আচ্ছা ভাবুন তো, সারা সপ্তাহে নিশ্চিন্তে বাইক চালালেন, তেল নিয়ে টেনশন নেই এমনকি নেই প্রতিদিন হিসাব করে চার্জ দেয়ার টেনশন। সপ্তাহে মাত্র ১ বার চার্জ দিয়ে সারা সপ্তাহে প্রায় ১২০ কিলোমিটারের ও বেশি চলাচল করতে পারবেন। কিন্তু এটাও কি সম্ভব? হ্যাঁ সম্ভব। এডিসনের টেইলজি ই-মোটরসাইকেল নিয়ে এসেছে এই অবিশ্বাস্য সুযোগ।

বাংলাদেশে পরিবেশবান্ধব যানবাহনের প্রসারে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে এডিসন ও টেইলজি। এই দুই কোম্পানীর যৌথ উদ্যোগে শীঘ্রই বাংলাদেশে চালু হতে যাচ্ছে টেইলজি ব্র্যান্ডের ইলেকট্রিক মোটরসাইকেল যা দেশের পরিবহন ব্যবস্থাকে আরো টেকসই করতে এবং জ্বালানির উপর নির্ভরতা কমাতে সক্ষম হবে।

এডিসন: উদ্ভাবন ও উন্নয়নের পথিকৃৎ

২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এডিসন গ্রুপ বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান গুলোর একটি। প্রযুক্তি, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ, রিয়েল এস্টেট, ইলেকট্রনিক্সসহ নানা খাতে উদ্ভাবন ও উন্নয়নে ভূমিকা পালন করে আসছে এই প্রতিষ্ঠানটি।

এডিসন গ্রুপের শীর্ষ শিল্পখাতগুলির মধ্যে মোবাইলফোন, কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স, ই-কমার্স, জেনারেটর ও সাবস্টেশন, ফায়ার সেফটি এবং আইটি অন্যতম। গুণগতমান এবং উন্নত প্রযুক্তি তাদের অনন্য প্রতিশ্রুতি। প্রতিদিনের জীবনযাত্রা ও জাতীয় পর্যায়ের উন্নয়নে ১৭ বছরেরও বেশি সময় ধরে অবদান রেখে চলেছে এডিসন।

টেইলজি: ইলেকট্রিক যানবাহনের বিশ্বস্ত নাম

২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত টেইলজি গ্রুপ বৈদ্যুতিক যানবাহনের উন্নয়ন, উৎপাদন, বিক্রয় এবং সার্ভিসিংয়ে এক অনন্য নাম।

গ্লোবাল ইলেকট্রিক মোটরসাইকেল শিল্পে শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে অন্যতম ব্র্যান্ড টেইলজি। ইলেকট্রিক মোটরসাইকেল শিল্পে টেইলজি ৯০টিরও বেশি দেশে তাদের পন্য রপ্তানি করে আসছে। ফলশ্রুতিস্বরূপ, প্রতিষ্ঠানটি ইউএন সাসটেইনেবিলিটি পার্টনার, গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড (সর্বাধিক মাইলেজ অর্জনে) ও জার্মান রেড ডট অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে। এছাড়াও তাদের রয়েছে ২০০০ এরও বেশি নিজস্ব পেটেন্ট। টেইলজি’র একমাত্র লক্ষ্য পরিবেশবান্ধব ও টেকসই প্রযুক্তির মাধ্যমে যানবাহন শিল্পে বৈশ্বিক পরিবর্তন নিয়ে আসা।
গবেষণা ও উৎপাদন খাতেও বেশ অবদান রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি।  

বাংলাদেশে টেইলজি আনার লক্ষ্য: এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা

এডিসন বাংলাদেশে টেইলজি এসডিজি (সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস) অর্জনে অবদান রাখতে চায়। লক্ষ্য হল ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমন শূন্যের কোটায় নিয়ে আসা এবং ৩০% যানবাহনকে  ইলেকট্রিক যানবাহনে রূপান্তর করা যা বাংলাদেশের পরিবহন ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সহায়ক হবে।"এডিসন গ্রুপ এবং টেলজি গ্রুপের পার্টনারশিপ, একটি পরিবেশবান্ধব ও পরিবহনে দীর্ঘমেয়াদি ইকো-সিস্টেম তৈরি করতে সহযোগিতা করবে,  যা বাংলাদেশের উন্নয়নে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক”- এডিসন গ্রুপের চেয়াম্যান আমিনুর রশীদ।

কোন ধরনের মডেল নিয়ে আসছে টেইলজি?

