চট্টগ্রামে মাঝপথেই বন্ধ একুশের অনুষ্ঠান
Published: 21st, February 2025 GMT
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও মহান শহীদ দিবসে সংঘর্ষ, হাতাহাতি, ভাঙচুর, ছুরিকাঘাত এবং মাঝপথে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনারে আগে ফুল দেওয়া নিয়ে বিএনপির দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। একই কারণে বরিশালের হিজলায় বিএনপির দু’পক্ষে হাতাহাতি হয়েছে। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় রাতের আঁধারে একটি কলেজের শহীদ মিনার ভেঙে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। চট্টগ্রামে আয়োজিত একটি আবৃত্তি অনুষ্ঠান মাঝপথে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে দু’জন আহত হয়েছেন। একুশের প্রথম প্রহরে উপজেলা পরিষদ চত্বরের শহীদ মিনারে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন– মো.
স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় বিএনপির দুটি পক্ষ রয়েছে। একটি পক্ষের নেতাকর্মীরা জমির দস্তগীরকে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও ইমাম হোসেনকে সদস্য সচিব মনে করেন। আরেকটি পক্ষের নেতাকর্মীরা মহসিন ভূঁইয়াকে আহ্বায়ক ও শাহালম মিয়াকে সদস্য সচিব বিবেচনা করেন। বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর উপজেলা পরিষদের ভেতরের শহীদ মিনারে প্রথমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এর পর বিএনপির কোন পক্ষ আগে পুষ্পস্তক অর্পণ করবে, তা নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা থেকে সংঘর্ষ শুরু হয়। এক পর্যায়ে ক্ষুরের আঘাতে বেলাল ও জীবন আহত হন। তারা মহসিন ও শাহালমের পক্ষের অনুসারী বলে জানা গেছে। বিজয়নগর থানার ওসি রওশন আলী জানান, এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাধার প্রতিবাদে গতকাল গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্যের ব্যানারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছেন সংস্কৃতিকর্মীরা।
বরিশালের হিজলা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক গাফফার তালুকদারের সমর্থকদের সঙ্গে সদস্য সচিব মনির দেওয়ান ও যুগ্ম আহ্বায়ক খোকন দপ্তরীর সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি হয়।
জানা গেছে, প্রথম প্রহরে পর্যায়ক্রমে ইউএনও ইলিয়াস হোসেন, হিজলা থানা, নৌ পুলিশ, আনসার, হিজলা সরকারি ডিগ্রি কলেজ ও ফায়ার সার্ভিস শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করে। এর পর বিএনপিকে শ্রদ্ধা নিবেদনের আহ্বান জানানো হয়। তখন গাফফার তালুকদার এবং মনির দেওয়ান ও খোকন দপ্তরীর নেতৃত্বে পৃথক দুটি গ্রুপ শহীদ মিনারের পাদদেশে অপেক্ষমাণ ছিল। আগে ফুল দেওয়ার জন্য দু’পক্ষই শহীদ মিনারে ওঠে। পদাধিকার বলে আহ্বায়ক আগে ফুল দেবেন, এমন দাবিতে তাঁর অনুসারীরা অপরপক্ষকে বাধা দেয়। তখন দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। লাঞ্ছিত হন গাফফার। ইউএনও ইলিয়াস হোসেন তাঁকে নিরাপদে সরিয়ে নেন। পরে ইউএনওর দপ্তরে আহ্বায়ক, সদস্য সচিব ও যুগ্ম আহ্বায়ক নিয়ে সমঝোতার পর তারা একত্রে শহীদ মিনারে ফুল দেন। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে রাতের আঁধারে শহীদ
