ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা আর উৎসবমুখর পরিবেশে শেষ হয়েছে কেএসআরএম ফুটবল টুর্নামেন্ট (কেএফটি সিজন-২)।

শনিবার টুর্নামেন্টের ফাইনালে অংশ নেয় কেএসএল ফাইটার্স ও ইলেকট্রো এলিট। ১-০ গোলে ভাগ্য নির্ধারণ হয় বিজয়ী দল কেএসএল ফাইটার্সের।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি নগরীর হালিশহর কেএসআরএম ফুটবল কমপ্লেক্সের টার্ফে টুর্নামেন্টের উদ্বোধন হয়। সেই থেকে প্রতিদিন চলে টুর্নামেন্টের খেলা।

কেএসআরএমের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট থেকে গঠিত ২৮টি ফুটবল টিম অংশ নিয়ে খেলেন ৫২টি ম্যাচ। প্রথম রাউন্ডে ৩২ ম্যাচ, দ্বিতীয় রাউন্ড বা নকআউট পর্বে অনুষ্ঠিত হয় ১৬ ম্যাচ, কোয়াটার ফাইনাল ৮ ম্যাচ, সেমিফাইনালে ৪ ম্যাচ, তৃতীয় স্থান নির্ধারণী এবং ফাইনাল ম্যাচ।

তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে গতবারের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন মার্কেটিং ভাইকিংসকে ২-০ গোলে পরাজিত করে জয় নিশ্চিত করে নেন শকওয়েভ স্কোয়াড।

ফাইনাল ম্যাচে দুই দলই কেএসএল ফাইটার্স এবং ইলেকট্রো এলিট দক্ষতা ও নৈপুণ্য দেখাতে সক্ষম হয়। টার্ফের চারপাশে ছিল ব্যাপক দর্শকের উপস্থিতি। তাদের দফায় দফায় ভুভুজেলার ধ্বনি, মুহুর্মুহু করতালি ও টানটান উত্তেজনা ছিল ম্যাচজুড়ে। টিমের খেলোয়াড়দের উৎসাহিত করতে এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানে মাঠে সার্বক্ষণিক উপস্থিত ছিলেন ম্যাচ পরিচালনাকারী ১১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি এবং তাদের সহযোগী সদস্যরা।

আরো উপস্থিত ছিলেন কেএসআরএমের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক নবাব সিরাজ-উদ্-দৌলা, সেলিম উদ্দিন, করিম উদ্দিন, সরওয়ার জাহানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

ফাইনাল উদযাপনে উপব্যাবস্থাপনা পরিচালক সারওয়ার জাহান গান পরিবেশন করে সবাইকে উজ্জীবিত করেন। যা জয় উদযাপনে নতুন মাত্রা যোগ করে। টুর্নামেন্টের থিম সং লিখেন কেএসআরএম মার্কেটিং বিভাগের করপোরেট সেলস ম্যানেজার মুশফিকুর রহমান।

পরবর্তীতে প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থান অর্জনকারী প্রত্যেক খেলোয়াড়দের হাতে তুলে দেওয়া হয় বিভিন্ন পুরস্কার, সম্মাননা পদক এবং নগদ অর্থ। বিচারকরা টুর্নামেন্টে সেরা খেলোয়াড় এবং সর্বোচ্চ গোলদাতা নির্বাচন করেন বিজয়ী দল কেএসএল ফাইটার্সের সজিবকে এবং সেরা গোলরক্ষক নির্বাচিত হন শকওয়েভ স্কোয়াডের তারেক।

পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে আতশবাজি ফোটানোর মধ্য দিয়ে বিজয় উদযাপন করা হয়। কেএসআরএমের ব্যবস্থাপনা পর্ষদ সুশৃঙ্খল ও সুন্দর আয়োজনের জন্য টুর্নামেন্ট পরিচালনা কমিটিকে ধন্যবাদ জানান।

উপব্যবস্থপনা পরিচালক নবাব সিরাজ-উদ্-দৌলা বলেন, “কেএসআরএম ব্যবসার পাশাপাশি সামাজিক উন্নয়ন ও খেলাধুলার মাধ্যমে কর্মীদের দক্ষতা এবং ইতিবাচক মনোজাগতিক পরিবর্তনে বদ্ধপরিকর। সেই ধারাবাহিকতায় এ ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন।”