Saibei (F71): এতে রয়েছে ১৫০০ ওয়াট মোটর এবং ৭২ ভোল্ট ৩৫ অ্যাম্পিয়ার গ্রাফিন ব্যাটারি। ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত রেঞ্জ এবং ৫৫ কিমি/ঘণ্টা সর্বোচ্চ গতি। ৬৮০ মিলিমিটার প্রশস্ত সিট।এতে রয়েছে ডাবল ডিস্ক ব্রেক ডিজাইন, যা উচ্চ গতিতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। আরও আছে ৫০,০০০ cd হাই-ব্রাইটনেস ডুয়াল-আই বায়োনিক হেডলাইট ও স্টাইলিশ ডিসপ্লে ড্যাশবোর্ড। সাইবেই (F71) মডেলের বাইক পেয়ে যাচ্ছেন আকর্ষণীয় অলিভ গ্রীণ ও স্টোন হোয়াইট কালারের মধ্যে।

Mengsu (R30): ১০০০ ওয়াট মোটর এবং ৬০ ভোল্ট ২৩ অ্যাম্পিয়ার গ্রাফিন ব্যাটারি। ৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত রেঞ্জ এবং ৪৫ কিমি/ঘণ্টা সর্বোচ্চ গতি। এই মডেলের বিশেষত্ব হলো নিরাপদ ব্রেকিং সিস্টেম এবং চমৎকার ডিজাইন। কমপ্যাক্ট সাইজ এবং লাইটওয়েট বডি সংকীর্ণ রাস্তায় সহজে চলাচলের সুবিধা দেয়। মেংসু (R30) মডেলের বাইক পেয়ে যাচ্ছেন আকর্ষণীয় গোস্ট হোয়াইট ও মেটালিক রেড কালারের মধ্যে।

ডিজাইনের দিক থেকেও  অনেক এগিয়ে টেইলজি। উল্লেখযোগ্য কিছু বৈশিষ্ট্য হল:

লং-রেঞ্জ ব্যাটারি: এতে ব্যাবহার করা হয়েছে গ্রাফিন ব্যাটারি প্রযুক্তি, যা ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরত্ব অতিক্রম করতে সক্ষম।

পাওয়ারফুল মোটর: দ্রুতগতি সম্পন্ন ।

এনার্জি ইফিশিয়েন্সি: রাস্তা যেমনই হোক, টেইলজি’র রয়েছে ৯৩% এনার্জি ইফিশিয়েন্সি যা যেকোনো রাস্তায় স্মুথলি চলতে সক্ষম। 

IPX6: এতে রয়েছে ওয়াটার প্রুফ টেকনোলজি যার ফলে ভারী বৃষ্টিপাতে বা জলাবদ্ধ রাস্তায় চলতেও কোনো সমস্যা হবেনা। 

ব্যবহারকারীরা কি কোনো সুবিধা পাবে?

১০০% পাবে। বয়স ১৮ হোক কিংবা ৫০, টেইলজি ই-মোটরসাইকেল ব্যবহার করতে পারবে সবাই। প্রতি কিলোমিটারে খরচ হবে মাত্র ১৫ পয়সা, যা সাধারণ বাইকের তুলনায় ৯৭% কম। চিন্তা করতে হবেনা অতিরিক্ত বিদ্যুৎ খরচ নিয়ে। দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত হোম চার্জিং সিস্টেমের মাধ্যমে দেয়া যাবে চার্জ। অন্যান্য ই-মোটরসাইকেলের তুলনায় এই মোটরসাইকেলের দাম তুলনামূলক সহজলভ্য। তাই কর্মজীবি, ছাত্র-ছাত্রী, নারী সহ যে কেউই স্বল্প দামে কেনার সুযোগ পাবে এই বাইকটি। 

মূল্য ও ওয়ারেন্টি সুবিধা

রমজান মাস উপলক্ষে টেইলজির ই-মোটরসাইকেলে রয়েছে অবিশ্বাস্য মূল্য ছাড়। বর্তমানে Saibei (F71) বাইকের দাম মাত্র ১,৩৯,৯৯০ টাকা যার রেগুলার প্রাইস (১,৪৯,৯৯০) টাকা। Mengsu (R30) বাইকের দাম ৯৯,৯৯০ টাকা যার রেগুলার প্রাইস (১,০৯,৯৯০) টাকা। অর্থাৎ এই রমজান উপলক্ষে টেইলজি’র যেকোনো বাইক কিনলেই থাকছে স্পেশাল ডিসকাউন্ট। শুধু তাই নয় বাইক কেনার সাথে সাথে গ্রাহকরা গিফট হিসেবে পেয়ে যাবেন আকর্ষণীয় ১টি হেলমেট। টেইলজি ই-মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীরা পেয়ে যাবেন ২ বছরের সার্ভিস ওয়ারেন্টি এবং ১৮ মাসের ব্যাটারি পরিবর্তনের ওয়ারেন্টি। এমনকি ব্যবহারকারীরা পেয়ে যাচ্ছেন ৮টি সার্ভিস যার মধ্যে ৪টি আবার সম্পূর্ণ ফ্রি আর প্রতিটি শোরুমের সাথে আছে কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট, ফলে সার্ভিস নিয়ে  নেই কোনো ভাবনা।

অনুমোদন ও রেজিস্ট্রেশন সুবিধা

টেইলজির ই-মোটরসাইকেলগুলো বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) দ্বারা পরীক্ষিত এবং বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) দ্বারা অনুমোদিত। কেনার সময় কোনোরকম ঝামেলা ছাড়াই ব্যবহারকারীরা রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। তাহলে আর দেরী কেন? এই রমজানেই নিজের করে নিন আপনার স্বপ্নের বাইক, স্বপ্ন পূরণ হোক টেইলজির সাথে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

