কাওসার আহমেদ চৌধুরীকে বললাম, ‘আজ আপনার কাছে হেলিকপ্টারে করে এসেছি’
Published: 22nd, February 2025 GMT
সবে ঢাকায় এসে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি। কম্পিউটারবিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে প্রযুক্তি দুনিয়ার খোঁজখবর রাখি। সেই সূত্র ধরেই ২০১৬ সালে প্রথম আলোর প্রযুক্তি পাতায় প্রদায়ক হিসেবে আমার লেখাজোখা শুরু।
এই কাজ করতে করতেই একদিন ফিচার বিভাগের সে সময়ের যুগ্ম সম্পাদক পল্লব মোহাইমেন বললেন, ‘শাওন, তোমাকে ধানমন্ডিতে যেতে হবে। একজন মুখে বলবেন, তুমি শুনে শুনে লিখে আনবে।’
মুঠোফোনে নাম-ঠিকানা পাঠিয়ে দিলেন পল্লব ভাই, ‘কাওসার আহমেদ চৌধুরী.
মাথায় সবুজ টুপি, চোখে খয়েরি চশমা, রঙিন শার্ট, কালো দাড়ি—কাওসার আহমেদ চৌধুরীকে অনেকের মতো পত্রিকা মারফত আমিও অতটুকুই চিনতাম। ২০১৬ সালের সেই সন্ধ্যায় মনের মধ্যে মানুষটার এই চিত্র নিয়েই তাঁর ধানমন্ডির বাসায় পৌঁছালাম।
কলিবেল বাজাতেই এক কিশোর দরজা খুলল। পরিচয় দিলাম। ভেতরে গিয়ে বসতে বলল। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর শোবার ঘর থেকে ডাক এল। একটু ভয় ভয় মন নিয়ে ভেতরে গেলাম। পাঞ্জাবি আর লুঙ্গি পড়ে শুয়ে আছেন বয়স্ক এক মানুষ। খুবই গম্ভীর। আমাকে দেখে মিষ্টি বাংলায় বললেন, ‘এসেছ, বসো। আমি কাওসার আহমেদ চৌধুরী, তোমার নাম কী?’
কাওসার আহমেদ চৌধুরীর অপ্রকাশিত লেখা: যখন ঋত্বিকপ্রাথমিক পরিচয়ের পর সাদা কাগজ আর কলম নিয়ে লেখা শুরু করলাম, ‘রাশিফল, শনিবার। মেষ…।’ কাওসার আহমেদ চৌধুরী বলে গেলেন, আমি লিখে গেলাম। লেখা শেষে তিনি হাতে নিলেন কাগজটা, অনেক ভুল ছিল আমার লেখায়। শুধরে দিলেন।
দরজা যে খুলে দিয়েছিল, তার নাম আল আমিন। কাওসার আহমেদ চৌধুরীর সেবক। তার সঙ্গেও কথা হলো।
সেই শুরু। পরের তিনটি বছর প্রতি বুধবার কাওসার আহমেদ চৌধুরীর শ্রুতিলেখক হিসেবে কাজ করেছি। কাওসার আহমেদ চৌধুরী তাঁর লেখা প্রতিটি শব্দ নিয়ে খুবই খুঁতখুঁতে ছিলেন। আর একদম তাঁর সময়মতো হাজির হওয়াটা অনেকের জন্যই চ্যালেঞ্জিং। এসব কারণে অনেকেই তাঁর শ্রুতিলেখকের দায়িত্ব চালিয়ে যেতে পারেননি। তবে তাঁর প্রতি অগাধ ভালোবাসা, সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধের কারণে দীর্ঘদিন তাঁর সান্নিধ্যলাভের সৌভাগ্য পেয়েছিলাম।
এমন প্রায়ই হয়েছে, আমি ছয়টার আগে পৌঁছে গেছি। তখন বাসার দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে থাকতাম। ঘড়িতে যেই ছয়টা বাজত, অমনি কলবেল চাপতাম। এ জন্য তিনি সব সময় বলতেন, ‘শাওন তোমার সময়জ্ঞান খুবই ভালো।’
সারা সপ্তাহ যা–ই করি না কেন, আমার বুধবার দিনটি থাকত তাঁর জন্য বরাদ্দ। কতটা বরাদ্দ, এ বিষয়ে একটি ঘটনা বলি।
কাওসার আহমেদ চৌধুরী এখন ছবির মানুষউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনবার দায়িত্ব পালনের দাবি ট্রাম্পের
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, তিনি এরই মধ্যে তিনবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। চলতি মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতাগ্রহণের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে মিশিগান অঙ্গরাজ্যে মঙ্গলবার আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ দাবি করেন। তাঁর দাবি, ২০২০ সালের নির্বাচনেও তিনি জিতেছিলেন। এর আগেও একাধিকবার তিনি এই দাবি করেছেন।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলায়, ২০২০ সালের নির্বাচনে জয়ের মিথ্যা দাবি করে আসছেন ট্রাম্প। ওই নির্বাচনে তিনি ডেমোক্রেটিক পার্টির জো বাইডেনের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবার মিশিগানের সমাবেশে ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেন, বাইডেনের আমলেও তিনিই প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
মঙ্গলবার সমাবেশে কিছু সমর্থক ট্রাম্পকে তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য আহ্বান জানান। তখন ট্রাম্প বলেন, ‘আপনারা যদি ধরেন, আমরা আসলে এরই মধ্যে তিনবার দায়িত্ব পালন করেছি। মনে রাখবেন, আমি কিন্তু জয় পছন্দ করি। আমি সেই তিনটি জয়ই পছন্দ করি, যা আমরা নিঃসন্দেহে পেয়েছিলাম। তবে, শুধু মাঝের মেয়াদের ফলাফলটা আমি পছন্দ করি না।’
যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ২২তম সংশোধনী অনুযায়ী কেউ দুইবারের বেশি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে পারেন না। ট্রাম্প ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় লাভ করেন। পরে ২০২০ সালের নির্বাচনেও প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। তবে ওই নির্বাচনের বাইডেনের কাছে পরাজিত হন। পরে ২০২৪ সালের ৫ নভেম্বরের নির্বাচনে জয় পেয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসেন ট্রাম্প।ট্রাম্পের প্রতি অসন্তুষ্ট বেশির ভাগ মার্কিন, অর্থনীতি ও অভিবাসন ইস্যুতে অসন্তোষ বাড়ছে
আরও পড়ুনট্রাম্পের প্রতি অসন্তুষ্ট বেশির ভাগ মার্কিন, অর্থনীতি ও অভিবাসন ইস্যুতে অসন্তোষ বাড়ছে১৩ ঘণ্টা আগেচলতি মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কীভাবে তিনি আবার প্রেসিডেন্ট হতে পারেন, সে বিষয়ে ট্রাম্প গত মার্চ মাসে বলেছিলেন, ‘এটা করার কিছু উপায় আছে।’ মঙ্গলবারের বক্তৃতার শুরুতে ট্রাম্প ঠিকঠাকই বলেন, আমি মিশিগানে দুইবার জিতেছি। কিন্তু পরেই তিনি যুক্ত করেন, ‘আসলে আমরা তিনবার জিতেছি।’ ট্রাম্প মিশিগানে ২০১৬ ও ২০২৪ সালে নির্বাচনে জয় পেয়েছিলেন। ২০২০ সালে বাইডেনের কাছে মিশিগান অঙ্গরাজ্যে দেড় লাখের বেশি ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন তিনি।
আরও পড়ুনট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আয় কতটা বাড়ল১২ ঘণ্টা আগে