মিনার ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। উপজেলার গুণবতী ইউনিয়নের গুণবতী ডিগ্রি কলেজের সামনে এ ঘটনা ঘটে। শুক্রবার পুলিশ, সেনাবাহিনী ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা প্রশাসন পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ১ মিনিটে কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা কলেজ চত্বরের শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন। রাত পৌনে ১টার দিকে সবাই ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন।
নৈশপ্রহরী শামসুল আলমের বরাতে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফ বলেন, রাত প্রায় ২টার দিকে বিকট আওয়াজ শুনতে পেয়ে শহীদ মিনার চত্বরে যান শামসুল। সেখানে গিয়ে দেখেন, শহীদ মিনারের তিনটি স্তম্ভের মধ্যে দুটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
ইউএনও জামাল হোসেন বলেন, ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে কমিটি।
এদিকে কলেজ অধ্যক্ষ জানান, কলেজের পক্ষ থেকেও একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটি আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে।
চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি হিলাল উদ্দিন বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ এ ঘটনায় থানায় জিডি করেছে। জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
চট্টগ্রামে অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত একটি আবৃত্তি অনুষ্ঠান মাঝপথে বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার সকালের দিকে চট্টগ্রাম আবৃত্তি সম্মিলন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। তবে দুপুরের আগেই অনুষ্ঠান শেষ না করে মাঝপথে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আয়োজকদের কয়েকজন জানান, আবৃত্তি অনুষ্ঠান শুরুর পর একটি কবিতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম উচ্চারণের পরই জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) নেতাকর্মীরা হইহুল্লোড় শুরু করেন। এক পর্যায়ে তারা এর প্রতিবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানটি বন্ধ করে দেন। এ সময় আবৃত্তিশিল্পীকে হেনস্তাও করা হয়। আবৃত্তিশিল্পী কবি রবিউল হুসাইনের ‘এক সেকেন্ডে মাত্র চার ফুট’ কবিতাটির কয়েকটি লাইনে বঙ্গবন্ধু, জয় বাংলা, একাত্তর, সাতই মার্চ, মওলানা ভাসানীর মতো কিছু শব্দ ছিল। লাইনগুলো পড়ার পর মঞ্চের উল্টো পাশে পুলিশ প্লাজার সামনে থেকে জাসাসের নেতাকর্মীরা এসে এর প্রতিবাদ জানান। কবিতাটি যিনি পড়ছিলেন তাঁকে হেনস্তা করেন তারা। তাঁকে ক্ষমা চাইতেও বাধ্য করা হয়। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
বিষয়টি স্বীকার করে জাসাসের সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ অভিযোগ করে বলেন, আবৃত্তির আড়ালে অনুষ্ঠানটিতে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড চলছিল। তাই আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি।
অনুষ্ঠান আয়োজকদের একজন নরেন আবৃত্তি একাডেমির মিশফাক রাসেল জানান, আবৃত্তিশিল্পী এমন কবিতা পড়বেন, তা আমরা জানতাম না। কোতোয়ালি থানার ওসি আবদুল করিম জানান, ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বগুড়ার শিবগঞ্জে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানিয়ে ফেরার পথে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে উপজেলা নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে উপজেলা পরিষদের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটে। শহীদুল ইসলাম বর্তমানে শঙ্কামুক্ত। তিনি বলেন, কে ছুরিকাঘাত করেছে তা ওই সময় বুঝতে পারিনি।
