নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা থাকায় মাগুরায় শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলার আসামিদের গতকাল রোববার দিনে আদালতে হাজির করতে পারেনি পুলিশ। পরিস্থিতি বিবেচনায়, রোববার গভীর রাতে রিমান্ড আবেদনের শুনানি করেছেন আদালত।

শুনানিতে মূল অভিযুক্ত ভুক্তভোগী শিশুর বোনের শ্বশুর হিটু শেখের সাত দিন, বোনের স্বামী, শাশ্বড়ি ও ভাইয়ের প্রত্যেককে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। মাগুরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল মতিন এই আদেশ দেন।

মাগুরা সদর থানার ওসি আইয়ুব হোসেন জানান, ধর্ষণে জড়িতদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে গতকাল রোববার মাগুরা আদালত চত্বরের সামনে ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ করেন। ফলে নিরাপত্তা শঙ্কায় আসামিদের আদালতে হাজির এবং রিমান্ড আবেদন করা হয়নি।

মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিরাজুল ইসলাম সমকালকে জানান, শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় মা বাদী হয়ে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মামলার ৪ আসামি আগেই হেফাজতে ছিলেন। মামলার পর তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

চার আসামি হলেন- শিশুটির ভগ্নিপতি সজিব (১৮), সজীবের ভাই রাতুল (১৭), তাদের বাবা হিটু মিয়া (৪২) ও মা জাবেদা বেগম (৪০)। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, ধর্ষণ করেন হিটু মিয়া, আর এ কাজে তাকে সহায়তা করে বাকি আসামিরা।

গত শনিবার (৮ মার্চ) দায়ের হওয়া মামলার এজাহারে শিশুটির মা উল্লেখ করেন, বড় মেয়ের স্বামীর সহায়তায় তার বাবা হিটু শেখ শিশুটিকে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি হিটুর স্ত্রী ও আরেক ছেলেও জানতেন। ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তারা শিশুটিকে হত্যার চেষ্টা করেন।

এজাহারে আরও বলা হয়, চার মাস আগে বড় মেয়ের সঙ্গে সজিবের বিয়ে হয়। এর পর থেকে বড় মেয়েকে তার শ্বশুর অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। বিষয়টি ওই পরিবারের সবাই জানলেও প্রতিবাদ করেননি।

মামলায় বলা হয়েছে, বুধবার রাত ১০টার দিকে খাবার খেয়ে বড় বোন ও তার স্বামীর সঙ্গে একই কক্ষে শিশুটি ঘুমায়। রাত আড়াইটার দিকে বড় বোন জেগে দেখেন, ছোট বোন পাশে নেই। মেঝেতে পড়ে আছে। তখন সে বড় বোনকে জানায়, গোপনাঙ্গে জ্বালাপোড়া হচ্ছে। বিষয়টি হালকাভাবে নেন তিনি। পরদিন সকাল ৬টার দিকে শিশুটি আবার বোনকে একই কথা জানান। তখন তিনি বিষয়টি আমলে নিয়ে কী হয়েছে জিজ্ঞেস করলে শিশুটি জানায়, রাতে দুলাভাই দরজা খুলে দিয়েছিল। তখন তার বাবা (হিটু শেখ) তার মুখ চেপে ধরে অন্য কক্ষে নিয়ে যায়। এ সময় চিৎকার করার চেষ্টা করলে গলা চেপে ধরা হয়েছিল। পরে তাকে বোনের কক্ষে ফেলে রেখে যায় হিটু শেখ। বোন বিষয়টি মোবাইল ফোনে তার মাকে জানাতে গেলে সজীব ফোন কেড়ে নিয়ে মারধর করেন। ঘটনা কাউকে জানালে হত্যার হুমকি দেন। পরে দুই বোনকে দুই কক্ষে আটকে রাখা হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শিশুটি আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে সজিবের মা মাগুরা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে শিশুটিকে হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যান তিনি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব ষয়ট

এছাড়াও পড়ুন:

খামেনিকে হত্যায় সংঘাত বাড়বে না, বরং অবসান ঘটাবে: নেতানিয়াহু

ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে হত্যার আশঙ্কার বিষয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইরানি শীর্ষ নেতার হত্যায় ‘সংঘাত বাড়বে না, বরং অবসান ঘটাবে’।

তিনি বলেন, ‘ইরানি নেতার হত্যার সম্ভাব্য পরিকল্পনা ইরান ও ইসরায়েল মধ্যকার চলমান সংঘাতকে ‘আরও বাড়িয়ে তুলবে না, বরং সংঘাতের অবসান ঘটাবে’। 

এবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহুকে প্রশ্ন করা হয়, খামেনিকে হত্যার লক্ষ্যবস্তু করার চিন্তা আছে কিনা। প্রশ্নের জবাবে নেতানিয়াহু বলেছেন, ইরান দীর্ঘদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে। ইরান ‘চিরস্থায়ী যুদ্ধ’ চায় এবং ইসরায়েলে পরমাণু যুদ্ধের কিনারায় নিয়ে এসেছে। 

তিনি বলেন, ইসরায়েল এই আগ্রাসন ঠেকাচ্ছে। এটা ঠেকাতে হলে অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়াতেই হবে। আমরা যা প্রয়োজন, তাই করছি। 

ইরানের সঙ্গে সংঘর্ষে ইসরায়েল বিজয় অর্জন করতে যাচ্ছে বলেও দাবি করেছেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সোমবার ইসরায়েলি বিমান ঘাঁটি পরিদর্শনে গিয়ে তিনি বলেন, আমরা বিজয় অর্জনের পথে। এর আগে, তেহরানের আকাশ ‘পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ অর্জন’ করার দাবি করেন ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী কর্মকর্তারা। সেইসঙ্গে, ইরানের মিসাইল লঞ্চার বা ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ যন্ত্রের ‘এক-তৃতীয়াংশ ধ্বংস'’করে দেওয়ারও দাবি করেন তারা।

সেই দাবিই পুনর্ব্যক্ত করে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আমাদের দু'টি লক্ষ্য অর্জনের পথে এগিয়ে যাচ্ছি। পারমাণবিক হুমকি নির্মূল এবং ক্ষেপণাস্ত্র হুমকি নির্মূল করা।

ইসরায়েলের বেসামরিক নাগরিকদেরকে ইরান হামলার লক্ষ্যবস্তুে পরিণত করেছে বলে অভিযোগ করেন নেতানিয়াহু। বিমান ঘাঁটি পরিদর্শনের সময় সেখানে উপস্থিত সেনাদের উদ্দেশে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের ধন্যবাদ। সৃষ্টিকর্তার সাহায্যে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করবো এবং সফল হব। বিজয় অর্জন না করা পর্যন্ত আমরা (যুদ্ধ) চালিয়ে যাব।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