চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় গণপিটুনিতে দুই ব্যক্তি নিহত হওয়ার পর এলাকায় এখন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। প্রয়োজন ছাড়া লোকজন ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছেন না। আজ বুধবার দুপুরে উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা এলাকায় এমন অবস্থা দেখা গেছে।

গত সোমবার রাতে উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় মসজিদের মাইকে ডাকাত এসেছে ঘোষণা দিয়ে দুই ব্যক্তিকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ওই দুজন নিহত হন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের মধ্যম কাঞ্চনা এলাকার মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন (৪৫) এবং একই ইউনিয়নের গুরগুরি এলাকার মোহাম্মদ ছালেক (৩৫)। নিহত দুজন স্থানীয়ভাবে জামায়াতে ইসলামীর সক্রিয় কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এ ঘটনায় স্থানীয় এক দোকানিসহ চার ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

আজ বেলা তিনটার দিকে ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সড়কের পাশের অধিকাংশ দোকান বন্ধ। রাস্তায় লোকজনের চলাচল কম। ওই এলাকার বয়স্ক দোকানি মোহাম্মদ ইউনুস প্রথম আলোকে বলেন, বন্ধ দোকানগুলোর সামনেই দুজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এর আগে স্থানীয় এক দোকানিসহ চারজন গুলিবিদ্ধ হন। প্রতিদিন এই সময় ওই এলাকায় দোকানগুলোয় জমজমাট বেচাকেনা চলে। তবে আজ কাউকে দেখা যায়নি। সড়কও ছিল ফাঁকা। ঘটনার পর থেকে মানুষজন প্রয়োজন ছাড়া বাইরে আসছেন না।

এলাকার বাসিন্দা আবু সৈয়দ প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার পর থেকে মানুষজন আতঙ্কে ছিলেন। সোমবার রাতের ঘটনার পর থেকে মানুষজন তেমন একটা ঘর থেকে বাইরে বের হননি। আজ থেকে অল্পস্বল্প মানুষ প্রয়োজনে ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছেন। তারপরও মানুষের মধ্যে আতঙ্ক শেষ হচ্ছে না।

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

জাহেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটা বড় ঘটনার পর স্বাভাবিকভাবেই এলাকায় একটু থমথমে অবস্থা বিরাজ করবে। তবে ওই এলাকায় এখন সার্বক্ষণিক পুলিশের উপস্থিতি আছে। আশা করছি, পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।’

ওসি মো. জাহেদুল ইসলাম আরও বলেন, গণপিটুনিতে দুই ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় থানায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। তারপরও পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঘটন র পর গণপ ট ন ই এল ক এল ক র এল ক য়

এছাড়াও পড়ুন:

সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না, মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন: সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, 'আমাদের একটা অভ্যাস হয়ে গেছে একটা নেতিবাচক সংবাদ দেখলেই যাচাই-বাছাই না করে শেয়ার করে দেওয়া হয়। অত্যন্ত ভিত্তিহীন সংবাদও আমরা শেয়ার করে দেই।'

সিইসি বলেন, 'দয়া করে সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না। এই মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন। তথ্যটা যেন আগে যাচাই করে তারপরে শেয়ার করেন।'

আজ সোমবার রাজধানীর ভাটারায় আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নে (এজিবি) এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন সিইসি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভুয়া সংবাদের প্রচার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপপ্রয়োগ রোধে করণীয় সম্পর্কে তিনি এসব কথা বলেন।

থানা আনসার কোম্পানি/প্লাটুন সদস্যদের আনসার মৌলিক প্রশিক্ষণের (৪র্থ ধাপ) সমাপনী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিইসি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো সংবাদ দেখা মাত্রই নাগরিকদের যাচাইবাছাই করতে আহ্বান জানান সিইসি। নিশ্চিত হওয়ার আগে শেয়ার না করতে বলেন তিনি।

জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে আনসার ভিডিপির ভূমিকাকে মূল শক্তি বলে উল্লেখ করেন সিইসি। তিনি বলেন, 'এনারাই অধিক সংখ্যায় নিয়োজিত থাকেন। এবং আমাদের হিসেব করতে গেলে প্রথম এদেরকেই হিসেব করতে হয় যে, কতজন আনসার ভিডিপি সদস্য আমরা মোতায়েন করতে পারব। মূল কাজটা আঞ্জাম (সম্পাদন) দিতে হয় কিন্তু আনসার এবং ভিডিপির সদস্যদের।'

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। নির্বাচনকালীন জনগণের নিরাপত্তা, ভোট কেন্দ্রের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা এবং সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণে আনসার বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে বলে জানান তিনি। নির্বাচনে দেশজুড়ে প্রায় ৬ লাখ আনসার ও ভিডিপি সদস্য দায়িত্বপালন করবেন বলেন মহাপরিচালক।

অনুষ্ঠানে মহড়ায় ঢাকা মহানগর আনসারের চারটি জোনের অধীন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৩২০ জন আনসার ও ভিডিপি সদস্য অংশ নেন।  আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা টহল, দায়িত্ব বণ্টন ও জরুরি প্রতিক্রিয়া অনুশীলনে অংশ নেন।

মহড়ায় ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জামাদি নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া, ভোটারদের শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে ভোট প্রদানে সহায়তা, জাল ভোট প্রতিরোধ, প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা এবং সেনা, বিজিবি, র‍্যাব ও পুলিশের সঙ্গে দ্রুত সমন্বয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন জোনের অধিনায়ক এবং প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