এমন আয়োজন আগামীতে অব্যাহত থাকবে বলেও আভাস দিয়েছেন কেএসআরএম ব্যবস্থাপনা পর্ষদ।

ঢাকা/সাজ্জাদ/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক এসআরএম ব যবস থ ফ টবল ট ফ ইন ল

এছাড়াও পড়ুন:

বারসিকের গবেষণা: রাজশাহীর ৯৯ ভাগ দোকানেই মিলছে নিষিদ্ধ কীটনাশক

রাজশাহীর ৯৯ ভাগ কীটনাশকের দোকানেই পাওয়া যাচ্ছে নিষিদ্ধ কীটনাশক ও বালাইনাশক। সরকার নিষিদ্ধ করে রাখলেও নানা নামে এসব কীটনাশক বাজারজাত করা হচ্ছে। ফলে পরিবেশ, প্রকৃতি ও জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ছে। শতকরা ৯৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ ব্যবহারকারীই জানেন না এগুলো নিষিদ্ধ এবং বিপজ্জনক।

চলতি বছর রাজশাহীতে ‘জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব বিষয়ক মাঠপর্যায়ে অনুসন্ধানমূলক সমীক্ষা’ শীর্ষক এক গবেষণায় এমন চিত্র উঠে এসেছে। সমীক্ষাটি করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক। 

বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে রাজশাহী নগরের একটি হোটেলের কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলন করে গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়ক শহিদুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রাজশাহীর আটটি উপজেলার ১৯টি কৃষিপ্রধান গ্রামাঞ্চলে মাঠপর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ, ভুক্তভোগীদের কেস স্টাডি, স্থানীয় কীটনাশক ডিলার, দোকানদার, পরিবেশক এবং উপজেলা পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে সমীক্ষাটি করা হয়েছে।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, নিষিদ্ধ কীটনাশক ব্যবহার করে শতকরা ৬৮ শতাংশ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আর কীটনাশকের ৯৯ ভাগ দোকানেই দেশে নিষিদ্ধ কীটনাশক পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন নামে। এসব নাম দেখে বোঝার উপায় নেই এটি নিষিদ্ধ, বোতলের গায়ে নিচের দিকে জেনেরিক নাম খুব ছোট করে লেখা থাকে। 

বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ যেসব কীটনাশক এখনো পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো হলো- জিরো হার্ব ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট), ফুরাডান ৫জি (কার্বোরাইল), এরোক্সান ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট), গ্যাস ট্যাবলেট (অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড), কার্বোফোরান ৩ জিএসিআই (কার্বোফোরান), ইঁদুর মারা বিষ (বডিফ্যাকোয়াম) ও তালাফ ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট)। এই প্যারাকোয়াট বা ঘাস মারা বিষ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। অনেকে এগুলো আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে পান করেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে কিডনি নষ্ট হয়ে তারা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাজারে অহরহ এসব নিষিদ্ধ কীটনাশক পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু সরকারের কোনো তদারকি নেই। এসব নিষিদ্ধ কীটনাশক ব্যবহার করে কৃষক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে। নিষিদ্ধ কীটনাশক কীভাবে বাজারে বিক্রি হয়, কৃষি বিভাগের দায়িত্ব কী সে বিষয়েও সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রশ্ন তোলা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে নিষিদ্ধ কিছু কীটনাশকও আনা হয়। এগুলো যে দোকান থেকে কেনা হয়েছে তার রশিদও দেখানো হয়। এসব দেখিয়ে বারসিকের নির্বাহী পরিচালক পাভেল পার্থ বলেন, “এগুলো তো বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। আমরা কিনেছি। রশিদও আছে। এগুলো নিষিদ্ধ। আমরা এগুলো হাজির করতে বাধ্য হয়েছি। এই গবেষণা একটি ফৌজদারি অপরাধকে খুঁজে পেয়েছে।”

সংবাদ সম্মেলনে বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে নিষিদ্ধ কীটনাশকের ব্যবহার কঠোরভাবে বন্ধ করা,  কীটনাশক আইন ও বিধি প্রয়োগ করা, কীটনাশক সম্পর্কিত স্বাস্থ্য তথ্য নিবন্ধন করা, কীটনাশকের ফলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণের জন্য তহবিল গঠন করার সুপারিশ করা হয়।

ঢাকা/কেয়া/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বারসিকের গবেষণা: রাজশাহীর ৯৯ ভাগ দোকানেই মিলছে নিষিদ্ধ কীটনাশক