গাইবান্ধা বাণিজ্য মেলায় ছুরিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন নেতা আহত, থানা ঘেরাও
Published: 25th, February 2025 GMT
গাইবান্ধায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন ছাত্র আহত হয়েছেন। সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে শহরের স্বাধীনতা প্রাঙ্গণ মাঠে বাণিজ্য মেলায় এই হামলার ঘটনা ঘটে।
আহতদের গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে গাইবান্ধা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক শরিফুল ইসলাম আকাশের অবস্থা বেশি গুরুতর। অপর আহত দুজন হলেন, মেহেদী হাসান ও যুগ্ম সদস্য সচিব শেফাউর রহমান।
এই ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে শহরের ডিবি রোডে বিক্ষোভ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। পরে রাত ১২টার দিকে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে গাইবান্ধা সদর থানা ঘেরাও করে রাখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শতাধিক নেতাকর্মী।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহত ছাত্রনেতা, পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শহরের স্বাধীনতা প্রাঙ্গণ মাঠে মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলার শেষ দিন ছিল সোমবার। ওইদিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে শরিফুল ইসলাম আকাশ, মেহেদী হাসান ও শেফাউর রহমান মেলায় বেড়াতে যান। এ সময় একটি দোকানে এক নারীকে হেনস্তা করা হচ্ছিল দেখে শরিফুল ইসলামসহ ছাত্র নেতারা বাধা দেন। এ ঘটনায় একদল দুর্বৃত্ত তাদের ওপর হামলা চালায়। তাদের এলোপাতাড়ি কোপানো হয়। এতে শরিফুল ইসলামসহ তিনজন গুরুতর আহত হন। শরিফুল ইসলাম আকাশের অবস্থা গুরুতর। তার পেটের একটু উপর থেকে প্রায় ৫০টির মতো সেলাই পড়েছে। অন্য দুইজনকেও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাইবান্ধা জেলা শাখার আহ্বায়ক মাসুদ মিয়া বলেন, ‘ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমনের একটি ন্যক্কারজনক প্রচেষ্টা।’
তিনি আরও বলেন, ‘সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে এতক্ষণে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা উচিত ছিল। অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত আমরা থানা ঘেরাও করে রাখবো।’
থানা ঘেরাও: এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদ এবং হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে রাত ১২টা থেকে গাইবান্ধা সদর কার্যালয় ঘেরাও করে রাখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শতাধিক নেতাকর্মী। তারা থানার সামনে বসে স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় তারা স্লোগান দেন, ‘দুর্বল প্রশাসন, লজ্জা লজ্জা’। রাত দেড়টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানা ঘেরাও কর্মসূচি অব্যাহত ছিল।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা পুলিশ সুপার নিশাত এঞ্জেলা বলেন, ‘আসামিদের গ্রেপ্তার করতে আমরা সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে। দ্রুত হামলাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে। ছাত্রদের শান্ত করার চেষ্টা করা চলছে।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঘ র ও কর ন ত কর র আহত
এছাড়াও পড়ুন:
সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না, মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন: সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, 'আমাদের একটা অভ্যাস হয়ে গেছে একটা নেতিবাচক সংবাদ দেখলেই যাচাই-বাছাই না করে শেয়ার করে দেওয়া হয়। অত্যন্ত ভিত্তিহীন সংবাদও আমরা শেয়ার করে দেই।'
সিইসি বলেন, 'দয়া করে সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না। এই মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন। তথ্যটা যেন আগে যাচাই করে তারপরে শেয়ার করেন।'
আজ সোমবার রাজধানীর ভাটারায় আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নে (এজিবি) এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন সিইসি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভুয়া সংবাদের প্রচার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপপ্রয়োগ রোধে করণীয় সম্পর্কে তিনি এসব কথা বলেন।
থানা আনসার কোম্পানি/প্লাটুন সদস্যদের আনসার মৌলিক প্রশিক্ষণের (৪র্থ ধাপ) সমাপনী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিইসি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো সংবাদ দেখা মাত্রই নাগরিকদের যাচাইবাছাই করতে আহ্বান জানান সিইসি। নিশ্চিত হওয়ার আগে শেয়ার না করতে বলেন তিনি।
জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে আনসার ভিডিপির ভূমিকাকে মূল শক্তি বলে উল্লেখ করেন সিইসি। তিনি বলেন, 'এনারাই অধিক সংখ্যায় নিয়োজিত থাকেন। এবং আমাদের হিসেব করতে গেলে প্রথম এদেরকেই হিসেব করতে হয় যে, কতজন আনসার ভিডিপি সদস্য আমরা মোতায়েন করতে পারব। মূল কাজটা আঞ্জাম (সম্পাদন) দিতে হয় কিন্তু আনসার এবং ভিডিপির সদস্যদের।'
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। নির্বাচনকালীন জনগণের নিরাপত্তা, ভোট কেন্দ্রের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা এবং সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণে আনসার বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে বলে জানান তিনি। নির্বাচনে দেশজুড়ে প্রায় ৬ লাখ আনসার ও ভিডিপি সদস্য দায়িত্বপালন করবেন বলেন মহাপরিচালক।
অনুষ্ঠানে মহড়ায় ঢাকা মহানগর আনসারের চারটি জোনের অধীন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৩২০ জন আনসার ও ভিডিপি সদস্য অংশ নেন। আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা টহল, দায়িত্ব বণ্টন ও জরুরি প্রতিক্রিয়া অনুশীলনে অংশ নেন।
মহড়ায় ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জামাদি নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া, ভোটারদের শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে ভোট প্রদানে সহায়তা, জাল ভোট প্রতিরোধ, প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা এবং সেনা, বিজিবি, র্যাব ও পুলিশের সঙ্গে দ্রুত সমন্বয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন জোনের অধিনায়ক এবং প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।