১৪ কেজি সোনাসহ অভিনেত্রী গ্রেপ্তার: মুখ খুললেন পুলিশ অফিসার বাবা
Published: 6th, March 2025 GMT
কয়েক দিন আগে সোনা চোরাচালানের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে কন্নড় সিনেমার অভিনেত্রী রান্যা রাওকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের রাজস্ব গোয়েন্দা অধিদপ্তর (ডিআরআই)। তার কাছ থেকে ১৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা মূল্যের সোনা উদ্ধার করা হয়েছে।
রান্যা রাওয়ের বাবা সিনিয়র আইপিএস অফিসার কে. রামচন্দ্র রাও। বর্তমানে কর্নাটক পুলিশের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তবে রামচন্দ্র রাও এ অভিনেত্রীর সৎবাবা। রান্যা গ্রেপ্তার হওয়ার পর স্বাভাবিক কারণে আলোচনায় উঠে এসেছেন পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। নিজের অবস্থানও ব্যাখ্যা করেছেন তিনি।
ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে রামচন্দ্র রাও বলেন, “মিডিয়াতে এ ধরনের খবর দেখে হতবাক এবং বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলাম। এসব বিষয়ে কিছুই জানতাম না। অন্য যেকোনো বাবার মতো আমিও বিস্মিত হয়েছিলাম। সে (রান্যা) আমাদের সঙ্গে থাকে না। সে তার স্বামীর সঙ্গে অন্যত্র বসবাস করে। পারিবারিক কারণে তাদের সঙ্গে কিছু সমস্যা রয়েছে।”
আরো পড়ুন:
১৬ কোটি টাকার সোনাসহ অভিনেত্রী গ্রেপ্তার
জনপ্রিয় প্লেব্যাক গায়িকার আত্মহত্যার চেষ্টা
রান্যা গ্রেপ্তার হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা চর্চা শুরু হয়। অনেকে দাবি করেন, তার বাবা পুলিশের কর্তা ব্যক্তি, সুতরাং দুদিন পরেই বেরিয়ে আসবেন। এ বিষয়ে রামচন্দ্র রাও বলেন, “আইন তার নিজের গতিতে চলবে। আমার ক্যারিয়ারে কোনো কালো দাগ নেই। এ বিষয়ে আর কিছু বলতে চাই না।”
গত ৩ মার্চ রাতে বেঙ্গালুরুর কেম্পেগৌড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় রান্যাকে। দুবাই থেকে এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে আসেন অভিনেত্রী রান্যা রাও। বিমানবন্দরে অভিনেত্রীর কাছ থেকে ১৪.
কন্নড় সিনেমার পরিচিত মুখ ৩১ বছরের রান্যা রাও। বিভিন্ন দেশ ভ্রমণে যেতেন এই অভিনেত্রী। ঘন ঘন আন্তর্জাতিক ভ্রমণের কারণে ডিআরআই অভিনেত্রীকে নজরদারিতে রেখেছিল। বিশেষ করে গত ১৫ দিনে চারবার দুবাই যাওয়ায় তার প্রতি নজরদারি বৃদ্ধি করেন সংশ্লিষ্টরা।
রান্যার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে, কাস্টমস এবং নিরাপত্তা এড়িয়ে ভারতে মূল্যবান ধাতু পাচারের চেষ্টা করছিলেন তিনি। রান্যাকে ১৪ দিনের জুডিশিয়াল কাস্টডিতে রাখা হয়েছে, তদন্ত চলছে। অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে আরো গুরুতর অভিযোগ আনা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ঢাকা/শান্ত
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র মচন দ র র ও
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশ পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে: আইরিন খান
জাতিসংঘের মুক্তচিন্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাবিষয়ক বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার আইরিন খান বলেছেন, ‘আমাদের যে বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে, তার একটি হলো ঠিক এই মুহূর্তে বাংলাদেশ একটি স্বাভাবিক গণতন্ত্রের দেশ নয়। এখানে গণতন্ত্র চলছে না। কার্যত এটা পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে।’
টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউট (টিজিআই) আয়োজিত এক ওয়েবিনারে আইরিন খান এ কথা বলেন। বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে গত বুধবার ‘আইন থেকে অধিকার: বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক উত্তরণে ডিজিটাল স্বাধীনতার সুরক্ষা’ শীর্ষক এ ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয়। গতকাল রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ওয়েবিনারে বিদ্যমান ও নতুন সাইবার আইন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া এবং নাগরিকদের ওপর নজরদারিসহ ডিজিটাল সুশাসন-সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় ও উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা হয়। টিজিআই–এর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয়ভাবে নজরদারি সরঞ্জাম কেনার জন্য ১৯ কোটি ডলারের বেশি অর্থ ব্যয় করেছে।
