বাংলাদেশ যেন সন্ত্রাসবাদকে স্বাভাবিক বিষয় না করে তোলে
Published: 21st, February 2025 GMT
দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থাকে (সার্ক) পুনরুজ্জীবিত করার প্রশ্নে ঢাকাকে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে সতর্ক করেছে দিল্লি। ওমানের মাসকাটে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বৈঠকে এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়।
শুক্রবার দিল্লিতে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। তিনি বলেন, মাসকাটে বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সার্কের বিষয়টি তোলা হয়েছিল। সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য ভারতের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। ভারত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, এ ক্ষেত্রে সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা প্রয়োজন।
জয়সওয়াল বলেন, দক্ষিণ এশিয়াতে সার্কের পথকে বাধাগ্রস্ত করছে একাধিক দেশ এবং তাদের কার্যকলাপ। বাংলাদেশকে বলা হয়েছে, সন্ত্রাসবাদের বিষয়টিকে সাধারণভাবে না দেখে, এর গভীরে গিয়ে সমাধান করতে হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, এটি গুরুত্বপূর্ণ যে, বাংলাদেশ যেন সন্ত্রাসবাদকে স্বাভাবিক বিষয় না করে তোলে।
এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের কয়েকজন উপদেষ্টার মন্তব্য এবং সে দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের ওপর এর প্রভাব কী পড়তে পারে, তা পর্যবেক্ষণ করেছি। এসব (মন্তব্যগুলো) অবশ্যই সহযোগিতামূলক নয়। নির্দিষ্ট মন্তব্যের প্রভাব কী হতে পারে, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ভাবা উচিত।’
গত সপ্তাহে মাসকাটে অনুষ্ঠিত ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্সের অষ্টম অধিবেশনে তৌহিদ হোসেন ও জয়শঙ্করের বৈঠক হয়। বৈঠকের পর বাংলাদেশ জানায়, সার্কের স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক ডাকা অত্যন্ত জরুরি এবং সে জন্য তারা ভারতের সহায়তা চায়। বাংলাদেশ জানিয়েছে, সার্কের কার্যক্রম পুনরুজ্জীবিত করতে ভারতের সঙ্গে আরও গভীর আলোচনা করতে চায়। বিশেষ করে, সার্কের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে উল্লেখ করা হয়।
ভারত ও বাংলাদেশের এই আলোচনার প্রেক্ষাপটে ভারতীয় কূটনীতিকরা জানিয়েছেন, সার্কের সফল কার্যক্রমের জন্য পাকিস্তান এবং অন্যান্য দেশগুলোর অবস্থান পুনর্বিবেচনা করা অত্যন্ত জরুরি। ভারতীয় কূটনৈতিক সূত্রগুলো পাকিস্তান প্রশ্নে উদ্বেগ প্রকাশ করে জানায়, সার্ককে কার্যকর করতে হলে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে আস্থার সম্পর্ক ও সন্ত্রাসবাদবিরোধী কঠোর অবস্থান গ্রহণ করতে হবে।
এদিন প্রেস ব্রিফিংয়ে সার্ক ছাড়াও বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের বিষয়ে মুখ খুলেছেন জয়সওয়াল। তিনি বলেছেন, ‘গত কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে কী হচ্ছে, তা আমরা সবাই ভালোভাবে জানি। এ মাসের শুরুতে ওয়াশিংটনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আলোচনায়ও এটি উঠেছিল। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়ে সমস্যা আছে এবং বাংলাদেশে যা ঘটছে, তা নিয়ে আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছি।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পরর ষ ট র
এছাড়াও পড়ুন:
ওভালে টস হেরে ব্যাটিংয়ে ভারত, একাদশে চার পরিবর্তন
