সাতকানিয়ায় গণপিটুনির ঘটনার পর এলাকার পরিস্থিতি এখন যেমন
Published: 5th, March 2025 GMT
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় গণপিটুনিতে দুই ব্যক্তি নিহত হওয়ার পর এলাকায় এখন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। প্রয়োজন ছাড়া লোকজন ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছেন না। আজ বুধবার দুপুরে উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা এলাকায় এমন অবস্থা দেখা গেছে।
গত সোমবার রাতে উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় মসজিদের মাইকে ডাকাত এসেছে ঘোষণা দিয়ে দুই ব্যক্তিকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ওই দুজন নিহত হন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের মধ্যম কাঞ্চনা এলাকার মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন (৪৫) এবং একই ইউনিয়নের গুরগুরি এলাকার মোহাম্মদ ছালেক (৩৫)। নিহত দুজন স্থানীয়ভাবে জামায়াতে ইসলামীর সক্রিয় কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এ ঘটনায় স্থানীয় এক দোকানিসহ চার ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
আজ বেলা তিনটার দিকে ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সড়কের পাশের অধিকাংশ দোকান বন্ধ। রাস্তায় লোকজনের চলাচল কম। ওই এলাকার বয়স্ক দোকানি মোহাম্মদ ইউনুস প্রথম আলোকে বলেন, বন্ধ দোকানগুলোর সামনেই দুজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এর আগে স্থানীয় এক দোকানিসহ চারজন গুলিবিদ্ধ হন। প্রতিদিন এই সময় ওই এলাকায় দোকানগুলোয় জমজমাট বেচাকেনা চলে। তবে আজ কাউকে দেখা যায়নি। সড়কও ছিল ফাঁকা। ঘটনার পর থেকে মানুষজন প্রয়োজন ছাড়া বাইরে আসছেন না।
এলাকার বাসিন্দা আবু সৈয়দ প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার পর থেকে মানুষজন আতঙ্কে ছিলেন। সোমবার রাতের ঘটনার পর থেকে মানুষজন তেমন একটা ঘর থেকে বাইরে বের হননি। আজ থেকে অল্পস্বল্প মানুষ প্রয়োজনে ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছেন। তারপরও মানুষের মধ্যে আতঙ্ক শেষ হচ্ছে না।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
ওসি মো. জাহেদুল ইসলাম আরও বলেন, গণপিটুনিতে দুই ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় থানায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। তারপরও পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ঘটন র পর গণপ ট ন ই এল ক এল ক র এল ক য়
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।