ওয়েবিনারে সূচনা বক্তব্য দেন টিজিআই–এর নির্বাহী পরিচালক সাবহানাজ রশীদ দিয়া। গত বছরের জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর থেকে বাংলাদেশে বেশ কিছু সংস্কার হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। সাবহানাজ রশীদ বলেন, ‘আমরা দেখেছি, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মতো বিষয়গুলোর ব্যাপারে কিছু উল্লেখযোগ্য তদন্ত, কমিশন ও প্রক্রিয়া করা হয়েছে। কিন্তু একই সঙ্গে আমরা নির্বিচার গ্রেপ্তার হতেও দেখেছি।’
টিজিআই–এর নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘গত কয়েক মাসে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। অতীতে আমাদের বিশ্লেষণে আমরা দেখেছি, এই আইন বাংলাদেশে নজরদারির সবচেয়ে সহায়ক এবং একই সঙ্গে এটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য একটি বড় বাধা হিসেবে কাজ করেছে।’
আলোচনায় বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা খাতের বিষয়গুলো নিয়ে আইরিন খান বলেন, ‘আমাদের একটি অন্তর্বর্তী সরকার আছে, যার কর্তৃত্ব সীমিত। আমাদের একটি নিরাপত্তা খাত আছে; এই একটি মাত্র খাতে অভ্যুত্থান ও পরিবর্তনের কোনো প্রভাব পড়েনি। তাই এ ধরনের পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা খাতে সংস্কার নিশ্চিত করতে আমরা কী করতে পারি?’
জাতিসংঘের বিশেষ এই র্যাপোর্টিয়ার বলেন, ‘এই রূপান্তর বাস্তবায়নের জন্য নিরাপত্তা খাতকেই সহায়তা করতে এগিয়ে আসতে হবে (বর্তমান সরকারকে)। এখনো তাদের কাছে সব ধরনের (নজরদারি) সরঞ্জাম রয়েছে। আর সে কারণে পরবর্তী সরকারের নেতৃত্ব কে দেবে, তা নির্ধারণে অন্য সবার চেয়ে তাদের বাড়তি সুবিধা রয়েছে।’
পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ডিজিটাল পরিসরে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় বর্তমান সরকার কী করতে পারে, সে বিষয়ে আলোচনায় আইরিন খান বলেন, ‘ডিজিটাল নিয়ে ভাবুন। আমি মনে করি না, সরকার তা করছে। তবে অন্য সবাই ডিজিটাল নিয়ে ভাবছে। তাই সরকারের ডিজিটাল নিয়ে এবং ডিজিটাল পরিসরে কীভাবে কাজ করবে, সে বিষয়ে ভাবা দরকার। (ইন্টারনেট) কোম্পানিগুলোকে ডাকুন, তাদের সঙ্গে কথা বলুন এবং ডিজিটাল পরিসর কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা মানুষকে এবং রাজনৈতিক দলগুলোকেও বুঝতে দিন।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আর্টিকেল নাইনটিনের প্রোগ্রাম অফিসার ডায়নাহ ফন ডার গেস্ট বলেন, ‘আমি মনে করি, নজরদারি নিজে থেকে অবৈধ নয়। সর্বত্র রাষ্ট্রগুলোর জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অপরাধের তদন্ত করা এবং নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব রয়েছে। কিন্তু নজরদারি যখন ব্যাপক, অস্বচ্ছ ও অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যায়, তখন তা একটি বিপজ্জনক সীমা অতিক্রম করে।’
ওয়েবিনারে বলা হয়, বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, ডিজিটাল স্বাধীনতা যেমন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, তথ্যে প্রবেশাধিকার এবং অনলাইনে নাগরিকদের অংশগ্রহণ নিয়ে আলোচনা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি জরুরি হয়ে উঠেছে। এই প্রেক্ষাপটে সাইবার আইন ও এর প্রয়োগের ফলে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ; ডিজিটাল পরিসরে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করা এবং মানুষের অধিকার সুরক্ষায় সংস্কারের সম্ভাবনা নিয়ে এতে আলোচনা হয়েছে।