যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার (এফবিআই) প্রধান হিসেবে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ক্যাশ প্যাটেলের মনোনয়ন অনুমোদন করেছে মার্কিন সিনেট।

কংগ্রেসের রিপাবলিকান-নিয়ন্ত্রিত উচ্চকক্ষ সিনেট গতকাল বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এ মনোনয়ন অনুমোদন করে।

ট্রাম্পের অত্যন্ত অনুগত ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ৪৪ বছর বয়সী ক্যাশ প্যাটেল। ক্রমবর্ধমান অস্থিরতার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার শীর্ষ পদে তাঁর নিয়োগ চূড়ান্ত হলো।

সিনেটে ৫১-৪৯ ভোটে ক্যাশ প্যাটেলের মনোনয়ন অনুমোদন পায়। ডেমোক্র্যাট সিনেটরদের সবাই তাঁর বিপক্ষে ভোট দেন। ভোটাভুটিতে তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন সিনেটের দুই মধ্যপন্থী রিপাবলিকান সদস্য। তাঁরা হলেন সুসান কলিন্স ও লিসা মুরকোস্কি।

অতীতে ট্রাম্পের পক্ষে ক্যাশ প্যাটেলের রাজনৈতিক ওকালতি এবং এফবিআইয়ের কার্যক্রমের ওপর এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে এই দুই রিপাবলিকান সিনেটর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

অন্যদিকে ক্যাশ প্যাটেলের পক্ষের রিপাবলিকানরা যুক্তি দেন, এফবিআইয়ের ওপর জনগণের আস্থা পড়ে গেছে। এ সংস্থার সংস্কার করবেন ক্যাশ প্যাটেল।

ডেমোক্র্যাটরা জোরালোভাবে ক্যাশ প্যাটেলের মনোনয়নের বিরোধিতা করেন। তাঁরা বলেন, তিনি অতীতে ট্রাম্পের সমালোচকদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তাই এফবিআইয়ের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তিনি অযোগ্য।

সিনেটের জুডিশিয়ারি কমিটির (বিচারবিষয়ক কমিটি) শীর্ষ ডেমোক্র্যাট সিনেটর ডিক ডারবিন এক বিবৃতিতে বলেছেন, এফবিআইয়ের প্রধান হিসেবে ক্যাশ প্যাটেলের নিয়োগ যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে।

ক্যাশ প্যাটেল অতীতে খোলাখুলিভাবে এফবিআইয়ের সমালোচনা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে ‘ডিপ স্টেটের’ (রাষ্ট্রের ভেতরে রাষ্ট্র) অস্তিত্ব থাকার ধারণা তিনি জোরেশোরে প্রচার করেছেন। ট্রাম্পের ব্যাপারে এফবিআই পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেছে বলে মনে করেন ক্যাশ প্যাটেল। তিনি সংস্থাটিকে ঢেলে সাজানোর পক্ষে।

ক্যাশ প্যাটেল হিসেবে পরিচিত হলেও তাঁর পুরো নাম কাশ্যপ প্রমোদ বিনোদ প্যাটেল। তাঁর জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে। অভিবাসী হিসেবে তাঁর মা-বাবা ভারতের গুজরাট থেকে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। ইউনিভার্সিটি অব রিচমন্ড থেকে ক্রিমিনাল জাস্টিস অ্যান্ড হিস্টোরি বিষয়ে স্নাতক করেন ক্যাশ প্যাটেল। এ ছাড়া তিনি পেস ইউনিভার্সিটি ও ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনে পড়াশোনা করেছেন।

ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ২০১৯ সালে মার্কিন প্রশাসনে যোগ দিয়েছিলেন ক্যাশ প্যাটেল। ট্রাম্প প্রশাসনে তাঁর দ্রুত উত্থান হয়েছিল। কিছু গণমাধ্যমের ভাষ্যমতে, ক্যাশ প্যাটেলের এই উন্নতির পেছনে ছিল ট্রাম্পের প্রতি তাঁর পূর্ণ আনুগত্য।

আরও পড়ুনক্যাশ প্যাটেল: এফবিআইপ্রধান পদে ট্রাম্পের পছন্দ এই ভারতীয় বংশোদ্ভূতকে ঘিরে কেন বিতর্ক০৪ ডিসেম্বর ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র প বল ক ন

এছাড়াও পড়ুন:

ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুরসহ ৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর রামপুরা ও খিলগাঁওয়ে দুজনকে গুলি করে হত্যা এবং দুজনকে আহত করার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।

বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। এই ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো.শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

অন্য যে চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে, তাঁরা হলেন ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ আলম মো. আখতারুল ইসলাম, রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল ও পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) চঞ্চল চন্দ্র সরকার।

আসামিদের মধ্যে এএসআই চঞ্চল চন্দ্র গ্রেপ্তার আছেন। তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ পড়ে শুনিয়ে ট্রাইব্যুনাল জানতে চান, তিনি দোষ স্বীকার করেন কি না। জবাবে চঞ্চল চন্দ্র নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। আগামী ১৬ অক্টোবর এ মামলার সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে।

এদিকে ট্রাইব্যুনাল–১–এ গণ–অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ সাক্ষ্য গ্রহণ হওয়ার কথা ছিল। তবে তা হয়নি। আগামী বৃহস্পতিবার এ মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