আশ্রয় নেওয়া ইউক্রেনীয়দের দেশে ফেরত পাঠাবে ট্রাম্প প্রশাসন
Published: 6th, March 2025 GMT
রাশিয়ার সাথে সংঘাতের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে আসা প্রায় দুই লাখ ৪০ হাজার ইউক্রেনীয়ের অস্থায়ী আইনি মর্যাদা বাতিল করার পরিকল্পনা করছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। ট্রাম্পের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এবং বিষয়টির সাথে পরিচিত তিনটি সূত্রের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, এসব ব্যক্তিকে সম্ভবত তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে। এপ্রিলের মধ্যেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের অধীনে ইউক্রেনীয়দের যেভাবে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে স্বাগত জানানো হয়েছিল তার পুরো বিপরীত চিত্র দেখাতে যাচ্ছে এবার ট্রাম্প প্রশাসন।
গত সপ্তাহে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সাথে ট্রাম্পের প্রকাশ্যে বিবাদের আগে ইউক্রেনীয়দের জন্য সুরক্ষা প্রত্যাহারের পরিকল্পিত প্রক্রিয়া চলছিল। এটি ট্রাম্প প্রশাসনের বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ, যাতে ১৮ লাখেরও বেশি অভিবাসীর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি বাতিল করা হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্বরাষ্ট্র বিভাগের মুখপাত্র ট্রিসিয়া ম্যাকলাফলিন জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে এ বিষয়ে বিভাগের কোনো ঘোষণা নেই। হোয়াইট হাউস এবং ইউক্রেনীয় দূতাবাস রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেয়নি।
২০ জানুয়ারি জারি করা ট্রাম্পের এক নির্বাহী আদেশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ‘সব স্পষ্ট প্যারোল কর্মসূচি বন্ধ করার’ আহ্বান জানানো হয়েছে।
ট্রাম্পের কর্মকর্তা এবং বিষয়টির সাথে পরিচিত এক সূত্র জানিয়েছে, প্রশাসন চলতি মাসের মধ্যেই প্রায় পাঁচ লাখ ৩০ হাজার কিউবান, হাইতিয়ান, নিকারাগুয়ান এবং ভেনেজুয়েলার নাগরিকের প্যারোল প্রত্যাহার করার পরিকল্পনা করছে।
রয়টার্সের দেখা একটি অভ্যন্তরীণ আইসিই ইমেল অনুসারে, প্যারোল স্ট্যাটাস কেড়ে নেওয়া অভিবাসীদের দ্রুত নির্বাসন প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হতে পারে। অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমকারী অভিবাসীদের প্রবেশের পর দুই বছরের জন্য দ্রুত নির্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে রাখা যেতে পারে, যাকে দ্রুত অপসারণ বলা হয়।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।