চসিকের লোগোতে নৌকা বাদ, যুক্ত শাপলা
Published: 24th, February 2025 GMT
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) লোগো থেকে নৌকা প্রতীক বাদ দেওয়া হয়েছে। এরস্থলে জাতীয় ফুল শাপলার প্রতীক যুক্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে চসিকের ফেসবুক পেইজে লোগোটি প্রকাশ করা হয়। এতদিন চসিকের লোগেতে পাহাড়, নদী, নদীতে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী সাম্পান ও সড়ক বাতি ছিল। নতুন লোগোতে নৌকা বাদ দিয়ে শাপলা যুক্ত করা হয়েছে। বাকিগুলো আগের মতো আছে। নৌকা একটি দলের প্রতীক হওয়ায় বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিটি মেয়র ডা.
তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনের লোগোর মধ্যে নৌকা ছিল। যা একটি দলের দলীয় প্রতীক। তাই দায়িত্ব নেওয়ার পর লোগো থেকে নৌকা বাদ দিয়ে সার্বজনীন প্রতীক হিসেবে জাতীয় ফুল শাপলা প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে লোগো পরিবর্তন করা হয়েছে।
২০২৪ সালের ১ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে রায় দেন আদালত। এরপর একই বছরের ৩ নভেম্বর মেয়র হিসেবে শপথ নেন তিনি। ৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব নেন তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিটি করপোরেশনের এক কর্মকর্তা বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর মেয়র সিটি করপোরেশনের লোগো থেকে নৌকা বাদ দিয়ে নতুন করে লোগো তৈরির করার নির্দেশনা দেন। নির্দেশনা অনুযায়ী জাতীয় ফুল শাপলা রেখে নতুন করে লোগো তৈরি করা হয়েছে। মেয়র তা অনুমোদন দিয়েছেন।
২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী নৌকা প্রতীকে ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৪৮ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন ৫২ হাজার ৪৮৯ ভোট পান। ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে নয়জনকে বিবাদী করে মামলা করেন ডা. শাহাদাত হোসেন। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আদালতের রায়ে তিনি মেয়র নির্বাচিত হন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে
বাংলাদেশে বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ১৯ দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে দিয়ে দেশে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশের প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থার প্রতিফলন দেখা গেছে।
বিশ্বব্যাংকের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সম্প্রতি যেসব দেশে গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে, সেসব দেশে পরবর্তী এক বছরে এফডিআই উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় ২০২২ সালের পর এফডিআই কমেছে ১৯.৪৯ শতাংশ, চিলিতে ২০১৯ সালের পর কমেছে ১৫.৬৮ শতাংশ, সুদানে ২০২১ সালের পর ২৭.৬০ শতাংশ, ইউক্রেনে ২০১৪ সালের পর ৮১.২১ শতাংশ, মিশরে ২০১১ সালের পর ১০৭.৫৫ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ায় ১৯৯৮ সালের পর ১৫১.৪৯ শতাংশ কমেছে। এই ধারাবাহিক হ্রাসের মধ্যে বাংলাদেশে এফডিআইর ১৯.১৩ শতাংশ বৃদ্ধির চিত্র বিশেষভাবে নজরকাড়া।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গুণ হলো—শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অর্থনীতিকে পুনরায় চালু করার অদ্ভুত ক্ষমতা। এই পরিসংখ্যান তার দারুন একটা প্রতিফলন। সাধারণত, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যায়, কিন্তু আমরা উল্টা দেখছি। সঠিক নীতি নির্ধারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার আন্তরিকতা এবং প্রাইভেট সেক্টরের অদম্য স্পৃহা কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। আমরা সব সময় বিনিয়োগকারীদের সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। সব সমস্যার সমাধান হয়নি, তবে সদিচ্ছার কোনো ত্রুটি ছিল না। শিগগিই সারা বছরের একটি আমলনামা (রিপোর্ট কার্ড) প্রকাশ করা হবে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪৮৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৩ সালে বিনিয়োগের পরিমাণ হয় ৯২৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, তবে ২০২৪ সালে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬৭৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই ধারা বজায় থাকা অত্যন্ত ইতিবাচক। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারবে বলে মনে করছেন তারা।
ঢাকা/নাজমুল/রফিক