রাজধানীর উত্তরখানে একটি ভাড়া বাসায় হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়াকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। 

আজ সোমবার সেহরির সময় এ ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছেন উত্তরখান থানার ওসি জিয়াউর রহমান। তিনি বলেন, উত্তরখানের ওই ভাড়া বাসায় গত বছরের আগস্ট–সেপ্টেম্বর থেকে ভাড়া থাকেন তিনি। গত কয়েকদিন আগে এক নারী ও তরুণকে ভাবি–ভাতিজা পরিচয়ে বাসায় নিয়ে আসেন উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া। সোমবার সেহরির সময় সাইফুর বাথরুমে গেলে সেখানেই তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেন তারা। এরপর বাথরুমের দরজা বন্ধ করে পালিয়ে যান তারা। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় বাথরুমের দরজা ভেঙে বের হয়ে বেলকুনিতে এসে চিৎকার করেন তিনি। তখন বাসার মালিক ও অন্য ভাড়াটিয়ারা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।

নিহত সাইফুরের স্ত্রী সাদিয়া রেহমান দুই সন্তান নিয়ে শান্তিনগর পীর সাহেবের এলাকায় একটি বাসায় থাকেন। তাদের মধ্যে সম্পর্কের দূরত্ব তৈরি হলে উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া উত্তরখানে থাকতেন বলে জানিয়েছেন ওসি। তিনি বলেন, স্বামীর বিষয়ে খবর দিলে তাঁর স্ত্রী লাশ নিতে অস্বীকার জানান। এছাড়া তাকে থানায় আসতে বললেও তিনি আসেননি।

ওসি আরও বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে তার বড় ভাইয়ের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। হত্যার ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। এছাড়া সন্দেহভাজন আসামিদের ধরতে অভিযান শুরু হয়েছে।

নিহত শিক্ষকের স্ত্রী সাদিয়া রেহমান বলেন, তিনি বেশ কয়েক মাস ধরে আলাদা থাকেন। কোনো কিছুর প্রয়োজন হলে বাসায় আসতেন। আবার চলে যেতেন। তবে আমার সঙ্গে কথা বলতেন না। বিকেলে থানার ওসি কল করে বিষয়টি জানান।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

ফুটবলার প্রতিমা এগিয়ে যাচ্ছেন, পাশে আছে কিশোর আলোসহ অনেকে

একটি পরিবারের ওপর নেমে আসা অপ্রত্যাশিত চাপ আর হতাশাকে দূর করেছে একটি সংবাদ। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় প্রতিমা মুন্ডার পড়াশোনা ও খেলাধুলা থমকে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল মাত্র ৪৭ হাজার টাকার জন্য। প্রথম আলোয় প্রতিবেদন প্রকাশের পর মিলেছে সহযোগিতা, পরিশোধ হয়ে গেছে বিকেএসপির বকেয়া।

এতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন প্রতিমার মা সুনিতা মুন্ডা। তাঁদের ওপর থেকে নেমে গেছে বড় ধরনের আর্থিক চাপ।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেএসপি প্রতিমার অভিভাবককে পাঠানো চিঠিতে জানিয়েছিল, তাঁদের মেয়ের বকেয়া বেতন ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা। সেই চিঠিতেই সতর্ক করে বলা হয়, ছয় মাসের বেশি বেতন বকেয়া থাকলে চূড়ান্ত সতর্কীকরণ, আর ১২ মাসের বেশি বকেয়া থাকলে বহিষ্কারের বিধান আছে। অর্থাভাবে যখন অনিশ্চিত হয়ে উঠেছিল প্রতিমার ভবিষ্যৎ, ঠিক সেই সময় ১১ অক্টোবর প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয় তাঁদের পরিবারের সংগ্রামের গল্প।

আরও পড়ুনবকেয়া বেতন চেয়ে বিকেএসপির চিঠি, ফুটবলার প্রতিমার পড়াশোনা বন্ধের পথে ১১ অক্টোবর ২০২৫

প্রতিবেদনটি পাঠকের হৃদয়ে নাড়া দেয়। কিশোর আলোর পক্ষ থেকে প্রতিমার বকেয়া পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই দিনই বিকেলে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে গিয়ে প্রথম আলোর সাতক্ষীরার নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি প্রতিমা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে নেওয়া হয় এই উদ্যোগ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যবসায়ী সহায়তা করেন আরও ১০ হাজার টাকা। তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপা রানী সরকার দেন পাঁচ হাজার টাকা ও একটি ফুটবল।

সহায়তা পেয়ে স্বস্তি ফিরেছে পরিবারে। মুঠোফোনে প্রতিমা বলেন, ‘এখন আর কোনো অনিশ্চয়তা নেই। বিকেএসপির পাওনা ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা পরিশোধ করে দিয়েছি। আমি ভালো আছি, মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা আর অনুশীলন করছি।’

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার প্রতিমা মুন্ডা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে কিশোর আলোর পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