শহীদ মিনারে রাষ্ট্রপতির আগমন ঠেকাতে কর্মসূচি ঘোষণা
Published: 20th, February 2025 GMT
একুশের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর আগমন প্রতিহত করতে কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন সংগঠনের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ।
তিনি বলেন, “জুলাই গণহত্যাকারী অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দোসর রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। তার একাধিক বিদেশী পাসপোর্ট রয়েছে। তাই রাষ্ট্রপতি পদে তার নিয়োগই অবৈধ। এছাড়া তিনি ২০২৪ এর জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনকে বৈধতা দিয়ে, ফ্যাসিস্ট হাসিনার সরকারকে শপথ পড়িয়ে, তার সব অবৈধ ও বেআইনী কাজকে অনুমোদন করে জুলাই গণহত্যার সুযোগ তৈরি করেছেন। এ অবস্থায় তার সামনে পদত্যাগ করে বিচারের মুখোমুখি হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই।”
তিনি আরো বলেন, “রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু পদত্যাগের আগে বঙ্গভবন থেকে বের হতে পারবেন না, জনপরিসরে কোন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারবেন না এবং আজ রাতেও তিনি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসতে পারবেন না। আমরা ছাত্র-জনতা তাকে বঙ্গভবনে ফিরে যেতে বাধ্য করব। এজন্য জুলাই গণহত্যার শহীদদের স্মরণে কালো পতাকা মিছিল বের করে আমরা তাকে শান্তিপূর্ণভাবে বাধা দেব। তার আগমন ঠেকাতে রাজপথে ব্লকেড দেব।”
আহ্বায়ক বলেন, “আমরা জনগণকে আহ্বান জানাই রাজপথে নেমে আসুন এবং গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলুন। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময় নিয়ে অনিশ্চয়তা দূর করুন। সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে সরিয়ে ড.
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের রাজনৈতিক প্রধান মো. আনিছুর রহমান, সদস্য সচিব হাসান মোহাম্মদ আরিফ, যুগ্ম আহ্বায়ক সাইয়েদ কুতুব, সহকারী সদস্য সচিব আব্দুস সালাম, গালীব ইহসান, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের সদস্য সচিব ফজলুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক বোরহান উদ্দীন, সহকারী সদস্য সচিব আশরাফুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক সানোয়ারা খাতুন, সদস্য সচিব মুহিব মুশফিক খান, যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম নূর শাফায়েতুল্লাহ, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম ও সদস্য সচিব মো. ফরহাদ আহমেদ আলী।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ষ ট রপত
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।
সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।
পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।
বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।
এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।
আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)