ইন্টারন্যাশনাল ইন্ডিয়ান ফিল্ম অ্যাকাডেমি বা আইফা অ্যাওয়ার্ড। গত ৮ মার্চ ভারতের রাজস্থানের জয়পুরে বসে রজতজয়ন্তী আসর। উদ্বোধনী আসরে আইফা ডিজিটাল অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। গতকাল রাতে চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের পর্দা নামে।

ঝলমলে এই আয়োজনে চলচ্চিত্র পুরস্কারে সেরা অভিনেত্রী নীতাংশি গোয়েল, অভিনেতার ট্রফি পেয়েছেন কার্তিক আরিয়ান। কিরণ রাও নির্মিত ‘লাপাতা লেডিস’ সিনেমার জয়জয়কার। সবচেয়ে বেশি পুরস্কার জিতেছি সিনেমাটি। চলুন জেনে নিই উল্লেখযোগ্য বিভাগে কারা পেলেন আইফা অ্যাওয়ার্ড—

সেরা সিনেমা: লাপাতা লেডিস
সেরা পরিচালক: কিরণ রাও (লাপাতা লেডিস)     

আরো পড়ুন:

আমার কোমরে সেই দাগটা ১০ বছর ছিল: শিল্পা

নায়ক শাহরুখ, তবু অভিনয়ের প্রস্তাব ফেরান কাজল

সেরা অভিনেতা: কার্তিক আরিয়ান (ভুল ভুলাইয়া থ্রি)
সেরা অভিনেত্রী: নীতাংশি গোয়েল (লাপাতা লেডিস)
সেরা খলনায়ক: রাঘব জুয়াল (কিল)

সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী: জানতি বদিওয়ালা (শয়তান)
সেরা পার্শ্ব অভিনেতা: রবি কিষাণ (লাপাতা লেডিস)

সেরা নবাগত পরিচালক: কুনাল খেমু (মাদগাঁও এক্সপ্রেস)
সেরা নবাগত অভিনেতা: লক্ষ্য লালওয়ানি (কিল)
সেরা নবাগত অভিনেত্রী: প্রতিভা রাংটা (লাপাতা লেডিস)

সেরা মৌলিক গল্প: বিপ্লব গোস্বামী (লাপাতা লেডিস)
সেরা গল্প (অ্যাডাপ্টেড): শ্রীরাম, অরিজিৎ বিশ্বাস, পূজা লাদাহ, অনুকৃতি পান্ডে (মেরি ক্রিসমাস)
সেরা চিত্রনাট্য: স্নেহা দেশাই (লাপাতা লেডিস)

সেরা প্লেব্যাক গায়িকা: শ্রেয়া ঘোষাল (আমি যে তোমার ৩.

০, ভুল ভুলাইয়া থ্রি)
সেরা প্লেব্যাক গায়ক: জুবিন নটিয়াল (দুয়া, আর্টিকেল ৩৭০)
সেরা সংগীত পরিচালক: রাম সম্পত (লাপাতা লেডিস)
সেরা গানের কথা: প্রশান্ত পান্ডে (সজনী, লাপাতা লেডিস)

ভারতীয় সিনেমায় বিশেষ অবদান: রাকেশ রোশান

আইফার এবারের আসরে বলিউডের একঝাঁক তারকা অভিনয়শিল্পী উপস্থিত হয়েছিলেন। এ তালিকায় রয়েছেন শাহরুখ খান, কারিনা কাপুর খান, মাধুরী দীক্ষিত, শহিদ কাপুর, ক্যাটরিনা কাইফ, ভিকি কৌশল প্রমুখ। এ মঞ্চে নেচে মুগ্ধতা ছড়ান শাহরুখ-মাধুরী, কারিনা, ক্যাটরিনা।

তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে

ঢাকা/শান্ত

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনায় এক মাসে ১৩ লাশ উদ্ধার, বাড়ছে উদ্বেগ

বাড়িতে ঝগড়া চলছিল বড় ভাই ও ভাবির। ছোট ভাই এসে ঝগড়া থামানোর চেষ্টা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বড় ভাই ছোট ভাইয়ের মাথায় শাবল দিয়ে আঘাত করেন। মাটিতে লুটিয়ে পড়লে ধারালো বঁটি দিয়ে ছোট ভাইকে হত্যা করেন। পরে বড় ভাই শহিদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি এখন কারাগারে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ৩০ মে, খুলনার কয়রা উপজেলার বাগালী ইউনিয়নের উলা গ্রামে।

