টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে বালুর ঘাটের রাস্তা নির্মাণকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় ১৪ জনের নামে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

রবিবার (৯ মার্চ) গোলাম সরোয়ার নামে এক ব্যক্তি ভূঞাপুর থানায় অভিযোগটি দেন।

আরো পড়ুন: টাকা ভাগাভাগি নিয়ে বিএনপির ২ গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ১০

আরো পড়ুন:

গাজীপুরে নিলামের টাকা আত্মসাত করল বিএনপি নেতা

নারী-শিশুদের প্রতি বাড়তে থাকা সহিংসতা উদ্বেগজনক: সালাহউদ্দিন

অভিযুক্তরা হলেন- নিকরাইল ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুল লতিফ শেখ, পলশিয়া ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হোসেন আলী, বিএনপি নেতা মতুর্জ আলী, লোকমান, মুন্নাফ, সজিব, সবুজ, আবু বক্করসহ ১৪ জন। 

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি উপজেলার নিকরাইল ইউনিয়নে পলশিয়ার বাগানবাড়িতে নিজ জমিতে বালুর ঘাটের রাস্তার কাজ করার সময় প্রতিপক্ষের লোকজন বাঁধা দেয়। পরে মীমাংসার জন্য বিষয়টি নিয়ে গত ৮ মার্চ বিকেলে ল্যাংড়া বাজার এলাকায় সালিশ বৈঠক বসে। বৈঠকে সমাধান না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে আব্দুল লতিফ শেখ, পলশিয়া ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হোসেন আলী, বিএনপি নেতা মতুর্জ আলী, লোকমান, মুন্নাফ, সজিব, সবুজ, আবু বক্করসহ তাদের লোকজন হামলা করে। হামলায় রফিক (২৭), মাফি (২৫) ও মান্নান (৬০) গুরত্বর আহত হন। পরে তাদের উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। ওই ঘটনায় উভয়পক্ষের প্রায় ১০জন আহত হন।

হামলায় আহত রফিক বলেন, ‍“নিজের জমির মধ্যে বালুর ঘাটের রাস্তা তৈরির কাজ করছিলাম। এসময় পলশিয়ার লোকমান ও হোসেনের লোকজন এসে হামলা আমাদের মারধর করে। পরে বিষয়টি নিয়ে নেতারা মীমাংসার জন্য সালিশি বৈঠক ডাকেন। সালিশে মিমাংসা না হওয়ায় তারা আবারো আমাদের ওপর হামলা করে।”

নিকরাইল ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য রফিকুল ইসলাম রিপন বলেন, “বালুর ঘাটের পয়েন্টের রাস্তা তৈরি করার সময় প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা করে। ওই ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করেছি। এছাড়া থানাতেও অভিযোগ দেওয়া ছিল। ঘটনাটি নিয়ে স্থানীয় বিএনপির নেতারা মীমাংসার জন্য বসলেও সমাধান হয়নি। পরে ক্ষিপ্ত হয়ে লতিফ ও হোসেনের লোকজন অতর্কিত হামলা করে। এতে আমাদের অনেকেই আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এই ঘটনায় বড় ভাই গোলাম সরোয়ার বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।”

ভূঞাপুর থানার ওসি একেএম রেজাউল করিম বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি।হামলার ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”

ঢাকা/কাওছার/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ অভ য গ র ল কজন ব এনপ র ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।

এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।  

প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।  কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।

মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।

নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