তিনভাবে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান আর্থিক ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে

সরকারের ওপর তিনভাবে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো মাঝারি মাত্রায় আর্থিক ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে বলে মত প্রকাশ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। 

বলা হয়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানখাত সম্পর্কিত বিশ্লেষণে করে দেখা গেছে- সম্মিলিতভাবে এসওই খাত দেশের সরকারের জন্য মাঝারি মাত্রার ফিসকাল ঝুঁকি সৃষ্টি করে। এসওই এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো সার্বিকভাবে সরকারের আর্থিক অবস্থার ওপর তিনভাবে প্রভাব ফেলে।

প্রথমত, যদি এসওই-এর ঋণের জন্য গ্যারান্টি দেয় এবং তারা সেই ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়, তাহলে সরকারের তা পুনর্ভরণসহ আর্থিক ও অন্যান্য ক্ষতির ঝুঁকি থাকে। এটি ঘটতে পারে যদি প্রতিষ্ঠানগুলো দেউলিয়া হয়ে যায় বা তাদের প্রকল্পগুলো আশানুরুপ উৎপাদশীলতা দেখাতে ব্যর্থ হয়।

দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ঋণ খেলাপি না হলেও যদি তারা ক্রমাগত লোকসান করে, তাহলে তাদের সচল রাখতে সরকারকে বাড়তি পুঁজি যোগান দিতে হতে পারে।

তৃতীয়ত, যদি এসব প্রতিষ্ঠান প্রত্যাশিত মুনাফা না করতে পারে তাহলে সেটিও সরকারের রাজস্ব আয়ে চাপ বাড়াতে পারে। সার্বিকভাবে দেখা গেছে যে, এসওই সমূহের সম্পদকে সুচিন্তিতভাবে ব্যবহার করা প্রয়োজন, যাতে সর্ব্বোচ্চ উৎপাদনশীলতা নিশ্চিত করা যায়।

এ পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকারকে স্বল্প ও মধ্যমেয়াদে আট ধরণের নীতি কৌশল গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়েছে অর্থমন্ত্রণালয়। এই নীতি কৌশলের মধ্যে বলা হয়েছে, নিম্ন আয়ের জনগণকে উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রভাব থেকে সুরক্ষা দিতে সরকার ওএমএস (খোলা বাজারে খাদ্য পণ্য বিক্রি) টিসিবি’র ফ্যামিলি কার্ডের মতো কর্মসূচি চালু করেছে। সরকার ডায়নামিক সোশ্যাল রেজিস্ট্রি তৈরির মাধ্যমে উপকারভোগীর সহায়তাপ্রাপ্তি ব্যবস্থা পূর্ণ অটোমেশন করার উদ্যোগ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে পারে।

বিদ্যুৎখাতের পরিকল্পনা বিষয়ে নীতি কৌশলে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎখাতে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সরকার ২০২৬ -২০২৭ অর্থবছরে তিন বছর মেয়াদে একটি রোডম্যাপ তৈরি করছে, যার মাধ্যমে  বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিক্রয় মূল্যের মধ্যে সামঞ্জস্য রেখে ভর্তুকি কমিয়ে এখাতকে আর্থিকভাবে টেকসই করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার সার ব্যবস্থাপনা পুনঃমূল্যায়ন করছে এবং কৃষি উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল উপকরণের প্রাপ্যতা ও সরবরাহে যেনন কোনো বিঘ্ন না ঘটে তা নিশ্চিত করছে।

ঋণ ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন ও আর্থিক ঝুঁকি কমাতে সরকার অর্থ বিভাগের অধীনে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে এবং বন্ড/বিল বাজার উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছে।

নীতি কৌশলের বিষয়ে আরও রয়েছে, অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ জোরদারে সরকার আর্থিক লেনদেনের অটোমেশন করার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা যেতে পারে।

রাজস্ব আহরণ বাড়াতে ‘মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি রাজস্ব কৌশল(এমএলটিআরএস,২০২৫)’ ও ‘ট্যাক্স এক্সপেন্ডিচার নীতিমালা’ গ্রহণ করা হয়েছে।  এসব কাঠামোগত সংস্কার পরিকল্পনা গ্রহণ ও কার্যকর করার মাধ্যমে সরকার ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধির জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান সমূহের সক্ষমতা উন্নয়নের জন্য দক্ষ এসেট ম্যানেজমেন্ট পদ্ধতি গ্রহণ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। একইসঙ্গে সরকার একটি দুর্যোগ ঝুঁকি অর্থায়ন কৌশলপত্র প্রণয়ন করেছে, যার মাধ্যমে মধ্যমেয়াদে বিভিন্ন ঝুঁকি অর্থায়নের উত্তম বিকল্পের মূল্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। একটি সামগ্রিক দুর্যোগ প্রস্তুতি এবং সাড়া প্রদান কৌশল তৈরি করা যেতে পারে বলে অর্থমন্ত্রণালয়ের নীতি বিবৃতি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা/হাসনাত/টিপু

সম্পর্কিত নিবন্ধ