Samakal:
2025-06-16@04:09:35 GMT

পর্যটন নগরী পর্যটকশূন্য

Published: 8th, March 2025 GMT

পর্যটন নগরী পর্যটকশূন্য

রমজানের শুরু থেকেই পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে কক্সবাজার। পর্যটক খরায় ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে হোটেল-মোটেল ও সৈকতকেন্দ্রিক কয়েক হাজার ছোট-বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে হোটেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।
গত সাড়ে চার মাস ভালো ব্যবসা হলেও রমজানের শুরুতেই চরম খরা দেখা দেওয়ায় দুশ্চিন্তায় ব্যবসায়ীরা। তবে ঈদ ঘিরে আবারও পর্যটন খাতে প্রাণসঞ্চার হওয়ার আশা সংশ্লিষ্টদের।
গতকাল শনিবার বিকেল ৪টার দিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, পর্যটন নগরীর সুগন্ধা পয়েন্টের প্রবেশমুখে চিরচেনা যানজট নেই, ফাঁকা সড়ক ও দু’পাশের দোকানপাট বন্ধ। শহরের রেস্তোরাঁগুলোর চিত্রও একই। খালি পড়ে আছে পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট, গেস্টহাউস।
জানা যায়, রোজার মাসে পর্যটক টানতে কক্সবাজারের হোটেল কর্তৃপক্ষ কক্ষ ভাড়ার বিপরীতে সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ ছাড়ের ঘোষণা দিয়েছে। আগে একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষের ভাড়া যদি দুই হাজার টাকা হয়, এখন সেই কক্ষে থাকা যাবে মাত্র ৬০০ টাকায়। হোটেল মালিকরা বলেন, অতিরিক্ত খরচের কারণে এতদিন যারা কক্সবাজার সৈকতসহ জেলার দর্শনীয় স্থান দেখতে পারেননি, রোজার মাসের বিশেষ ছাড়ের এ সুযোগ তারা কাজে লাগাতে পারেন বলেও মনে করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
কক্সবাজার হোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার সমকালকে বলেন, রোজার মাসে কক্সবাজারের ৯৯ শতাংশ রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকে। অধিকাংশ হোটেল, গেস্টহাউস ও কটেজের কর্মচারীদেরও বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়। ইতোমধ্যে ৩০-৪০ হাজার কর্মচারী ছুটিতে চলে গেছেন। অবশিষ্ট ১০-১৫ হাজার কর্মচারী দিয়ে হোটেলগুলো চালু রাখা হয়েছে। কিছু হোটেলের সংস্কার ও রঙের কাজ চলছে। তবে পর্যটকের জন্য সাহ্‌রি ও ইফতারের ব্যবস্থা করেছে বেশ কিছু হোটেল-রেস্তোরাঁ।
তিনি বলেন, হোটেলগুলোতে বিশেষ এ ছাড়ের উদ্দেশ্য হচ্ছে রোজার মাসে পর্যটককে কম টাকায় সৈকত ভ্রমণের সুযোগ দেওয়া। ঈদের দিন পর্যন্ত বিশেষ ছাড়ের এই ঘোষণা কার্যকর থাকবে। 
গতকাল দেখা যায়, সৈকতের কলাতলী পয়েন্টে অলস সময় কাটছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, বিচ বাইক চালক ও ফটোগ্রাফারদের। খালি পড়ে থাকা সৈকত যেন জানান দিচ্ছে পর্যটন খাতে নীরবতার চিত্র।
একইভাবে হোটেলে গিয়ে দেখা গেছে, কলাতলীর সাততলা রেইন ভিউ রিসোর্টে কক্ষ আছে ৫১টি। চারটি ছাড়া অবশিষ্ট ৪৭টি কক্ষ খালি পড়ে আছে। পাশের হোটেল কক্স ইন্টারন্যাশনালে কক্ষ আছে ২৫টি। অতিথি আছেন একটিতে, ২৪টিই খালি।
ডলফিন মোড়ের শাহজাদী রিসোর্টের ৪৫টি কক্ষের মধ্যে ৪৩টি খালি জানিয়ে রিসোর্টের মালিক নাজিম উদ্দিন বলেন, প্রতিবছর রোজার মাসে হোটেলগুলো খালি থাকে। এবারও খালি যাচ্ছে। তবে এবারের বিশেষ ছাড়ের ঘোষণা কাজে আসতে পারে। পর্যটক টানতে তাঁর রিসোর্টের কক্ষ ভাড়ার বিপরীতে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হচ্ছে।
হোটেল মালিকরা জানান, গত বছরের নভেম্বর ও ডিসেম্বরে সৈকত ভ্রমণে আসেন অন্তত ২১ লাখ পর্যটক। এ সময় হোটেল কক্ষ ভাড়া ১০০ শতাংশ আদায় করা হয়। চলতি সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি দুই মাসে ছয়-সাত লাখ পর্যটকের আগমন ঘটেছে। এ সময়ও কক্ষ ভাড়ার বিপরীতে ছাড় দেওয়া হয়েছিল।
কক্সবাজার ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এস এম কিবরিয়া খান বলেন, সন্তানদের স্কুল ছুটির অবসরে যারা একটু দূরে কয়েকটা দিন বেড়িয়ে আসতে চান, তাদের জন্য কক্সবাজার এখন আদর্শ জায়গা হতে পারে। কারণ, রমজান উপলক্ষে কক্সবাজারের হোটেলগুলোতে চলছে বিশেষ ছাড়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

