হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের উপাধ্যক্ষকে কুপিয়ে হত্যা
Published: 10th, March 2025 GMT
রাজধানীর উত্তরখানে একটি ভাড়া বাসায় হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়াকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আজ সোমবার সেহরির সময় এ ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছেন উত্তরখান থানার ওসি জিয়াউর রহমান। তিনি বলেন, উত্তরখানের ওই ভাড়া বাসায় গত বছরের আগস্ট–সেপ্টেম্বর থেকে ভাড়া থাকেন তিনি। গত কয়েকদিন আগে এক নারী ও তরুণকে ভাবি–ভাতিজা পরিচয়ে বাসায় নিয়ে আসেন উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া। সোমবার সেহরির সময় সাইফুর বাথরুমে গেলে সেখানেই তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেন তারা। এরপর বাথরুমের দরজা বন্ধ করে পালিয়ে যান তারা। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় বাথরুমের দরজা ভেঙে বের হয়ে বেলকুনিতে এসে চিৎকার করেন তিনি। তখন বাসার মালিক ও অন্য ভাড়াটিয়ারা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।
নিহত সাইফুরের স্ত্রী সাদিয়া রেহমান দুই সন্তান নিয়ে শান্তিনগর পীর সাহেবের এলাকায় একটি বাসায় থাকেন। তাদের মধ্যে সম্পর্কের দূরত্ব তৈরি হলে উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া উত্তরখানে থাকতেন বলে জানিয়েছেন ওসি। তিনি বলেন, স্বামীর বিষয়ে খবর দিলে তাঁর স্ত্রী লাশ নিতে অস্বীকার জানান। এছাড়া তাকে থানায় আসতে বললেও তিনি আসেননি।
ওসি আরও বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে তার বড় ভাইয়ের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। হত্যার ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। এছাড়া সন্দেহভাজন আসামিদের ধরতে অভিযান শুরু হয়েছে।
নিহত শিক্ষকের স্ত্রী সাদিয়া রেহমান বলেন, তিনি বেশ কয়েক মাস ধরে আলাদা থাকেন। কোনো কিছুর প্রয়োজন হলে বাসায় আসতেন। আবার চলে যেতেন। তবে আমার সঙ্গে কথা বলতেন না। বিকেলে থানার ওসি কল করে বিষয়টি জানান।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত ও নিপীড়ন বন্ধের দাবি সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের
গণতান্ত্রিক শ্রম আইন, শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা, ন্যায্য মজুরি, অবাধ ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত ও শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে সমাবেশ ও মিছিল করেছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। একই সঙ্গে তারা বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তারকৃত শ্রমিকনেতাদের মুক্তির দাবিও জানায়।
মে দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জুলফিকার আলী, আইনবিষয়ক সম্পাদক বিমল চন্দ্র সাহা, নির্বাহী সদস্য আফজাল হোসেন, নির্বাহী সদস্য ও বোম্বে সুইটস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রতন মিয়া প্রমুখ।
সমাবেশে নেতারা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন করার চেষ্টার অপরাধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দিয়ে গার্মেন্টস উইংয়ের সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, রবিনটেক্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তারসহ ৭ জনকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে এবং রিকশা শ্রমিকদের রুটি–রুজির আন্দোলনে সংহতি জানানোর অপরাধে চট্টগ্রামে রিকশা সংগ্রাম পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি আল কাদেরি জয়, মিরাজ উদ্দিন ও রোকন উদ্দিনকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। অথচ সরকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, তারা শ্রমক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শ্রমমান বাস্তবায়ন করবে।
এ সময় নেতারা শ্রম সম্পর্ক উন্নয়নে সরকারের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত হচ্ছে কি না, তা জানতে চান। তাঁরা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করার অধিকার চর্চায় বাধা দেওয়া বন্ধ না হলে, শ্রমিকের ওপর নিপীড়ন বন্ধ না হলে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র পরিচালনা বা বৈষম্য নিরসনের প্রতিশ্রুতি শ্রমজীবী মানুষের কাছে প্রতারণা হিসেবে পরিগণিত হবে।
মে দিবসের ইতিহাস তুলে ধরে নেতারা আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও দেশের শ্রমজীবী মানুষের ৮৫ শতাংশ শ্রম আইনের সুরক্ষার বাইরে। শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের শ্রম খাতের দুর্দশার যে ভয়ানক চিত্র ফুটে উঠেছে, তা প্রমাণ করে স্বাধীনতা–পরবতী প্রতিটি সরকার শ্রম শোষণকে তীব্র থেকে তীব্রতর করার ক্ষেত্র তৈরি করেছে।
এ সময় গ্রেপ্তার সব শ্রমিকের মুক্তি, শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধ এবং মে দিবসের প্রকৃত চেতনায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নেতারা।