এর আগে ২৭ মে কয়রার ইসলামপুর গ্রামের কয়রা নদীর চর থেকে শিকলে বাঁধা অবস্থায় আবদুল মজিদ (৬২) নামের এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ছাড়া ৮ জুন কয়রার কাছারিবাড়ি বাজার-সংলগ্ন পুকুর থেকে নমিতা (৪০) নামের এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়।

১০ জুন কয়রা সদরের গোবরা সড়কে এক ভ্যানচালকের সঙ্গে এক মোটরসাইকেলচালকের কথা-কাটাকাটিকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হন অন্তত ১৫ জন। ঘটনায় ১২ জনকে আসামি করে থানায় মামলাও হয়েছে। এ ছাড়া কথা-কাটাকাটির জেরে কয়রার পল্লীমঙ্গল গ্রামে গত তিন দিনে কয়েক দফা মারামারি, হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

অসন্তোষ-দ্বন্দ্বের জেরে কয়রা উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় হত্যা–সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। ১০ মে থেকে ৯ জুন পর্যন্ত এক মাসে খুলনার ১০টি থানা এলাকায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনাসহ ১৩টি লাশ উদ্ধার হয়েছে। এ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে।

কয়রা কপোতাক্ষ মহাবিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষক বিদেশ রঞ্জন মৃধা বলেন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উপাদান কমে যাওয়ায় মানুষ অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে। মূল্যবোধ ও ভারসাম্য নষ্ট হয়ে মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ব ও ভালোবাসা কমে যাচ্ছে। এতে খুনখারাবি বাড়ছে। একসময় সমাজের একজনের ভালোতে সবাই আনন্দ পেতেন। নেতিবাচক দিকগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করতেন। এখন সেই ব্যবস্থা উঠেই গেছে বলা যায়। পাশাপাশি রাজনৈতিক আধিপত্যের লড়াইয়ে প্রভাববলয় সৃষ্টি করতেও সহিংসতার ঘটনা ঘটছে।

৩ জুন খুলনা শহরে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে সবুজ হাওলাদার (৩০) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়। ৪ জুন খুলনা সদর থানার মতিয়াখালী খালের মধ্যে আটকে ছিল এক নারীর মরদেহ। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। ওই নারীর পরিচয় না পেয়ে বেওয়ারিশ হিসেবে আঞ্জুমান মুফিদুলে দাফন করা হয়। গত ৯ জুন বিকেলে রূপসা উপজেলার আঠারোবেকী নদীতে পাওয়া যায় অজ্ঞাতনামা যুবকের মরদেহ। মরদেহের শ্বাসনালিতে গভীর ক্ষতচিহ্ন ছিল। রূপসা নৌ পুলিশের ওসি আবুল খায়ের বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি হত্যাকাণ্ড।

এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রহস্য উদ্‌ঘাটন ও অপরাধী শনাক্তে দীর্ঘসূত্রতার কারণেই অপরাধ বেড়ে চলেছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার ব্যুরোর কয়রা উপজেলা শাখার সভাপতি তরিকুল ইসলাম। তাঁর ভাষ্য, প্রতিটি ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত শেষে দোষীদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করতে পারলে অপরাধপ্রবণতা কমে আসবে। আইনি প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতার কারণে অপরাধ বেড়ে চলেছে।

কয়রা উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুলী বিশ্বাস বলেন, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কয়েকটি ঘটনায় এলাকার মানুষের মধ্যে উৎকণ্ঠা বাড়ছে, এটা ঠিক। তবে প্রতিটি ঘটনায় পুলিশও তাৎক্ষণিকভাবে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। যে বিষয়গুলো পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও সামাজিক ভ্রাতৃত্ববোধের মধ্য দিয়ে সমাধান করা যায়, সেখানে খুনাখুনি, অস্থিরতা, মামলা-হামলার মধ্য দিয়ে একধরনের বিভীষিকাময় পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে; যা সবার জন্যই অকল্যাণকর ও ভয়ানক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