গণপিটুনিতে নিহত ডাকাতের মরদেহ নদীতে উদ্ধার
Published: 2nd, March 2025 GMT
গণপিটুনির পর নিখোঁজ ডাকাতের মরদেহ মাদারীপুরের কীর্তিনাশা নদীতে ভেসে উঠেছে। এই মরদেহ নিয়ে গণপিটুনিতে নিহত ডাকাতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪ জনে। রবিবার (২ মার্চ) বিকালে মাদারীপুর সদর উপজেলার বিদ্যাবাগিস এলাকার কীর্তিনাশা নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে তার পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের বিদ্যাবাগিস এলাকার কীর্তিনাশা নদীতে একটি মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ময়নাতদেন্তর জন্য পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় রুবেল জানান, তিনি নদীতে হাত-পা ধুতে গিয়ে মরদেহ ভাসতে দেখেন। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করেছে।
আরো পড়ুন:
বগুড়ায় বাড়িতে ঢুকে সাবেক স্ত্রী ও শাশুড়িকে কুপিয়ে হত্যা
জামালপুরে ট্রেন থেকে মরদেহ উদ্ধার
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে মাদারীপুর-শরিয়তপুর দুই জেলার সীমানাবর্তী এলাকা খোয়াজপুর-টেকেরহাট বন্দরে স্পিডবোট নিয়ে ডাকাতি করতে আসে একদল দুর্বৃত্ত। স্পিডবোটে অস্ত্র নিয়ে বালুবাহী জাহাজে ডাকাতির চেষ্টায় তারা। বিষয়টি টের পেয়ে তাদের ধাওয়া দেয় এলাকাবাসী। ঘটনাস্থল থেকে হাতবোমা ফাটিয়ে দ্রুত সটকে পড়ার চেষ্টা করে ডাকাতরা। পরে ইটপাটকেল ছুঁড়লে ডাকাতরা এলাকাবাসীর উপর গুলি করে। এতে আহত হয় অন্তত ৮ জন। এ খবর আশপাশে ছড়িয়ে পড়লে একাধিক ট্রলার নিয়ে ডাকাতদের আবারো ধাওয়া দেয় স্থানীয়রা। পরে কীর্তিনাশা নদীর শরিয়তপুরের তেঁতুলয়িা এলাকায় গতিরোধ করে তাদের আটকে গণপিটুনি দেয় স্থানীয়রা। খবর পেয়ে গুরুতর অবস্থায় ৭ ডাকাতকে উদ্ধার করে ভর্তি করা হয় শরীয়তপুর জেলা সদর হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুইজন মারা যায় এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে একজন মারা যায়। তাদের মধ্যে নিহত রিপনের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের কালিরচর এলাকায় ও আনোয়ার দেওয়ানের বাড়ি শরিয়তপুরের জাজিরায়। অন্য দুজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ঢাকা/বেলাল/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মরদ হ ম দ র প র সদর গণপ ট ন
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।