শিবগঞ্জ থানার ওসি শাহীনুজ্জামান শাহীন বলেন, একুশের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ফেরার পথে শহীদুল ছুরিকাহত হন। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করা হয়নি।
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায় প্রভাতফেরির ব্যানারে বঙ্গবন্ধুর ছবি সংবলিত ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ লেখা ব্যানার ব্যবহারের ঘটনা ঘটেছে। জানা গেছে, গতকাল সকাল ৮টার দিকে উপজেলার পানপট্টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের অংশগ্রহণে প্রভাতফেরি হয়। সামনের সারিতে শিক্ষার্থীদের হাতে বঙ্গবন্ধুর ছবি সংবলিত ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ লেখা ব্যানার দেখা যায়। পরে ব্যানারটি শহীদ মিনারের পাশে টানিয়ে রাখা হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিহার রায় বলেন, ‘ব্যানারটি গত বছরের। এবার ব্যানার তৈরি করা হয়নি। স্কুলশিক্ষার্থীরা ওই ব্যানার কোথায় পেয়েছে জানি না।’
(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিজস্ব প্রতিবেদক এবং সংশ্লিষ্ট ব্যুরো ও প্রতিনিধি)
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব র হ মণব ড় য় র ন ত কর ম র ব এনপ র দ অন ষ ঠ ন উপজ ল য় য় ব এনপ স ঘর ষ কল জ র প রহর এ ঘটন প রথম ম ঝপথ
এছাড়াও পড়ুন:
ফেস্টুন অপসারণ করায় ইউএনওকে শাসালেন বিএনপি নেতা
ফেস্টুন অপসারণ করায় রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফয়সাল আহমেদকে শাসিয়েছেন এক বিএনপি নেতা। তিনি ইউএনওকে আগের স্থানেই ফেস্টুন লাগিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, “তা না হলে যেটা করা দরকার, সেটাই করব।”
এই বিএনপি নেতার নাম কে এম জুয়েল। তিনি রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক। গোদাগাড়ী উপজেলার রিশিকুলে তার বাড়ি।
গত মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) গোদাগাড়ী উপজেলা সদরের সড়ক বিভাজকে থাকা বিভিন্ন দলের ফেস্টুন অপসারণ করেন ইউএনও ফয়সাল আহমেদ। বিষয়টি জানতে পেরে ইউএনওকে ফোন করে ধমকান জুয়েল।
কে এম জুয়েলের ফোনকল রেকর্ড পাওয়া গেছে। এতে শোনা গেছে, কে এম জুয়েল বলেছেন- “আজকে একটা ঘটনা ঘটেছে, আমি শুনেছি। আমি ইঞ্জিনিয়ার কে এম জুয়েল বলছি, সম্ভাব্য ক্যান্ডিডেট। আপনার গোদাগাড়ী থানার প্রোপারে যে পোস্টার সরিয়েছেন, এই বিষয়ে কিছুক্ষণ আগে আমাকে ইনফর্ম করা হয়েছে। সেখানে আমার পোস্টার ছিল। জামায়াত-বিএনপির পোস্টার ছিল। আপনি যে হটাইছেন, এর কারণ কী? কোনো পরিপত্র আছে, না ইচ্ছে করেই?”
ইউএনও তখন বলেন, “জনগণ অভিযোগ দিয়েছে।” জুয়েল বলেন, “জনগণ তো অনেক অভিযোগ দিয়েছে। সমগ্র গোদাগাড়ী থানাতে ভর্তি হয়ে আছে পোস্টার। তোলেন, সব তোলেন।”
এ সময় ইউএনও কিছু বলতে চাইলে তাকে থামিয়ে দিয়ে জুয়েল বলেন, “শোনেন, আমি যেটা বলছি লিগ্যাল রাইট নিয়ে বলছি, সেটার সঠিক অ্যানসার করবেন। আপনি কেন ওই জায়গার পোস্টার তুলেছেন, আর অন্য জায়গার তুলছেন না কেন? আমি ঢাকাতে আছি, আমি আসতেছি।”
ইউএনও বলেন, “আচ্ছা ঠিক আছে।” জুয়েল বলেন, “না, আপনি যেখান থেকে পোস্টার তুলেছেন, সেখানে আপনি সাবমিট করবেন পোস্টার।” কথা না বাড়িয়ে ইউএনও বলেন, “ঠিক আছে।”
এ সময় আরো ক্ষুব্ধ হয়ে বিএনপি নেতা জুয়েল বলেন, “কালকে যেন আমরা ওখানে দেখতে পাই, পোস্টার যেখানে ছিল। ঠিক আছে মানে কী? অবশ্যই করবেন। না হলে যেটা করা দরকার সেটাই করব। আপনার এগেইনেস্টে যেরকম স্টেপ নেওয়া দরকার, সেটাই আমি করব। বিশেষ করে আমরা করব। আমার নেতার ছবি তুলেছেন আপনি ওখান থেকে। জাস্ট রিমেম্বার ইট।”
জুয়েল বলতে থাকেন, “নরসিংদী বাড়ি দেখান আপনি, না? কোন দল থেকে আসছেন আপনি? কোন দল থেকে এসেছেন? কার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতেছেন আপনি? কালকে পোস্টার ভদ্রলোকের মতো লাগাবেন। ফাইজলামি! এহ, বিশাল ব্যাপার। উনি টিএনও হয়ে গোদাগাড়ীতে আসছেন।”
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ইউএনও ফয়সাল আহমেদ বলেন, “ডাইংপাড়া মোড়ে ব্যানার-ফেস্টুন এরকম পর্যায়ে ছিল যে, যান চলাচলে সমস্যা হচ্ছিল। পাশাপাশি পৌরসভার সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছিল বলে অভিযোগ ছিল। স্থানীয় জনগণ এ ব্যাপারে অভিযোগ করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পৌরসভা থেকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে সরানোর জন্য। দুই-তিনবার মৌখিকভাবে ও লিখিত আকারে জানানো হয়েছিল। না সরানোর কারণে ব্যানার-ফেস্টুন সরিয়ে পৌরসভায় রাখা হয়েছে।”
তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির একাধিক সভাতেও আলোচনা হয়েছিল। সেখান থেকে সকল রাজনৈতিক দলের পোস্টারই পৌরসভার পক্ষ থেকে সরানো হয়েছে। তবে, বিএনপি নেতা কে এম জুয়েলের ফোনে শাসানোর বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা কে এম জুয়েল বলেন, “ইউএনওর কাছে জনগণ অভিযোগ করেছে, আর আমরা কি মানুষ না? আমরা জানোয়ার? আমার ছবি তুলে ফেলুক আপত্তি নাই। আমার নেতার ছবিতে হাত দিয়েছে কেন? তার কাছে কি নির্বাচন কমিশন থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পোস্টার তুলে ফেলতে? তিন মাসের মধ্যে কি নির্বাচন? উনি জাস্টিস করতেন, আমার কোনো আপত্তি ছিল না। কিন্তু গরু-ছাগলের মতো আচরণ করবেন, তা তো হয় না।”
বিষয়টি নিয়ে কোথাও আলোচনা হয়নি, ইউএনও কোনো চিঠিও দেননি, দাবি করে এই বিএনপি নেতা বলেন, “গতকাল আমার এক লোককে ডেকে ইউএনও বলেছেন, যেখানে পোস্টার ছিল, দয়া করে আপনারা লাগিয়ে নেন। কিন্তু, আমরা তো লাগাব না। ইউএনওকেই লাগাতে হবে।”
উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির একজন সদস্য জানান, প্রায় দুই মাস আগে উপজেলা সদরের এসব ব্যানার-ফেস্টুন ও পোস্টারের বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় উত্থাপন করেন এক ব্যক্তি। এক মাসেও সেগুলো অপসারণ না হওয়ায় পরবর্তী মাসের সভাতেও বিষয়টি আলোচনায় ওঠে। ওই সভায় ট্রাফিক পুলিশ আপত্তি করেছিল যে, ফেস্টুনের কারণে রাস্তার একপাশ থেকে অন্যপাশ দেখা যায় না। এতে দুর্ঘটনা ঘটছে। এ দুটি সভার মধ্যে প্রথম সভায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুস সালাম শাওয়াল ছিলেন না। দুই সভার মাঝে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটি পুনর্গঠন করা হলে তিনি পরবর্তী সভায় উপস্থিত ছিলেন।
তবে, কোনো আলোচনা হয়নি দাবি করে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুস সালাম শাওয়াল বলেন, “আমি আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্য। পোস্টার নিয়ে কোনো আলোচনা সভায় হয়নি। ইউএনও আমাদের না জানিয়ে এভাবে ফেস্টুন অপসারণ করে ঠিক করেননি। সেখানে আমাদের নেতার ছবি ছিল।”
ঢাকা/কেয়া/রফিক