সিরিজের নির্ধারক ম্যাচে টানা ১৫ বার টস ভাগ্য মুখ ফেরাল না ভারতের দিকে। ফলে লন্ডনের ওভালে শুরু থেকেই কঠিন চ্যালেঞ্জ নিয়েই নামতে হলো শুভমান গিলদের। আকাশে ছিল মেঘ, উইকেট ছিল সবুজ। এমন সহায়ক কন্ডিশনে টস জিতে এক মুহূর্ত সময় নষ্ট না করে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক ওলি পোপ। যিনি এই ম্যাচে ইনজুরিতে থাকা বেন স্টোকসের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন।
মজার ছলে শুভমান গিল আগেই বলেছিলেন, এই সিরিজে তার সবচেয়ে বড় চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে টস! আর তা আবারও সত্যি হলো। সিরিজজুড়ে ‘হেড’ ডাকার পরও টস জয় থেকে বঞ্চিত গিল এবারও হেরে গেলেন।
এই ম্যাচে অবশ্য ভারত একাদশে চারটি পরিবর্তন এনেছে। এর মধ্যে তিনটি ছিল প্রত্যাশিত। ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের কারণে বিশ্রামে আছেন জাসপ্রিত বুমরাহ, চোটে ছিটকে গেছেন ঋষভ পন্ত এবং তরুণ আনশুল কাম্বোজকে জায়গা করে দিতে হয়েছে অভিজ্ঞদের। এদের জায়গায় সুযোগ পেয়েছেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা, ধ্রুব জুরেল এবং ফিট হয়ে ফেরা আকাশ দীপ। তবে চতুর্থ পরিবর্তনটি বেশ কৌশলগত। অলরাউন্ডার শার্দুল ঠাকুরের বদলে দলে এসেছেন ব্যাটার করুণ নায়ার। উল্লেখ্য, শার্দুল আগের দুটি টেস্টে মাত্র ২৭ ওভার বোলিং করেছেন।
আরো পড়ুন:
সিরিজের শেষ ম্যাচে নেই স্টোকস, দায়িত্বে পোপ
শেষ ম্যাচের আগে ভারতের শিবিরে ধাক্কা, বিশ্রামে বুমরাহ
অন্যদিকে, ইংল্যান্ড আগেই তাদের একাদশ ঘোষণা করে রেখেছিল। দলে জায়গা হয়নি স্টোকস, জোফরা আর্চার, ব্রাইডন কার্স ও লিয়াম ডসনের। তাদের জায়গায় খেলছেন জ্যাকব বেথেল, জশ টাঙ, জেমি ওভারটন ও গাস অ্যাটকিনসন।
২০২৩ সালের মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ওভালে ২২টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ (তার মধ্যে ৪টি টেস্ট) অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রত্যেক ম্যাচেই টসজয়ী অধিনায়ক প্রথমে বোলিং বেছে নিয়েছেন। এবং তার মূল কারণ, এই উইকেট থেকে পেসাররা বেশ সাহায্য পাচ্ছেন। ২০২৩ সালের শুরু থেকে এই মাঠে সিমাররা নিয়েছেন ৬১৭টি উইকেট, বিপরীতে স্পিনাররা পেয়েছেন মাত্র ৭৯টি।
এই টেস্টে শুরুতেই পিছিয়ে থাকলেও ভারতের চোখ থাকবে দ্রুত মানিয়ে নেওয়ার দিকে। আর ইংল্যান্ড চাইবে কন্ডিশনের সর্বোচ্চ ব্যবহার করে ভারতকে চাপে ফেলে দিতে। সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা ইংল্যান্ড এই ম্যাচে কোনোরকমে ড্র করতে পারলেই সিরিজ জিতে যাবে। অন্যদিকে এই ম্যাচ জিতলে সিরিজ হার ঠেকাতে পারবে ভারত।
এ রিপোর্ট লেখার সময় ভারত ২৩ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৭২ রান সংগ্রহ করেছে এবং বৃষ্টির কারণে মধ্যাহ্ন বিরতিতে গিয়েছে। ব্যাট করতে নেমে চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে দলীয় ১০ রানের মাথায় আউট হন জয়সওয়াল। অ্যাটকিনসনের বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি ব্যক্তিগত ২ রানে। আর ৩৮ রানের মাথায় ক্রিস ওকসের বলে বোল্ড হয়ে যান লোকেশ রাহুল। ৪টি চারে ১৪ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
ইংল্যান্ড একাদশ:
জ্যাক ক্রাউলি, বেন ডাকেট, ওলি পোপ (অধিনায়ক), জো রুট, হ্যারি ব্রুক, জ্যাকব বেথেল, জেমি স্মিথ (উইকেটকিপার), ক্রিস ওকস, গাস অ্যাটকিনসন, জেমি ওভারটন ও জশ টাঙ।
ভারত একাদশ:
যশস্বী জয়সওয়াল, কেএল রাহুল, সাই সুদর্শন, শুভমান গিল (অধিনায়ক), করুণ নায়ার, রবীন্দ্র জাদেজা, ধ্রুব জুরেল (উইকেটকিপার), ওয়াশিংটন সুন্দর, আকাশ দীপ, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা ও মোহাম্মদ সিরাজ।
ঢাকা/আমিনুল