গৌরনদীর ঐতিহ্যবাহী পিঙ্গলাকাঠি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পুনর্মিলনী
Published: 22nd, February 2025 GMT
প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান ঘিরে আনন্দ-উচ্ছ্বাস আর স্মৃতিচারণায় দিনভর মুখর ছিল বরিশালের গৌরনদী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী পিঙ্গলাকাঠি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। দীর্ঘদিন পর পুরোনো সহপাঠীদের দেখে পুলকিত ও রোমাঞ্চিত হন অনেকে। গল্প, আড্ডায় মজেন। স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে ফিরে যান সেই কৈশোর-তারুণ্যে বিদ্যালয়জীবনে।
আজ শনিবার দেশের জনপ্রিয় অভিনেতা ও এই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মোশাররফ করিমকে নিয়ে পুনর্মিলনীর উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন। অভিনেতা মোশাররফ করিমের গ্রামের বাড়ি ও জন্ম এই পিঙ্গলাকাঠি গ্রামে।
অনুষ্ঠানে জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, একটি মেধাবী প্রজন্ম ও সৃষ্টিশীল নেতৃত্ব কোনো জাতির শ্রেষ্ঠ সম্পদ। এ জন্য শিক্ষার্থীদের শুধু পাঠ্যপুস্তকের মধ্যে নিমগ্ন না রেখে তাদের সৃজনশীলতা ও চিন্তাশক্তি বিকাশের উদ্যোগ নিতে হবে। এটা না করতে পারলে মেধাবী ও সৃষ্টিশীল প্রজন্ম গড়ে উঠতে পারে না। পিঙ্গলাকাঠি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পুনর্মিলনী শুধু একটি মিলনমেলা নয়, এটি নতুন প্রজন্মকে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সৃজনশীলতার বিকাশের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচনে অনুপ্রাণিত করবে।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন কৃতী শিক্ষার্থী সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জিয়াউল হকের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অভিনেতা মোশাররফ করিম শৈশবের স্মৃতিচারণা করে বলেন, ‘আমি আজ যে জায়গায় পৌঁছেছি, তার ভিত্তি রচিত হয়েছে এই পাঠশালায়। এখানকার নাটক ও যাত্রাপালায় অংশ নেওয়ার মধ্য দিয়েই আমার অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা জন্মেছিল।’ পাঠ্যপুস্তকের শিক্ষার পাশাপাশি আনন্দময় জীবন গঠনের জন্য শিল্প-সংস্কৃতির চর্চারও আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা বলেন, ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত পিঙ্গলাকাঠি মাধ্যমিক বিদ্যালয় শুরু থেকেই শিক্ষার মানোন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে আসছে। এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শুধু বরিশাল নয়, দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্র সুনামের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন।
পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিদ্যালয়ের শিক্ষক, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও অভিভাবকেরাও উপস্থিত ছিলেন। দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্যে ছিল স্মৃতিচারণা, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণী।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ফুটবলার প্রতিমা এগিয়ে যাচ্ছেন, পাশে আছে কিশোর আলোসহ অনেকে
একটি পরিবারের ওপর নেমে আসা অপ্রত্যাশিত চাপ আর হতাশাকে দূর করেছে একটি সংবাদ। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় প্রতিমা মুন্ডার পড়াশোনা ও খেলাধুলা থমকে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল মাত্র ৪৭ হাজার টাকার জন্য। প্রথম আলোয় প্রতিবেদন প্রকাশের পর মিলেছে সহযোগিতা, পরিশোধ হয়ে গেছে বিকেএসপির বকেয়া।
এতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন প্রতিমার মা সুনিতা মুন্ডা। তাঁদের ওপর থেকে নেমে গেছে বড় ধরনের আর্থিক চাপ।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেএসপি প্রতিমার অভিভাবককে পাঠানো চিঠিতে জানিয়েছিল, তাঁদের মেয়ের বকেয়া বেতন ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা। সেই চিঠিতেই সতর্ক করে বলা হয়, ছয় মাসের বেশি বেতন বকেয়া থাকলে চূড়ান্ত সতর্কীকরণ, আর ১২ মাসের বেশি বকেয়া থাকলে বহিষ্কারের বিধান আছে। অর্থাভাবে যখন অনিশ্চিত হয়ে উঠেছিল প্রতিমার ভবিষ্যৎ, ঠিক সেই সময় ১১ অক্টোবর প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয় তাঁদের পরিবারের সংগ্রামের গল্প।
আরও পড়ুনবকেয়া বেতন চেয়ে বিকেএসপির চিঠি, ফুটবলার প্রতিমার পড়াশোনা বন্ধের পথে ১১ অক্টোবর ২০২৫প্রতিবেদনটি পাঠকের হৃদয়ে নাড়া দেয়। কিশোর আলোর পক্ষ থেকে প্রতিমার বকেয়া পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই দিনই বিকেলে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে গিয়ে প্রথম আলোর সাতক্ষীরার নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি প্রতিমা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে নেওয়া হয় এই উদ্যোগ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যবসায়ী সহায়তা করেন আরও ১০ হাজার টাকা। তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপা রানী সরকার দেন পাঁচ হাজার টাকা ও একটি ফুটবল।
সহায়তা পেয়ে স্বস্তি ফিরেছে পরিবারে। মুঠোফোনে প্রতিমা বলেন, ‘এখন আর কোনো অনিশ্চয়তা নেই। বিকেএসপির পাওনা ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা পরিশোধ করে দিয়েছি। আমি ভালো আছি, মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা আর অনুশীলন করছি।’
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার প্রতিমা মুন্ডা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে কিশোর আলোর পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়