চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সমুদ্রসৈকতে বেড়াতে গিয়ে এক কলেজছাত্রী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার বেলা দেড়টার দিকে গুলিয়াখালী সৈকতে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান ভুক্তভোগী। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেয়। বিকেল ৩টার দিকে সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ ওই কলেজছাত্রীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। 

ভুক্তভোগী জানান, তিনি দুপুরে এক ছেলে বন্ধুর সঙ্গে সৈকতে ঘুরতে যান। একপর্যায়ে চার যুবক তাদের জিম্মি করে উপকূলের ঝাউবাগানে নিয়ে যায়। সেখানে ছেলেটিকে মারধর করে ঝাউগাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে জিম্মি করে দলবদ্ধ ধর্ষণ করে। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যান।

ওই কলেজছাত্রী বলেন, ‘ধর্ষণকারীদের হাত থেকে রেহাই পেতে অনেক আকুতি-মিনতি করেছি। তাদের পায়েও ধরেছি। কিন্তু তারপরও তাদের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারিনি।’

স্থানীয় বাসিন্দা মুন্না বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসে ওই তরুণীকে উদ্ধার করেছি। তার চোখেমুখে ছিল ভয়ের ছাপ। তিনি দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, সী-বিচে পযাপ্ত কোন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। বিভিন্ন সময়ে পর্যটকদের বখাটেদের হয়রানির শিকার হতে হয়। 

সীতাকুণ্ড মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

মজিবুর রহমান বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে। বিস্তারিত জানার পর জানাবো।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

মার্চে নির্যাতনের শিকার ৪৪২ নারী

গত মার্চে ৪৪২ নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ষণ করা হয়েছে ১২৫ কন্যাসহ ১৬৩ জনকে। ১৮ কন্যাসহ ৩৬ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। দুই কন্যাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। দুই কন্যা ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছে। এছাড়া ৫৫ কন্যাসহ ৭০ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে।

সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে সাম্প্রতিক নারীর মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এ তথ্য জানান। এর আয়োজন করে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় লিগ্যাল এইড উপ-পরিষদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারিতে মোট ১৮৯ নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার ৩০ কন্যাসহ ৪৮ জন। তার মধ্যে তিন কন্যাসহ ১১ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এক কন্যাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। 
জানুয়ারিতে নির্যাতনের শিকার হয়েছে মোট ২০৫ নারী ও কন্যাশিশু। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৩৩ কন্যাসহ ৪৯ জন। তার মধ্যে ১৪ কন্যাসহ ২০ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এক কন্যাসহ দুইজনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া দুইজনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে।

মডারেটরের বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ৫ নম্বর ধারা জেন্ডার সমতা। এটি উপেক্ষা করা কোনো রাষ্ট্রের পক্ষে সম্ভব নয়।

সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, নারী আন্দোলনের অন্যতম দাবি অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়ন, রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ, সংসদে এক-তৃতীয়াংশ আসন ও সরাসরি নির্বাচন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদা রেহানা বেগম প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় অ্যাডভোকেসি ও নেটওয়ার্কিং পরিচালক জনা গোস্বামী।

পুলিশ সদরদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, মার্চে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে দুই হাজার ৫৪টি। এর আগে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্চে ১৩২টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) জানায়, জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত নির্যাতনের শিকার হয়েছে ২৯৯ কন্যাশিশু।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সারা দেশে ধর্ষণের ঘটনায় মহিলা পরিষদের উদ্বেগ-ক্ষোভ
  • মার্চে নির্যাতনের শিকার ৪৪২ নারী