কেরানীগঞ্জে নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ২
Published: 9th, March 2025 GMT
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কোন্ডা পানগাও এলাকায় এক নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে আশরাফুল ইসলাম ও দীপ সরকার নামে দুজনকে আটক করেছে। তারা পেশায় অটোরিকশা চালক। ওই নারী চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে জানিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা জানিয়েছেন, ওই নারী তার পরিবারকে না জানিয়ে এক মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করেন। চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা তিনি। বিয়ের শুরুতে স্বামীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয়। এ ঘটনায় পুনরায় তার পরিবারের কাছে ফিরে যান। হিন্দু থেকে মুসলিম হওয়ায় তার পরিবার বাড়ি থেকে বের করে দেয় তাকে। কোনো উপায় না পেয়ে কাজের সন্ধানে ঢাকায় আসেন। শনিবার কোন্ডা ইউনিয়নের পানগাওয়ে পরিত্যক্ত বাড়িতে অভিযুক্ত দুই অটোরিকশা চালক তাকে আশ্রয় দেয়।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা ওই হিন্দু নারী তার স্বামীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির কারণে কেরানীগঞ্জ কোন্ডা ইউনিয়ন পানগাও এলাকায় আশ্রয় নেন। প্রথমে তিনি একটি মাজারে আশ্রয় নিয়েছিলেন। শনিবার রাতে তিন অটোরিকশাচালক ওই নারীকে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে একটি ঘরে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণ করে। এই ঘটনায় অভিযান চালিয়ে দু’জনকে আটক করা হয়েছে। ইয়াসিন নামে একজন পলাতক রয়েছে।
শারীরিক পরীক্ষার জন্য ভুক্তভোগী নারীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয়েছে।’
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মার্চে নির্যাতনের শিকার ৪৪২ নারী
গত মার্চে ৪৪২ নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ষণ করা হয়েছে ১২৫ কন্যাসহ ১৬৩ জনকে। ১৮ কন্যাসহ ৩৬ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। দুই কন্যাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। দুই কন্যা ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছে। এছাড়া ৫৫ কন্যাসহ ৭০ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে।
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে সাম্প্রতিক নারীর মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এ তথ্য জানান। এর আয়োজন করে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় লিগ্যাল এইড উপ-পরিষদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারিতে মোট ১৮৯ নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার ৩০ কন্যাসহ ৪৮ জন। তার মধ্যে তিন কন্যাসহ ১১ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এক কন্যাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।
জানুয়ারিতে নির্যাতনের শিকার হয়েছে মোট ২০৫ নারী ও কন্যাশিশু। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৩৩ কন্যাসহ ৪৯ জন। তার মধ্যে ১৪ কন্যাসহ ২০ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এক কন্যাসহ দুইজনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া দুইজনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে।
মডারেটরের বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ৫ নম্বর ধারা জেন্ডার সমতা। এটি উপেক্ষা করা কোনো রাষ্ট্রের পক্ষে সম্ভব নয়।
সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, নারী আন্দোলনের অন্যতম দাবি অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়ন, রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ, সংসদে এক-তৃতীয়াংশ আসন ও সরাসরি নির্বাচন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদা রেহানা বেগম প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় অ্যাডভোকেসি ও নেটওয়ার্কিং পরিচালক জনা গোস্বামী।
পুলিশ সদরদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, মার্চে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে দুই হাজার ৫৪টি। এর আগে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্চে ১৩২টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) জানায়, জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত নির্যাতনের শিকার হয়েছে ২৯৯ কন্যাশিশু।