প্রযুক্তি কি ডিমেনশিয়া বাড়িয়ে দিচ্ছে? ৫৭টি ভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে বিস্ময়কর তথ্য

প্রযুক্তির কল্যাণে হুটহাট বড় পরিবর্তন আসা নতুন কিছু নয়। করোনা মহামারির আগে বাসা থেকেও যে অফিস করা সম্ভব, সেটা মানতে চাইতেন না অনেকে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হোম অফিস হয়েছে স্বাভাবিক। একই ঘটনা ঘটেছে ডিজিটাল দুনিয়ায়। একসময় যেকোনো তথ্য খুঁজে বের করার জন্য শরণাপন্ন হতে হতো সার্চ ইঞ্জিনের; এআই সেই উত্তর সবিস্তারে দিয়ে দিচ্ছে মুহূর্তেই। ফলে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন শুধু জীবনকে সহজতর করছে না, বাঁচিয়ে দিচ্ছে সময় ও পরিশ্রমও। কিন্তু এই বেঁচে যাওয়া সময় ও পরিশ্রম মস্তিষ্কের ওপর ঠিক কীভাবে প্রভাব ফেলছে?

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস ও বেলোর ইউনিভার্সিটির এক যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, এত দিন প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে মানব মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমার যে গুঞ্জন ভেসে বেড়িয়েছে, তার কোনো সত্যতা নেই। ‘নেচার হিউম্যান বিহেভিয়ার’ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় দেখা গেছে, ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ নামে যে হাইপোথিসিস আছে, তার কোনো প্রমাণ নেই গবেষকদের কাছে। বরং পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষদের স্মার্টফোন, কম্পিউটার কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহার তাঁদের স্বাভাবিক স্মৃতিভ্রম অনেকটা স্তিমিত করে।

ডিজিটাল ডিমেনশিয়া কী

২০১২ সালে প্রথম ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ তত্ত্ব নিয়ে হাজির হন জার্মান স্নায়ুবিজ্ঞানী ও মনোবিদ ম্যানফ্রেড স্পিৎজার। মূলত যে হারে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে এবং মানুষ যান্ত্রিক পর্দার সামনে প্রতিদিনের বেশির ভাগ সময় কাটাচ্ছে, তাতে প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে অনেকটাই। এতে নিত্যপ্রয়োজনীয় তথ্যগুলোও মনে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে অনেকে। যেমন ফোন নম্বর। একসময় প্রিয়জনের ফোন নম্বর আমাদের মুখস্থ থাকত। এখন ফোন নম্বর ঠাঁই পায় মুঠোফোনের কনটাক্ট লিস্টে। ফোন নম্বর মনে রাখার চেষ্টাই করে না কেউ। আবার অনেকক্ষণ যান্ত্রিক পর্দার সামনে থাকলেও সেখান থেকে শেখার ইচ্ছা থাকে না অনেকের। চোখের সামনে যা আসছে, স্ক্রল করে চলে যাচ্ছে পরের কোনো কনটেন্টে। এতে মনোযোগ হারিয়ে যায় দ্রুত। আর প্রযুক্তির এমন অতিব্যবহার যে স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দিচ্ছে, একেই ধরা হয় ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ হিসেবে।

আরও পড়ুনডিজিটাল স্ক্রিন ব্যবহারের সময় ২০-২০-২০ নিয়ম মানাটা কেন জরুরি২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩গবেষণা যা বলছে

প্রায় ৪ লাখ ১১ হাজার পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষের ওপর চালানো ৫৭টি ভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে যে স্মৃতিভ্রম দেখা দেয়, তার অনেকটাই হ্রাস করে প্রযুক্তির ব্যবহার। প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের ফলে স্মৃতিশক্তি কমে আসার আশঙ্কা প্রায় ৫৮ শতাংশে নেমে আসে।

স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া বরং আরও কিছু সূচকের (যেমন সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পারিবারিক অবস্থা) ওপর নির্ভর করে। মজার ব্যাপার হলো, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার থেকেও বেশি কার্যকর প্রযুক্তির ব্যবহার।

তবে এর সবকিছুই নির্ভর করছে প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের ওপর। পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিরা বেশির ভাগ সময়ই অনলাইনে কাটান ইউটিউব ভিডিও অথবা ফেসবুক স্ক্রল করে। এতে তাঁদের মস্তিষ্কের ব্যবহার হয় না বললেই চলে। মস্তিষ্ক সচল রাখতে পারে এমন কনটেন্টে তাঁদের মনোযোগ সরিয়ে নিতে পারলে আনন্দ যেমন পাবেন, তেমনই ডিজিটাল দুনিয়া সম্পর্কে তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গিও পালটে যাবে। এ ছাড়া অনলাইনের হাজারো গুজব ও উসকানি থেকে মুক্ত থাকবেন তাঁরা।

সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট

আরও পড়ুনমাত্রাতিরিক্ত স্ক্রিনটাইম যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সম্পর্কিত নিবন্ধ