাজারে অবস্থান করছেন।

গত ১৭ ফেব্রুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকে ‘মিলেমিশে সাড়ে ৩ লাখ পিস বিক্রি: এসপির ইয়াবা কারবার’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, ৬ জানুয়ারি ভোরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কক্সবাজারের রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া থেকে ৪ লাখ ৯০ হাজার পিস ইয়াবাসহ একটি টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো জব্দ করা হয়। অভিযানে ওসি জাহাঙ্গীর আলম ও এসআই সমীর গুহের নেতৃত্বে একটি দল চারজনকে আটক করে। তবে ১ কোটি ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে তিন ইয়াবা কারবারিকে তাৎক্ষণিক ছেড়ে দেওয়া হয়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অভিযানের সময় ৩৫ কাট (৩ লাখ ৫০ হাজার পিস) ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছিল, যার মধ্যে পুলিশ আত্মসাৎ করে ৩ লাখ ৫০ হাজার পিস; যার বাজারমূল্য প্রায় ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। অভিযানে সহযোগী হিসেবে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের চাকরিচ্যুত দুই কনস্টেবলকে ১৩ কাট (১ লাখ ৩০ হাজার পিস) ইয়াবা দেওয়া হয়। এসপির অনুমতি পাওয়ার পর ডিবি ২ লাখ ২০ হাজার পিস ইয়াবা ৯৫ টাকা পিস দরে মোট ২ কোটি ৯ লাখ টাকায় বিক্রি করে।

এই ঘটনা গোপন রাখতে চকরিয়া থানার ডুলাহাজারায় মাত্র ১ লাখ ৪০ হাজার ইয়াবা জব্দ দেখানো হয়। ইয়াবা বহনকারী গাড়ির চালক ইসমাইলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে চকরিয়া থানায় মামলা করা হয়, যেখানে বাদী ছিলেন এসআই সমীর গুহ। তবে জব্দকৃত গাড়িটি থানায় না রেখে জেলা পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়া হয়।

এ ঘটনায় খবর প্রকাশের পর পুলিশের অভ্যন্তরে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয় এবং একের পর এক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করা হয়। পুলিশ সুপারের পর এবার ডিবির ওসিসহ সাত পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

ঢাকা/তারেকুর/টিপু

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ল শ সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে সুদের টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ২৫

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় সুদের টাকা লেনদেনের বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মধ্যে ২ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে ৪ পুলিশসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনা বাহিনী ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ ২৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে উভয়পক্ষের ৪৫ জনকে আটক করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

আহতরা হলেন- পারভেজ শেখ (২০), মানিক শেখ (৪১), সাদ্দাম শেখ (৩৫), শাকিল খান (২৫), ফয়সাল শেখ (২০), আবু সাঈদ শেখ (৪০), সজীব শেখ (১৯), রনি শেখ (৪০), সোহেল সুলতান (২৫), আফ্রিদি শেখ (১৯), মোস্তফা শেখ (৪০), নুরুন্নবী (১৮), আমানুল্লাহসহ (২৫) আরও অনেকে।

গুরুতর আহতদের গোপালগঞ্জ ও কোটালীপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া কোটালীপাড়া থানার আহত এসআই সেলিম মাহমুদ কোটালীপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। ওই এসআইসহ কোটালীপাড়া থানার আরও ৩ কনস্টেবল আহত হয়েছেন বলে কোটালীপাড়া থানার এসআই মামুনুর রশীদ জানিয়েছেন।

মাঝবাড়ি গ্রামের কালাম দাড়িয়া ও বংকুরা গ্রামের হাসেম মুন্সি জানিয়েছেন, কোটালীপাড়া উপজেলার বংকুরা গ্রামের রিয়াজুলের কাছ থেকে মাঝবাড়ি গ্রামের ফারুক দাড়িয়া সুদে টাকা নেন । সেই টাকা সময়মত ফারুক সুদে আসলে পরিশোধ করতে গড়িমসি শুরু করেন। এতে পাওনাদার রিয়াজুল ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। সুদের টাকা লেনদেন নিয়ে দু’জনের মধ্যে আজ শুক্রবার সকালে বাকবিতণ্ডা হয়। এদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মসজিদের মাইক থেকে গ্রামবাসীকে সংঘর্ষে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এ আহ্বানের পর দুই গ্রামের লোকজন ঢাল-সড়কিসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। দফায়-দফায় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলে। পুলিশ প্রথমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়। দুই ঘণ্টা পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করে।

উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করায় ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

কোটালীপাড়া পাড়া থানার ওসি মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ২৫ রাউন্ড গুলি বর্ষণ ও উভয়পক্ষের ৪৫ জনকে আটক করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে জানিয়ে ওসি আরও বলেন, এলাকার পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কোন পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়নি। অভিযোগ পাওয়ামাত্র আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অভিযুক্ত রিয়াজুল ও ফারুক দাড়িয়ার ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া গেছে। এ কারণে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গোপালগঞ্জে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে ৩ বাসের ধাক্কা, পুলিশ কর্মকর্তাসহ নিহত ২
  • গোপালগঞ্জে ৬ যানবাহনের সংঘর্ষ, পুলিশ সদস্যসহ নিহত ২
  • রেললাইনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন মুঠোফোনে, ট্রেনে কাটা পড়ে চা–শ্রমিকের মৃত্যু
  • গোপালগঞ্জে সুদের টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ২৫