পাকিস্তানের নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে এখন আর ভিসার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্স প্রয়োজন হবে না। সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, আগে বাংলাদেশের ভিসার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্স নিতে হতো পাকিস্তানিদের। এই ক্লিয়ারেন্স ছাড়া তাদের ভিসা দেওয়া সম্ভব ছিল না।

সম্প্রতি এই নিয়ম প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং এখন পাকিস্তানিরা ক্লিয়ারেন্স ছাড়াই ভিসা পাচ্ছেন।

২০২৪ সালে পাকিস্তানিদের জন্য ২ হাজার ক্লিয়ারেন্স দেওয়া হয়েছিল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার পরই ভিসা ইস্যু করা হতো। এখন এই নিয়ম বাতিল হয়েছে।

এদিকে, পাকিস্তানও বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করেছে। সম্প্রতি পাকিস্তান ১২৬টি দেশের জন্য ভিসা ফি মওকুফ করেছে, তার মধ্যে বাংলাদেশও আছে।

পাকিস্তানি অথবা পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত অন্য যেকোনো দেশের নাগরিকরা যাতে সহজেই বাংলাদেশে আসতে পারেন, সে উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

সম্প্রতি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবকে চিঠি দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ।

সুরক্ষা সেবা বিভাগের বহিরাগমন শাখার ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আগে একজন পাকিস্তানি অথবা পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত নাগরিককে বাংলাদেশি ভিসা পেতে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হতো। এমনও হয়েছে ভিসাপ্রার্থীর আবেদন অনুমোদন পেতে বছরও পার হয়েছে। এই সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নিয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

তিনি বলেন, “আগে এক জন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত নাগরিক সংশ্লিষ্ট দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে ভিসার আবেদন করার পর তা ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হতো। সেখান থেকে সেটা আসত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। এই মন্ত্রণালয় সেটা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য পাঠাত একটি গোয়েন্দা সংস্থায়। সেই গোয়েন্দা সংস্থা ক্লিয়ারেন্স দেওয়ার পর ওই ব্যক্তি বাংলাদেশে প্রবেশ করার ভিসা বা অনুমতি পেতেন।”

বর্তমান সরকারের এ উদ্যোগের ফলে এখন আর সময়ক্ষেপণ হবে না। পাকিস্তানি বা পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত অন্য কোনো দেশের নাগরিক বাংলাদেশে আসার ভিসা পাবেন কি না, সেটা শুধু সংশ্লিষ্ট দূতাবাসের বিবেচনার বিষয় হিসেবে থাকবে। ভিসা দেওয়া এবং প্রত্যাখ্যান করার এখতিয়ার এখন থেকে তাদের হাতেই থাকবে।

পাকিস্তানের নাগরিকদের ভিসা ইস্যু সহজ করা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, তাদের ভিসাপ্রাপ্তি সহজ করতে এর আগে সুরক্ষা সেবা বিভাগের জারি করা (১১/০২/২০১৯ তারিখ) আদেশটি বাতিল করা হয়েছে। এখন থেকে পাকিস্তানি অথবা পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত অন্য দেশের নাগরিকদের ভিসার আবেদন বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস বা মিশন সরাসরি নিষ্পত্তি করতে পারবে।

এর আগে ২০১৯ সালে পাকিস্তানি পাসপোর্টধারী অথবা পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত যেকোনো দেশের নাগরিককে ভিসা দেওয়া প্রসঙ্গে জারি করা আদেশে বলা হয়েছিল, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় পাকিস্তানি পাসপোর্টধারী অথবা পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত পৃথিবীর যেকোনো দেশের নাগরিককে সুরক্ষা সেবা বিভাগের ‘অনাপত্তি’ নিয়ে ভিসা দেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হলো।

ঢাকা/হাসান/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ

‎পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি কোম্পানির সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও তা নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন না করায় সাত নিরীক্ষক (অডিটর) প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ বছরের জন্য অডিট এবং অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

সেইসঙ্গে ওই নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষকদের কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না, সেই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে তাদের শুনানিতে ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।

আরো পড়ুন:

সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি: ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা

পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআইয়ের যৌথ সভা

‎গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে ৯৭৩তম কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ‎বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

‎সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক এ হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; রিংসাইন টেক্সটাইল লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক যথাক্রমে: আহমেদ অ্যান্ড আক্তার, মাহফেল হক অ্যান্ড কোং, আতা খান অ্যান্ড কোং এবং সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; আমান কটন ফাইব্রাস লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক ইসলাম কাজী শফিক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস এবং ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৮ ও ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক মাহফেল হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন করেনি। 

এ সকল নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষককে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানি, সকল ধরনের বিনিয়োগ স্কিম (যথা- মিউচ্যুয়াল ফান্ড, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড) এবং পুঁজিবাজারে মধ্যস্থতাকারী সকল প্রতিষ্ঠানের অডিট ও অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রম পরিচালনার উপর নিষেধাজ্ঞা তথা পাঁচ বছরের জন্য অডিট ও অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণে কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে শুনানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

‎ঢাকা/এনটি/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ
  • গোলাম রাব্বানীর ডাকসুর জিএস নির্বাচিত হওয়া অবৈধ ঘোষণার সুপারিশ