গোদনাইল মেঘনা ডিপোতে আসলাম মন্ডলের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ৪
Published: 1st, March 2025 GMT
সিদ্ধিরগঞ্জে গোদনাইল মেঘনা ডিপোতে শ্রমিকদল নেতা এস.এম আসলাম মন্ডলের দুই গ্রুপে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় সংঘর্ষে কমপক্ষে ৪ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে সেনাবাহিনী ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ।
শনিবার (১ মার্চ) দুপুরে গোদনাইল মেঘনা ডিপোর সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলায় জড়িয়ে পড়ে জানায় ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা। পরে পুলিশ গিয়ে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্টের পর গোদনাইল মেঘনা ডিপোর নিয়ন্ত্রণ নেন নাসিকের সাবেক কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের সভাপতি মতির ঘনিষ্ঠ সহযোগী নারায়ণগঞ্জ মহানগর শ্রমিক দলের আহবায়ক এস.
তার নেতৃত্বে তার লোকজন ডিপো কেন্দ্রীক বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়ে। গাড়িপ্রতি ৫০০/১০০০ টাকা করে নেয়া হয় আগে পরে সিরিয়ালের নামে। এ নিয়ে সাধারণ শ্রমিক ও ট্যাংকলড়ী মালিকদের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভ বিরাজ করছিল।
শনিবার ডিপোতে নিয়ম না মেনে গাড়ীর সিরিয়াল আগে দেয়াকে কেন্দ্র করে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে আসলাম মন্ডল গ্রুপের জাহাঙ্গীর, আসিফ, মোক্তার, আনোয়ার, মোখলেস, মিজান দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
এসময় সংঘর্ষে রুবেল (২৫), রনি (৩৮), হিরু (৩৫) গুরুতর আহত হন। এসময় আহতদের উদ্ধার করে খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনুর আলম জানান, ট্যাঙ্কলরীর সিরিয়াল দেওয়ার মত তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়েছে।সেনাবাহিনীর টিম ও আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।
এক পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া ডিপো কেন্দ্রীক সকল ধরনের চাঁদাবাজি বন্ধের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ স ঘর ষ ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ থ ন স ঘর ষ আসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস